পুজোর আগেই সেতু-উড়ালপুল অডিটে মুখ্যমন্ত্রীর কড়া নির্দেশ

রাজ্যের সেতু ও উড়ালপুলগুলির নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে শুরু হয়েছে সমস্ত সেতু এবং উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা।…

Mamata condemns Bengali harassment

রাজ্যের সেতু ও উড়ালপুলগুলির নিরাপত্তা নিয়ে বড়সড় পদক্ষেপ নিল পশ্চিমবঙ্গ সরকার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) নির্দেশে শুরু হয়েছে সমস্ত সেতু এবং উড়ালপুলের স্বাস্থ্য পরীক্ষা। সুপ্রিম কোর্টের রোড সেফটি কমিটির সাম্প্রতিক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে পূর্ত দফতর (PWD) এবং কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (KMDA) যৌথভাবে এই কাজ শুরু করেছে।

কেন এই অডিট?
সুপ্রিম কোর্টের রোড সেফটি কমিটি প্রতি তিন বছরে একবার সমস্ত রাজ্যের কাছ থেকে সেতু ও কালভার্টের স্বাস্থ্য পরীক্ষার বিস্তারিত রিপোর্ট চায়। শুধু রিপোর্ট জমা দিলেই হবে না, রক্ষণাবেক্ষণের বার্ষিক পরিকল্পনা এবং ভবিষ্যতের সংস্কার পরিকল্পনাও জমা দিতে হবে। এই নির্দেশের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে চিঠি পাঠায় কমিটি। একই সঙ্গে আইআরসি (IRC) স্ট্যান্ডার্ড অনুযায়ী সেফটি অডিট বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।

   

কীভাবে হচ্ছে পরীক্ষা?
পূর্ত দফতর সূত্রে খবর, রাজ্যে বর্তমানে প্রায় ২২০০টি সেতু ও কালভার্ট রয়েছে তাদের আওতায়। অন্যদিকে, কলকাতা ও আশপাশের এলাকায় বেশ কয়েকটি বড় উড়ালপুলের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্বে রয়েছে KMDA। দুটি সংস্থাই আলাদা আলাদাভাবে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কাজ শুরু করেছে।

এই অডিটের অংশ হিসেবে করা হচ্ছে—

ভিজ্যুয়াল ইন্সপেকশন (Visual Inspection)

নন-ডেস্ট্রাক্টিভ টেস্টিং (Non-Destructive Testing)

গঠনগত দুর্বলতার মূল্যায়ন (Structural Weakness Assessment)

Advertisements

ঝুঁকির স্তর নির্ধারণ (Risk Level Categorization)

পূর্ত দফতরের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘প্রতিটি সেতুর বর্তমান অবস্থা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি কোথাও গঠনগত দুর্বলতা ধরা পড়ে, তবে দ্রুত মেরামতির তালিকা প্রস্তুত করা হবে।’’

কবে শেষ হবে কাজ?
সরকারের লক্ষ্য, সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহের মধ্যেই অডিটের সমস্ত কাজ শেষ করে রিপোর্ট প্রস্তুত করা। কারণ, আসন্ন শারদোৎসবের সময় কলকাতা এবং রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রচুর জনসমাগম ঘটে। তাই দুর্ঘটনার সম্ভাবনা এড়াতে আগে থেকেই সতর্ক থাকতে চাইছে প্রশাসন।

সরকারি আধিকারিকদের বক্তব্য, ‘‘পুজোর ভিড় শুরুর আগে আমরা নিশ্চিত করতে চাই, প্রতিটি সেতু ও উড়ালপুল জনসাধারণের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ।’’

বিশেষজ্ঞদের মতামত
পরিকাঠামো বিশেষজ্ঞদের মতে, এই পদক্ষেপ অত্যন্ত ইতিবাচক। এক বিশেষজ্ঞ জানান, ‘‘বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা ইতিপূর্বে ঘটেছে সেতু বা উড়ালপুল ভেঙে পড়ার কারণে। এই ধরনের আগাম উদ্যোগ জনসুরক্ষার জন্য অত্যন্ত জরুরি। তাতে সাধারণ মানুষের আস্থাও বাড়বে।’’

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে রাজ্যের পরিকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণে এক বড় মাইলফলক। সময়মতো অডিট সম্পূর্ণ হলে দুর্ঘটনা কমবে এবং জনগণের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত হবে বলে মনে করছেন সকলেই। এখন দেখার, সরকার নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে কতটা কাজ শেষ করতে পারে।