বর্ষায় প্লাবিত বাংলা নিয়ে ক্ষুব্ধ মুখ্যমন্ত্রী, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যান নিয়ে বার্তা

কলকাতা: বর্ষা শেষ হয়নি এখনও। কিন্তু ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক এলাকা জলমগ্ন। ঘাটাল, খানাকুল, কেশপুর, জয়রামবাটি, কামারপুকুর, মেদিনীপুর শহর ও ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু অংশসহ একাধিক ব্লকে…

"Centre Sends Aparajita Bill Back Over Concerns on Proposed Death Penalty Clause"

কলকাতা: বর্ষা শেষ হয়নি এখনও। কিন্তু ইতিমধ্যেই রাজ্যের একাধিক এলাকা জলমগ্ন। ঘাটাল, খানাকুল, কেশপুর, জয়রামবাটি, কামারপুকুর, মেদিনীপুর শহর ও ঝাড়গ্রামের বেশ কিছু অংশসহ একাধিক ব্লকে প্লাবনের পরিস্থিতি। নবান্নে প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন এবং কড়া বার্তা দেন বন্যা পরিস্থিতি সামাল দিতে।

বারবার দামোদর ভ্যালি কর্পোরেশন (DVC)-এর জল ছাড়ার কারণে জেলাগুলো প্লাবিত হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “১৮ জুন থেকে আজ পর্যন্ত প্রায় ২৭ হাজার লক্ষ কিউসেক জল ছাড়া হয়েছে, কোনও আলোচনা ছাড়াই। জল ছেড়ে দিয়ে নিজেদের বাঁচাচ্ছে, আর বাংলার মানুষ জলবন্দি হয়ে মরছে।” এই বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকেও জানানো হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী দাবি করেন, কিন্তু কোনও ফল হয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

   

মুখ্যমন্ত্রী জানান, ঘাটাল মাস্টারপ্ল্যানের কাজ পুরোদমে চলছে। আগামী দু’বছরের মধ্যে এই কাজ শেষ হয়ে যাবে বলে তিনি আশাবাদী। এই প্রকল্প শেষ হলে ঘাটাল ও আশেপাশের অঞ্চলের মানুষ আর বারবার জলবন্দি অবস্থায় পড়বেন না। তাঁর কথায়, “আমি আশা করছি, আগামী দু’বছরের মধ্যে এটা পুরোপুরি শেষ হয়ে যাবে। তাহলেই ওই অঞ্চলের মানুষের দুর্ভোগ অনেকটাই কমবে।”

বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী চিফ সেক্রেটারিকে নির্দেশ দেন, প্রতিটি প্লাবন কবলিত জেলায় আগামী সাতদিনের মধ্যে তিনজন করে প্রিন্সিপাল সেক্রেটারি বা সচিব পাঠাতে হবে, যতদিন না পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। পুলিশকে বলা হয়েছে এলাকা অনুযায়ী ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান তৈরি করতে এবং উত্তরবঙ্গে কোথায় কতক্ষণে জল জমে তা নজরে রাখার নির্দেশও জেলা প্রশাসনকে দেওয়া হয়েছে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্দেশ্যে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আপনারা চিন্তা করবেন না, জমি জলের তলায় গেলেও আপনারা বিমার টাকা পাবেন।” ধান উৎপাদনে বাংলার অগ্রগতির কথা তুলে ধরে তিনি জানান, রাজ্য সরকার প্রতি বছর কোটি কোটি টাকা কৃষি খাতে বিনিয়োগ করে।

Advertisements

গ্রামীণ রাস্তা দিয়ে যেন ভারী গাড়ি না চলে, সে বিষয়ে পঞ্চায়েত দফতরকে কড়া নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি মুখ্যমন্ত্রী বন দফতরকে বলেন, জল নামার পর যেখানে উপযুক্ত জমি থাকবে, সেখানে ব্যাপক হারে গাছ লাগানোর উদ্যোগ নিতে হবে।

মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “আসাম পেল, বাংলা পেল না। জল ঢেলে দিয়ে কেন্দ্র যেন দায়মুক্ত! ভোটের সময় সব কিছু হয়, জনসেবার সময় কিছুই হয় না।” কেন্দ্রের ভূমিকাকে ‘উদাসীন’ আখ্যা দেন তিনি।

২১ জুলাইয়ের আগে বিভিন্ন মন্ত্রী ব্যস্ত থাকলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয় রেখে কাজ চালিয়ে যাওয়ার বার্তা দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “কে বেশি পেল, কে কম – এই মনোভাব থাকলে চলবে না। সবাই মিলে কাজ করতে হবে।”

বর্ষার জলবন্দি পরিস্থিতিতে রাজ্যজুড়ে উদ্বেগের পরিবেশ। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আশ্বাসে প্রশাসনিক তৎপরতা ও পরিকল্পনার ছাপ স্পষ্ট। কেন্দ্র-রাজ্য দ্বন্দ্বের মধ্যেও রাজ্য সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে থাকবে বলে বার্তা দেন তিনি।