পুজোয় যাত্রীর চাপ সামলাতে মেট্রোর সংখ্যা বাড়ানোর নির্দেশ মমতার

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর আগে এই প্রস্তুতি বৈঠক ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিক, পুলিশ প্রশাসন,…

Green Line Metro to Face 3-Day Traffic Block Starting Saturday

নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে অংশ নিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পুজোর আগে এই প্রস্তুতি বৈঠক ছিল অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। রাজ্যের প্রশাসনিক আধিকারিক, পুলিশ প্রশাসন, পুরসভা এবং বিভিন্ন পুজো কমিটির প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন এই বৈঠকে। পুজোর সময় যাতে কোনওরকম বিশৃঙ্খলা না ঘটে, সাধারণ মানুষ নির্বিঘ্নে মণ্ডপ দর্শন করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে একাধিক পদক্ষেপের কথা ঘোষণা করলেন মুখ্যমন্ত্রী।

এই বৈঠকের অন্যতম মূল বিষয় ছিল — পুজোর দিনগুলিতে কীভাবে শহরের যানবাহন ও জনপরিবহণ ব্যবস্থা আরও উন্নত করা যায়। মেট্রো পরিষেবা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পুজোর সময় যাতে মানুষ সারারাত মণ্ডপে ঘুরে নিশ্চিন্তে বাড়ি ফিরতে পারেন, তার জন্য মেট্রো সারারাত চালু রাখা উচিত।” সেই অনুযায়ী, রাজ্যের মুখ্যসচিব মনোজ পন্থকে নির্দেশ দেন মমতা, যেন কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে বিষয়টি বাস্তবায়নের ব্যবস্থা নেওয়া হয়।

   

তিনি বলেন, “কলকাতার দুর্গাপুজো এখন আন্তর্জাতিক উৎসব। ভিড় তো হবেই, সেই জন্যই তো এত আয়োজন। কিন্তু তার জন্য মানুষের যাতায়াতে সমস্যা হওয়া চলবে না। মেট্রো যদি সারারাত চলে, তাহলে বহু মানুষ উপকৃত হবেন। বিশেষ করে মহিলারা ও বয়স্করা নিরাপদে বাড়ি ফিরতে পারবেন।”

এখানেই শেষ নয়। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেন, “শুধু মেট্রো নয়, রাস্তায় যথেষ্ট সংখ্যায় সরকারি ও বেসরকারি বাস থাকতে হবে। একই সঙ্গে ট্রেন পরিষেবাও যেন নিরবিচারে চলে। রাতে বিশেষ করে বাড়তি ট্রেনের ব্যবস্থা করতে হবে, যাতে দর্শনার্থীদের সমস্যা না হয়।”

পুলিশ প্রশাসনকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পরামর্শ, “যেখানে বেশি ভিড় হয়, সেই সব এলাকায় ট্র্যাফিক ম্যানেজমেন্ট আরও কড়াভাবে করতে হবে। প্রয়োজন হলে রুট ডাইভারশন করতে হবে। কিন্তু সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষ যাতে ভোগান্তিতে না পড়েন, সেটাও দেখতে হবে।”

Advertisements

পুরসভাগুলিকে বলা হয়েছে, শহরের প্রতিটি কোণায় যেন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় থাকে। নর্দমা পরিষ্কার, পানীয় জলের ব্যবস্থা, অস্থায়ী শৌচাগার, মেডিক্যাল টিম — সবকিছুর প্রস্তুতি এখন থেকেই শুরু করতে হবে। কলকাতা পুরসভার পাশাপাশি রাজ্যের অন্যান্য পুরসভাগুলিও যেন নিজেদের এলাকায় পুজোর সময় জনসাধারণের প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলি সচল রাখে।

পুজো কমিটিগুলির উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “সুশৃঙ্খলভাবে পুজো পরিচালনা করাই আমাদের দায়িত্ব। আপনাদের সঙ্গে সরকারের সহযোগিতা থাকবেই, শুধু আপনারাও প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে চলুন। প্রত্যেকটা পুজো মণ্ডপে যেন ফায়ার সেফটি, সিসিটিভি ক্যামেরা ও প্রাথমিক চিকিৎসার ব্যবস্থা থাকে।”

বৈঠকের শেষে মুখ্যমন্ত্রী আবারও মনে করিয়ে দেন, “শারদোৎসব আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের গর্ব। এই উৎসবকে বিশ্ব দরবারে আরও তুলে ধরতে হলে আমাদের সমন্বিতভাবে কাজ করতে হবে। পুলিশ, প্রশাসন, পুজো কমিটি, সাধারণ মানুষ — সকলের সহযোগিতাতেই সার্থক হবে এই আয়োজন।”

এই প্রস্তুতি বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া নির্দেশ এবং পরামর্শগুলি পুজোর মরসুমে শহরের যানবাহন ও জনপরিবহণ ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। পাশাপাশি, নিরাপত্তা ও পরিষেবার দিক থেকেও আরও মসৃণ ও নিরাপদ হবে এবারের দুর্গাপুজো।