বুধবার ফের কেন্দ্রকে নিশানা করলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেস নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তাঁর স্পষ্ট বার্তা, ২০২৬-এ তৃণমূল কংগ্রেস আবারও পশ্চিমবঙ্গে ক্ষমতায় ফিরবে এবং তার পরে ২০২৯-এর লোকসভা নির্বাচনে কেন্দ্রে সরকার গড়বে ইন্ডিয়া জোট। দিল্লির উদ্দেশ্যে লড়াইয়ের ডাক দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘বাংলা আমাদের দখলে আছে, থাকবে। আগামী দিন দিল্লি দখলের লড়াই আমরা করব। ২০২৬-এ বাংলা দখল করার পর দিল্লির যে নির্বাচন হবে, তাতে আমাদের ‘ইন্ডিয়া’ জোট দিল্লি দখল করার জন্য লড়াই করবে।’’
ভোটার তালিকায় কারচুপি নিয়ে অভিযোগ
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এদিন সরাসরি বিজেপির বিরুদ্ধে ভোটার তালিকায় কারচুপির অভিযোগ তোলেন। তাঁর দাবি, কেন্দ্রে ক্ষমতা ধরে রাখতে বিজেপি নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করছে। বৈধ ভোটারদের নাম ইচ্ছাকৃতভাবে ভোটার লিস্ট থেকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘‘ভোটার লিস্ট নিয়ে সত অন্য রাজ্যে বসে এ রাজ্যে ভোটার লিস্টের নাম কাটা হচ্ছে৷ দরকার হলে একদিন অফিস কামাই করবেন৷ কিন্তু ভোটার লিস্টে নামটা তুলে আসবেন৷’’
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন
নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়েও এদিন প্রশ্ন তোলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, মহারাষ্ট্র ও বিহার বিধানসভা নির্বাচনে কেন্দ্রীয় শাসকদল যেভাবে ভোটার তালিকা নিয়ে খেলেছে, তাতে কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘বিজেপি এত কিছু করেও ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি।’’
ভিন রাজ্যে বাঙালি নিপীড়নের প্রতিবাদে হুঁশিয়ারি
শুধু নির্বাচন নয়, এদিন ভিন রাজ্যে বাঙালিদের নিপীড়ন নিয়েও সরব হন মমতা। তাঁর অভিযোগ, বাংলায় কথা বললেই অত্যাচার করা হচ্ছে। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘‘পরিষ্কার সতর্কবার্তা দিয়ে গেলাম। যদি না থামেন তাহলে আগামী দিনে আপনাকে থামাতে কি করা দরকার সেটাও আমরা জানি। ওখানে অত্যাচার হলে এখানেও প্রতিবাদ হবে।’’
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এদিনের বার্তা ছিল দ্বিমুখী—একদিকে যেমন তিনি বিজেপির বিরুদ্ধে নির্বাচনী কৌশল নিয়ে আক্রমণ শানান, অন্যদিকে বাঙালি জাতিসত্তার পক্ষেও সুর চড়ান। তাঁর বক্তব্যে স্পষ্ট, ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে তৃণমূল এবং সেইসঙ্গে ২০২৯-এর লোকসভা ভোটেও বড় ভূমিকা নিতে চায় ইন্ডিয়া জোট।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, মমতার এদিনের বক্তব্য শুধু তৃণমূল কর্মীদের মনোবল বাড়ানোর বার্তা নয়, বরং কেন্দ্রের বিরোধী রাজনীতিকে একত্রিত করার দিকেও বড় পদক্ষেপ।