‘অমিত শাহকে হুমকি’—মহুয়া মৈত্রর মন্তব্যে তদন্তের দাবি বিজেপির

রাজনীতিতে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি একটি প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন এক…

Mahua Moitra Crosses the Line With Shocking 'Behead and Place on Table' Remark Against Amit Shah"

রাজনীতিতে উত্তাল পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) সাম্প্রতিক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে। সম্প্রতি একটি প্রকাশ্য সভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি এমন এক মন্তব্য করেছেন, যা নিয়ে শুরু হয়েছে প্রবল বিতর্ক। বক্তব্যে তিনি বলেন, “অমিত শাহের মতো নেতাদের মাথা কেটে টেবিলে রাখা উচিত”—এই বক্তব্য মুহূর্তের মধ্যে রাজনৈতিক মহলে আগুন জ্বালিয়ে দিয়েছে। বিজেপি এই মন্তব্যকে সরাসরি কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে হুমকি বলে দাবি করেছে এবং কড়া তদন্তের দাবি তুলেছে।

বিজেপির প্রতিবাদ

   

বিজেপি নেতারা সরাসরি অভিযোগ করেছেন যে, মহুয়া মৈত্র সচেতনভাবেই ঘৃণা ও হিংসা ছড়ানোর উদ্দেশ্যে এই বক্তব্য রেখেছেন। দিল্লি থেকে কলকাতা পর্যন্ত বিজেপির একাধিক নেতা ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তাঁদের বক্তব্য, দেশের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বিরুদ্ধে এই ধরনের ‘অসাংবিধানিক হুমকি’ কোনও ভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। দলের মুখপাত্ররা ইতিমধ্যেই নির্বাচন কমিশন এবং কেন্দ্র সরকারের কাছে লিখিত অভিযোগ জানিয়েছেন। তাঁদের দাবি, মহুয়া মৈত্রার বিরুদ্ধে অবিলম্বে তদন্ত শুরু করতে হবে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে।

তৃণমূলের অবস্থান

অন্যদিকে, মহুয়া মৈত্রর (Mahua Moitra) দল তৃণমূল কংগ্রেস কিছুটা অস্বস্তির মধ্যে পড়েছে। যদিও দলীয় নেতৃত্ব সরাসরি তাঁর পক্ষে সাফাই দেননি, তবে সূত্রের খবর অনুযায়ী, তাঁরা মনে করছেন মহুয়া ‘অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন’। তৃণমূলের তরফে প্রকাশ্যে কোনও মন্তব্য করা হয়নি, তবে দলীয় মহলের একাংশ জানিয়েছেন, এই ধরনের মন্তব্য বিজেপির রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে সাহায্য করতে পারে।

বিরোধীদের কটাক্ষ

কেবল বিজেপি নয়, অন্যান্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিও মহুয়ার মন্তব্যের সমালোচনায় সরব হয়েছে। কংগ্রেস এবং বামফ্রন্টের নেতারা বলেছেন, রাজনীতিতে মতবিরোধ থাকতেই পারে, কিন্তু ব্যক্তিগত আক্রমণ বা হিংসাত্মক মন্তব্য কোনও ভাবেই মানানসই নয়। তাঁদের মতে, রাজনীতিতে শালীনতা বজায় রাখা অত্যন্ত জরুরি।

Advertisements

সোশ্যাল মিডিয়ায় ঝড়

ঘটনাটি প্রকাশ্যে আসতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নেটিজেনরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। একাংশ মহুয়া মৈত্রার বক্তব্যকে ‘রাজনৈতিক হতাশার বহিঃপ্রকাশ’ বলে দাবি করেছেন। অন্যদিকে, আরেক অংশ মনে করছেন যে, তিনি জনগণের ক্ষোভকে তুলে ধরেছেন, যদিও সেই ভাষা যথাযথ ছিল না। টুইটার ও ফেসবুকে মহুয়া মৈত্রার মন্তব্য ঘিরে তুমুল ট্রোল, সমালোচনা এবং বিতর্ক চলছে।

বিজেপির আইনি পদক্ষেপের ইঙ্গিত

বিজেপি নেতারা ইতিমধ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন যে, যদি মহুয়া মৈত্রা প্রকাশ্যে ক্ষমা না চান, তবে তাঁর বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তাঁদের দাবি, এই মন্তব্য শুধুমাত্র রাজনৈতিক ভদ্রতার সীমা অতিক্রম করেনি, বরং দেশের সাংবিধানিক কাঠামোকেও চ্যালেঞ্জ করেছে। আইনজীবীদের একাংশও মনে করছেন, এই বক্তব্যকে ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা যেতে পারে।

মহুয়া মৈত্রার প্রতিক্রিয়া

এদিকে মহুয়া মৈত্রা (Mahua Moitra) নিজে এখন পর্যন্ত প্রকাশ্যে এই নিয়ে খুব বেশি কিছু বলেননি। তবে তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে খবর পাওয়া গিয়েছে, তিনি মনে করেন বিজেপি ইচ্ছাকৃতভাবেই তাঁর বক্তব্যকে বিকৃত করে প্রচার করছে। তাঁর দাবি, তিনি আসলে প্রতীকী ভাষায় মন্তব্য করেছিলেন, যা ভুল ব্যাখ্যা করা হয়েছে।