‘বেফাঁস মন্তব্যে’ বিপাকে মদন মিত্র! কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে তৃণমূলের শোকজ

কলকাতা: কসবার আইন কলেজে (Kasba Law College Rape Case) ছাত্রীর উপর নৃশংস গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, ঠিক তখনই এক বিতর্কিত মন্তব্য করে…

‘বেফাঁস মন্তব্যে’ বিপাকে মদন মিত্র! কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে তৃণমূলের শোকজ

কলকাতা: কসবার আইন কলেজে (Kasba Law College Rape Case) ছাত্রীর উপর নৃশংস গণধর্ষণের অভিযোগ ঘিরে যখন রাজ্য রাজনীতি উত্তাল, ঠিক তখনই এক বিতর্কিত মন্তব্য করে বসেন কামারহাটির তৃণমূল বিধায়ক মদন মিত্র (Madan Mitra Controversial Comment)। শুক্রবার এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি প্রশ্ন তোলেন, “সন্ধ্যার পর নির্যাতিতা ছাত্রী ক্যাম্পাসে কী করছিলেন?” এই মন্তব্যের জেরে শুরু হয় প্রবল সমালোচনা।

শুক্রবার রাতেই তৃণমূল কংগ্রেস (Trinamool Congress) দলের তরফে সামাজিক মাধ্যমে প্রকাশ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া জানানো হয়। দলের পক্ষ থেকে স্পষ্ট জানানো হয়, এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় এবং অসংবেদনশীল মন্তব্য একেবারেই দল সমর্থন করে না।

   

‘বেফাঁস মন্তব্যে’ বিপাকে মদন মিত্র! কসবা গণধর্ষণ কাণ্ডে তৃণমূলের শোকজ

তিনদিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ 
রবিবার দুপুরে তৃণমূলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সি (Subrata Bakshi) মদন মিত্রকে (Madan Mitra) শোকজের চিঠি পাঠান। সেখানে স্পষ্ট ভাষায় লেখা হয়েছে, “আপনার এই অযাচিত, অপ্রয়োজনীয় এবং অসংবেদনশীল মন্তব্য দলের ভাবমূর্তি মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। এছাড়া দল যেভাবে এই ঘটনার বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে, আপনার মন্তব্য তার সম্পূর্ণ পরিপন্থী।”

তাঁকে (Madan Mitra) তিন দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। যদি তিনি যথাযথ ব্যাখ্যা দিতে না পারেন, তাহলে দলের তরফে তার বিরুদ্ধে শৃঙ্খলাজনিত ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত মিলেছে।

পুলিশি তদন্ত ও দোষীদের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ
এদিকে, ঘটনাটি সামনে আসার সঙ্গে সঙ্গেই কলকাতা পুলিশ দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। অভিযোগ ওঠার ১২ ঘণ্টার মধ্যেই অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করা হয়। ইতিমধ্যেই তাদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ধারায় মামলা রুজু হয়েছে। ঘটনার তদন্তের জন্য বিশেষ তদন্তকারী দল (SIT) গঠন করা হয়েছে।

Advertisements

পাশাপাশি, নির্যাতিতার নিরাপত্তা আরও জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ প্রশাসন থেকে শুরু করে সরকারি বিভিন্ন দফতরও ঘটনাটির প্রতি নজর রাখছে।

দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করল তৃণমূল 
তৃণমূলের একের পর এক নেতা-নেত্রী, ছাত্র সংগঠনসহ সবাই এই ঘটনার নিন্দা করেছেন। সাংবাদিক বৈঠকে তাঁরা জানিয়েছেন, দোষীরা যেন কঠোরতম শাস্তি পায় এবং নির্যাতিতাকে সুবিচার দেওয়া হয়।

শুক্রবার রাতেই মদন মিত্র (Madan Mitra) ও তৃণমূলের আরেক সংসদ সদস্য কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের বিতর্কিত মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূলের অফিশিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল থেকে পোস্ট করা হয়। দলের তরফে স্পষ্ট জানানো হয়, এ ধরনের মন্তব্য দলের নীতির পরিপন্থী।

তারপর রবিবার দুপুরে আনুষ্ঠানিকভাবে শোকজ করা হল মদন মিত্রকে (Madan Mitra)। দলীয় সূত্রের খবর, যদি তিনি সন্তোষজনক উত্তর না দিতে পারেন, তাহলে ভবিষ্যতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে। একদিকে যখন পুলিশ দ্রুততার সঙ্গে তদন্ত চালিয়ে যাচ্ছে, দোষীদের বিরুদ্ধে আইনত ব্যবস্থা নিচ্ছে, অন্যদিকে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসও নিজেদের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে এবং দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে কঠোর পদক্ষেপ নিচ্ছে। কামারহাটির বিধায়কের এই মন্তব্য দলের ভিতরে যে বড় অস্বস্তি তৈরি করেছে, তা এবার প্রকাশ্যেই স্পষ্ট হয়ে গেল।