মমতার মাস্টারস্ট্রোক, বৃহস্পতিবার থেকে রাজ্যজুড়ে তৃণমূলের বড় কর্মসূচি শুরু

কলকাতা: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শুধু নির্বাচনী রাজনীতি নয়, মাটির ভাষা ও…

Mamata Banerjee hindi s[eech controversy

কলকাতা: ২০২৬ সালের বিধানসভা নির্বাচনকে পাখির চোখ করে ইতিমধ্যেই ঘুঁটি সাজাতে শুরু করেছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস। তবে শুধু নির্বাচনী রাজনীতি নয়, মাটির ভাষা ও সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করে রাজ্যজুড়ে জনমত গঠনের কৌশল নিচ্ছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।

২১ জুলাইয়ের শহিদ মঞ্চ থেকে সরাসরি মোদি সরকারের বিরুদ্ধে ‘ভাষা সন্ত্রাস’ চালানোর অভিযোগ তুলেছিলেন জননেত্রী। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার বাংলার মাতৃভাষার উপর আক্রমণ শানাচ্ছে, হিন্দি আধিপত্য চাপিয়ে দিতে চাইছে বাংলা ও বাঙালির উপর।

   

এই বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টেয় তৃণমূল ভবনে দলের সমস্ত শাখা সংগঠনকে নিয়ে বৈঠক ডাকেন তৃণমূল নেতৃত্ব। বৈঠকের মূল এজেন্ডা— বাংলা ভাষা রক্ষায় রাজ্যজুড়ে ধারাবাহিক আন্দোলনের রূপরেখা স্থির করা।

সিদ্ধান্ত হয়, আগামী ২৭ জুলাই নানুর দিবস থেকে শুরু করে রাজ্যের প্রতিটি জেলায় প্রতি শনিবার ও রবিবার মিটিং-মিছিল হবে। সেই কর্মসূচির মাধ্যমে বাংলা ভাষার উপর আক্রমণের প্রতিবাদে পথে নামবে তৃণমূল কংগ্রেস।

তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই আহ্বান জানিয়েছেন কলকাতায় গান্ধি মূর্তির পাদদেশে নাগরিক সমাজকে ধর্নায় অংশগ্রহণ করতে। তার আগে ২৬ জুলাইয়ের মধ্যে জেলার নেতাদের প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করার নির্দেশও দিয়েছেন তিনি।

Advertisements

মমতা বলেন, “এ লড়াই কেবল একটা ভাষার জন্য নয়। এ লড়াই আমাদের সংস্কৃতি, পরিচয় ও অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই। বাংলা ভাষার বিরুদ্ধে যে অন্যায় হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে আমরা রাজ্যজুড়ে প্রতিরোধ গড়ে তুলব।” তিনি আরও জানান, “যতদিন না কেন্দ্র সরকার বাংলা ভাষার মর্যাদা ও অধিকারে হস্তক্ষেপ বন্ধ করছে, ততদিন এই আন্দোলন চলবে।”

কর্মসূচির হাইলাইট:
২৭ জুলাই থেকে প্রতিটি জেলায় মিছিল ও সভা
গান্ধি মূর্তির পাদদেশে নাগরিক সমাজের ধর্না
প্রতি শনিবার ও রবিবার ধারাবাহিক কর্মসূচি
২৬ জুলাইয়ের মধ্যে প্রস্তুতি সম্পূর্ণ করার নির্দেশ
তৃণমূলের সব স্তরের সংগঠনের সক্রিয় অংশগ্রহণ বাধ্যতামূলক

বিজেপি দীর্ঘদিন ধরেই পশ্চিমবঙ্গে হিন্দি ও সংস্কৃতিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অভিযোগে অভিযুক্ত। শিক্ষা, প্রশাসন ও বিভিন্ন জাতীয় দিবস উপলক্ষে কেন্দ্রীয় চাপের মুখে রাজ্যের নিজস্ব ভাষা-সংস্কৃতি উপেক্ষিত হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলছে শাসক তৃণমূল। এই প্রেক্ষিতেই রাজনীতির মাঠে ফের ভাষাকে কেন্দ্র করে আবেগ-ভিত্তিক লড়াইয়ে নামতে চাইছে তারা। রাজনৈতিক মহলের মতে, এই আন্দোলনের মাধ্যমে রাজ্যের বাঙালি ভোটারদের আবেগকে কাজে লাগাতে চায় তৃণমূল কংগ্রেস।

এই কর্মসূচি যে শুধুমাত্র ভাষার লড়াই নয়, বরং আগামী নির্বাচনেও বড় প্রভাব ফেলতে পারে, সেই বার্তাও স্পষ্ট করে দিচ্ছে তৃণমূলের এই সংগঠিত প্রস্তুতি।