কলকাতায় আগামীদিনে থাকবে শুধু বাঙালি হকাররাই? মমতার নির্দেশে জল্পনা শুরু!

কলকাতা সহ বিভিন্ন পৌরসভা এলাকায় হকার সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি কড়া মনোভাব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)! এই নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী আমলাদের কড়া বার্তা দেওয়ার পরেই তৎপর…

কলকাতা সহ বিভিন্ন পৌরসভা এলাকায় হকার সমস্যা নিয়ে সম্প্রতি কড়া মনোভাব নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)! এই নিয়ে রাজ্যের মন্ত্রী আমলাদের কড়া বার্তা দেওয়ার পরেই তৎপর হয়েছে পুলিশ প্রশাসন। তারপরেই উত্তরপ্রদেশের চেনা চিত্র দেখা যাচ্ছে কোলকাতার একাধিক জায়গায়। বুলডোজার দিয়ে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়ছে ফুটপাথের অবৈধ দখলদারি।

তবে সেই সঙ্গে উঠছে আরেকটি বিতর্ক! বৈধ এবং অবৈধ হকার বিতর্কে তাই আপাতত উচ্ছেদ অভিযান বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী(Mamata Banerjee)! কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর আরও একটি নির্দেশে শুরু হয়েছে জল্পনা! আগামী দিনে কলকাতায় কি তাহলে শুধুমাত্র বাঙালি হকাররাই অগ্রাধিকার পেতে চলেছেন? সেই সম্ভাবনা কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না। কারণ মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee)বৃহস্পতিবার নবান্নের সভা থেকে আপাতত উচ্ছেদ অভিযানের স্থগিতাদেশ দেওয়ার সাথে সাথে আরও কিছু নির্দেশ দিয়েছেন। যেখানে পরিষ্কার বলা হচ্ছে ইতিমধ্যে যাদেরকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে, তাদের ঠিকানা খুঁজে তাদের ব্যাপারে সার্ভে করা হোক। যদি তারা সত্যিই গরীব হন, এবং সেক্ষেত্রে তাদেরকে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করবে রাজ্য সরকার।

   

ডিমে আত্মনির্ভর হচ্ছে বাংলা! ডিম-প্রেমীদের জন্য বড় সুখবর মমতার

সেক্ষেত্রে কী তাহলে ঠিকানার বিষয়ে শুধুমাত্র এই রাজ্যের বাসিন্দারা বা রাজ্যের স্থায়ী বাসিন্দা যারা তারাই এক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন? এই নিয়ে কিন্তু এই মুহূর্তে প্রশ্ন উঠেছে। অপরদিকে বিভিন্ন সময়ে সাধারণ মানুষ বিশেষ করে বাঙালিদের প্রায়শয় বলতে শোনা যায়, কলকাতার বড় অংশই এখন অবাঙালিদের দখলে চলে গিয়েছে। বাস্তবে চিত্রটাও কিন্তু খুব একটা আলাদা নয়। কলকাতা শহরের ব্যবসার প্রাণকেন্দ্র বড় বাজারের দিকে তাকালে দেখা যাবে সেটা অনেকাংশেই অবাঙালি কেন্দ্রিক হয়ে দাঁড়িয়েছে। শুধু তাই নয় হকার সংগঠনগুলির অনেকেরই অভিযোগ ভিন রাজ্যের লোক এসে স্থানীয় নেতা মন্ত্রীদের হাতে মোটা টাকা দিয়ে চুটিয়ে এখানে ব্যবসা করছেন। অনেক বাঙালি হকারেরই অভিযোগ এখানে ফুটপাতে ব্যবসা করে এই অবাঙালিরা নিজেদের দেশের বাড়িতে তিন চার তলা বাড়িও করে ফেলেছেন। তাহলে এবার সেক্ষেত্রে কি অন্যরকম পদক্ষেপ নিতে চলেছে নবান্ন?

‘মোদীর পার্টি অফিস’ ভেঙে গুঁড়িয়ে দিল ‘দিদির বুলডোজার’!

সাম্প্রতিক সময়ে বাংলা এবং বাঙালির অধিকারকে নিয়ে একাধিক সংগঠন সোচ্চার হয়েছে। সেরকমই সংগঠন ‘বাংলা পক্ষ’-এর নেতা গর্গ চট্টোপাধ্যায়ের মতে, বাংলাতে সমস্ত বিষয়ের সব ক্ষেত্রে বাঙ্গালীদেরই গুরুত্ব দেওয়া হোক। তাঁর বিস্ফোরক অভিযোগ, কলকাতা বন্দর থেকে শুরু করে ডানকুনি টার্মিনাস, সমস্ত জায়গাতেই একচেটিয়া অবাঙালি প্রাধান্য। নিজেদের রাজ্যে বাঙালিরা কাজ না পেয়ে বাইরের রাজ্যে ছুটছেন। অথচ বাইরের রাজ্য থেকে লোক এসে এখানে একচেটিয়া ব্যবসা থেকে শুরু করে চাকরি করে খাচ্ছে এবং বহাল তবিয়তেই আছে।

কলকাতার ঐতিহ্য ঘোড়ার গাড়ি বন্ধের আবেদন, মমতাকে চিঠি বিজেপির বাঙালি নেত্রীর

এর আগের সভাতেই মুখ্যমন্ত্রী অন্য রাজ্যের লোক বা বাইরের লোককে ব্যবসা করতে বসানো নিয়ে সরব হয়েছেন। তাঁর অভিযোগের তীর ছিল রাজ্যের বেশকিছু মন্ত্রী এবং কর্পোরেশনের প্রভাবশালী ব্যক্তিদের দিকে। সেক্ষেত্রে এবার ঠিকানা ভেরিফিকেশন কি আদতে রাজ্যের বাসিন্দাদের অগ্রাধিকার দেওয়ার কৌশল? হকার মহলের বক্তব্য, বাংলায় যদি বাঙালিদেরকে গুরুত্ব দেওয়া হয়, তার থেকে ভালো আর কিছুই হতে পারে না। আপাতত যারা সর্বস্ব খুইয়েছেন এই কয়েকদিনে, তারা মুখ্যমন্ত্রী এই ঘোষণাতেই আশায় বুক বাঁধছেন।