মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আজ নবান্নে এক মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে নতুন এক বিতর্ক উস্কে দিলেন। তিনি অভিযোগ করেছেন, “মানসিক স্বাস্থ্য সমীক্ষার নামে আসলে কলকাণির এইমস—Kalyani AIIMS—এ NRC (নাগরিকত্ব যাচাই) চালু করার ষড়যন্ত্র চলছে।”
“ভোটার তালিকা থেকে নাম বাদ দেওয়ার উদ্দেশ্যেই এটি করা হচ্ছে।” মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “স্বাস্থ্য সমীক্ষার আড়ালে একটি রাজনীতিক উদ্দেশ্যে এই কাজ হচ্ছে, যাতে সাধারণ মানুষের পরিচয় প্রশ্নবিদ্ধ হয়।” তিনি সতর্ক করে বলেন, “রাজ্য সরকার কোনও সমীক্ষা চালাচ্ছে না; যদি বাড়ি-বাড়ি সমীক্ষার নামে কেউ আসে, প্রয়োজন হলে আগে রাজ্য সরকারের কাছ থেকে অনুমতি নিন।”
মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, “কল্যাণীতে যে জমি AIIMS-র জন্য দিয়েছিল রাজ্য সরকার, সেই তথ্য উদ্বোধনের সময়ই তাঁরা আমাদের জানায়নি।” অর্থাৎ সরকারকে প্রাথমিক পর্যায়ে ছাড়েও রাখা হয়নি, এমন অভিযোগ তুলেছেন মমতা.
মমতা তাঁর বক্তব্যে আরও বলেন, “ইনস্টিটিউটি প্রতিষ্ঠা মূলত রোগীর সেবার জন্য, সেটি যে দায়িত্ব অত্যন্ত গুরুত্ব সহকারে পালন করতে হবে। আর রাজ্য সরকারের দায়িত্ব হল—যেখানে জনমহলে তথ্য চাওয়া জরুরি, সেই বিষয়ে রাজ্য নিজে এবং স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করবে।” তিনি_warned: “স্বাস্থ্য সমীক্ষার নামে যদি NRC চালু করার কোনও অপচেষ্টা হয়, তবে পশ্চিমবঙ্গ সরকার তার দৃঢ় বিরোধিতা করবে।”
পক্ষ: রাজ্য সরকারের দাবি, স্বচ্ছতা বজায় রেখে জনকল্যাণমূলক প্রকল্প চালানো তাদের কর্তব্য। রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানের অপব্যবহারের কোনো ফাঁকা জায়গা তাঁদের বরদাস্ত নয়।
বিপক্ষ: যদিও এখনও এই অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ের কোনো নির্ভরযোগ্য দিকনির্দেশ বা সরকারি তথ্য সামনে আসেনি, তবে রাজনৈতিক উত্তেজনা ইতিমধ্যেই দেখা দিয়েছে।
রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট এবং সম্ভাব্য প্রভাব
বুধবার থেকে এই বিতর্ক আরও উত্তপ্ত হতে পারে। কিছু রাজনৈতিক দলে এই মন্তব্যকে তৎক্ষণাত সমর্থন জানিয়েছে, তবে বিরোধীরা আরও স্পষ্ট ব্যাখ্যা দাবি করে। সরকারি পর্যায়ে এখনও পর্যন্ত কোনও আনুষ্ঠানিক বিবৃতি আসেনি, তবে মন্ত্রিসভার বৈঠকের পর মুখ্যমন্ত্রী যে অবস্থান গ্রহণ করেছেন—সে বর্তমান রাজনৈতিক আবহতেও নতুন মাত্রা যোগ করেছে।
নিরাপত্তা আশঙ্কা: এক শ্রেণির মানুষের পক্ষে ভয় এবং অনিশ্চয়তা সৃষ্টি হতে পারে যদি নাগরিকত্ব যাচাইকরণের ফলে তারা ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়ে।
স্বাস্থ্য সেবা এবং জনসাধারণের আস্থা: যদি নিম্নস্তরে তথ্য সঠিকভাবে না পৌঁছায় বা অন্য উদ্দেশ্যে সেই তথ্য ব্যবহৃত হয়, তবে স্বাস্থ্য খাতে জন আস্থা হ্রাস পেতে পারে।
এখন বিষয়টির বিবেচনায় কেবল রাজনৈতিক মন্তব্য বা তর্ক নয়, বরং তদন্ত-নির্ভর তথ্য-প্রমাণ আসা প্রয়োজন। রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যেহেতু স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়েছে—“স্বাস্থ্য সমীক্ষা চালানোর হোক, তবে স্বচ্ছতা এবং অনুমতিপত্র নিয়ে হবে”—সেই দাবিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা দরকার। ভবিষ্যতে যদি কোনও সরকারি বা আধাসরকারি সূত্র তথ্য প্রকাশ করে, তবে সেই ভিত্তিতেই পরবর্তী রাজনৈতিক ও সামাজিক বিশ্লেষণ করা যাবে।