দুর্গাপুজোকে ঘিরে অশান্তি এড়াতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে কড়া বার্তা দিলেন। দেবীপক্ষের সূচনার আগেই শেষ মন্ত্রিসভা বৈঠক থেকে তিনি মন্ত্রী, বিধায়ক ও দলের প্রতিনিধিদের সতর্ক করে দেন। মুখ্যমন্ত্রীর স্পষ্ট নির্দেশ, “উৎসব সবার, তাই কোনোভাবেই শান্তি শৃঙ্খলা বিঘ্নিত হতে দেওয়া যাবে না।”
মুখ্যমন্ত্রী আশঙ্কা প্রকাশ করেন, কিছু গোষ্ঠী পরিকল্পিতভাবে গোলমাল ঘটিয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে পারে। তাই প্রতিটি জন প্রতিনিধিকে এলাকায় সক্রিয় থাকতে হবে এবং অশান্তি সৃষ্টির কোনো চেষ্টা হলে সঙ্গে সঙ্গে রুখে দিতে হবে।
তাঁর নির্দেশ, শুধু শৃঙ্খলা বজায় রাখলেই চলবে না, দরিদ্র পরিবারগুলির পাশে দাঁড়াতে হবে মন্ত্রী-নেতাদের। প্রয়োজনে ব্যক্তিগত সঞ্চয় থেকে তাদের সাহায্য করতে হবে। পাশাপাশি সংবাদমাধ্যমের সামনে দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্য করা যাবে না, কারণ তা সরকার ও দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।
শুধু আইনশৃঙ্খলা নয়, বৈঠকে একাধিক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তও নেওয়া হয়েছে। পর্যটনের মতো এবার লজিস্টিকস ব্যবসাকেও শিল্পের মর্যাদা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। সরকারের আশা, এতে নতুন বিনিয়োগ আসবে এবং কর্মসংস্থান তৈরি হবে। নিউটাউন কলকাতা ডেভেলপমেন্ট অথরিটির শূন্য ১৫টি পদে নিয়োগ অনুমোদন করেছে মন্ত্রিসভা।
একই সঙ্গে তাজপুর-ডানকুনি-রঘুনাথপুর ইকনমিক করিডোর গড়ে তুলতে রাজ্য শিল্প নিগমকে ২০০ একর জমি দেওয়ার প্রস্তাব পাস হয়েছে। সরকারের দাবি, এই প্রকল্প চালু হলে ব্যাপক কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
রাজনৈতিক মহলের মতে, পুজোয় যদি অশান্তি হয়, তা সরাসরি সরকারের ভাবমূর্তিকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। তাই মুখ্যমন্ত্রীর কড়া বার্তায় পরিষ্কার হয়েছে যে, উৎসব শান্তিপূর্ণভাবে পালন করতে সরকার সর্বাত্মক উদ্যোগ নেবে। প্রশাসনিক স্তরে ইতিমধ্যেই নজরদারি বাড়ানো হয়েছে এবং স্থানীয় পর্যায়ে নেতাদেরও সক্রিয় থাকতে বলা হয়েছে।
মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, “দুর্গাপুজো বাংলার গর্ব, তাই কোনো নোংরা রাজনীতি বা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অশান্তি সহ্য করা হবে না।” ফলে এবারের পুজোয় শান্তি বজায় রাখা কেবল প্রশাসনের দায়িত্ব নয়, বরং রাজনৈতিক নেতৃত্বেরও বড় পরীক্ষা হয়ে দাঁড়াচ্ছে।