কলেজ স্কোয়ারে মমতা-অভিষেকের উপস্থিতিতে উত্তাল রাজনৈতিক আবহ

  আজ, মঙ্গলবার দুপুর একটায় কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হল তৃণমূল কংগ্রেসের বিশাল মেগা মিছিল। এই মিছিল ঘিরে শুধু রাজ্য রাজনীতি নয়, জাতীয় স্তরেও চর্চার…

mamata and abhishek attend rally

 

আজ, মঙ্গলবার দুপুর একটায় কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হল তৃণমূল কংগ্রেসের বিশাল মেগা মিছিল। এই মিছিল ঘিরে শুধু রাজ্য রাজনীতি নয়, জাতীয় স্তরেও চর্চার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছে তৃণমূলের প্রতিবাদ। ভিনরাজ্যে বাঙালি হেনস্তা, জাতীয় রাজনীতিতে বাংলার প্রতি অবমাননার অভিযোগ এবং কেন্দ্রের বিরুদ্ধে একগুচ্ছ দাবি নিয়েই পথে নামল তৃণমূল। মিছিলে নেতৃত্ব দিচ্ছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।

   

মিছিলে উপস্থিত ছিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ, বহু বিধায়ক, সাংসদ, ছাত্র-যুব-নারী সংগঠনের সদস্যরা এবং হাজার হাজার তৃণমূল সমর্থক। কলেজ স্কোয়ার থেকে শুরু হয়ে এই মিছিল ডোরিনা ক্রসিং পর্যন্ত গিয়েছে। কলকাতার রাজপথ জুড়ে উৎসাহ ও উত্তেজনায় পরিপূর্ণ ছিল সমর্থকদের ভিড়। নানা রঙের ফেস্টুন, ব্যানার, ঢাক, শঙ্খধ্বনি এবং দলীয় স্লোগানে মুখর হয়ে ওঠে গোটা শহর।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই হুইলচেয়ারে বসে মিছিলে অংশ নেন। চলতি বছরেই তাঁর হাঁটুতে অস্ত্রোপচার হয়েছে, কিন্তু তার পরেও রাজপথে নেমে এই প্রতিবাদে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর পাশে হেঁটে মিছিলে অংশ নেন। বারবার মানুষের উদ্দেশে হাত নেড়ে শুভেচ্ছা জানান এবং দলীয় কর্মীদের পাশে থাকার বার্তা দেন।

মিছিল শেষে ডোরিনা ক্রসিংয়ে সংক্ষিপ্ত ভাষণে মমতা বলেন, “বাঙালিদের সম্মান আমরা কুড়োতে দেব না। যেখানেই অন্যায় হবে, তার প্রতিবাদ রাজপথেই হবে। কেন্দ্র সরকার আমাদের দাবিগুলি শুনুক, না হলে লড়াই চলবে। বাংলার গরিমা আমরা রক্ষা করবই।”

Advertisements

অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আজকের মিছিল শুধু প্রতিবাদ নয়, এটা প্রতিজ্ঞার মিছিল। দেশের সর্বত্র যে হারে বাঙালিদের হেনস্তা করা হচ্ছে, তা আর বরদাস্ত নয়। বাংলা মাথা উঁচু করেই দাঁড়াবে।”

পুলিশ প্রশাসনের পক্ষ থেকে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছিল এই মিছিল ঘিরে। বহু জায়গায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ করা হয়, বিকল্প রুট চালু করা হয় শহর জুড়ে। মিছিল শান্তিপূর্ণভাবে সম্পন্ন হয় এবং কোথাও কোনও অপ্রীতিকর ঘটনার খবর মেলেনি।

এই মিছিল ঘিরে রাজনৈতিক মহলে জোর আলোচনা শুরু হয়েছে। বিরোধীরা একে রাজনৈতিক স্টান্ট বলে কটাক্ষ করলেও তৃণমূল শিবির বলছে, মানুষের স্বার্থেই তাঁদের এই পদক্ষেপ। রাজ্যে এবং রাজ্যের বাইরে বাঙালিদের স্বার্থরক্ষা এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বঞ্চনার বিরুদ্ধে সোচ্চার হতেই এই কর্মসূচি।

সবমিলিয়ে বলা যায়, আজকের মিছিল ছিল তৃণমূল কংগ্রেসের শক্তি প্রদর্শনের একটি গুরুত্বপূর্ণ পর্ব। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে তৃণমূল আবারও দেখিয়ে দিল, যে কোনও প্রান্তিক ইস্যুতেও তারা রাজপথে নামতে প্রস্তুত। রাজ্যের মান-সম্মান রক্ষায় কোনও আপস নয়—এই বার্তাই যেন আজ পৌঁছে গেল বাংলার ঘরে ঘরে।