‘শিরদাঁড়া’ দেখলে অরুচি, গরিমা নষ্ট কলকাতা পুলিশের, ভরসা হারাচ্ছে জনগণ

আর জি কর কাণ্ডের পর থেকেই পুলিশের ‘শিরদাঁড়া’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফ থেকে তৎকালীন কলকাতার পুলিশ (Kolkata police) সুপার বিনীত…

Kolkata police

আর জি কর কাণ্ডের পর থেকেই পুলিশের ‘শিরদাঁড়া’ নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফ থেকে তৎকালীন কলকাতার পুলিশ (Kolkata police) সুপার বিনীত গোয়েলের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রতীকি ‘শিরদাঁড়া’। বর্তমান পরিস্থিতিতে ‘শিরদাঁড়া’-তে অরুচি কলকাতা পুলিশের। ‘শিরদাঁড়া’-র প্রতীকি ছবি অথবা ‘we want justice’ স্লোগান শুনলেই পুলিশের ধরপাকড়। আরজিকর কাণ্ডের আবহে প্রতিবাদের আগুন গ্রাস করেছে গোটা নগরীকে। সেই প্রতিবাদের কন্ঠ রোধ করতে অসুরের ভূমিকায় কলকাতা পুলিশ। উপর মহলের নির্দেশ মানতে গিয়ে বারবার অপদস্ত হচ্ছে শতাব্দি প্রাচীন প্রতিষ্ঠান কলকাতা পুলিশ। নষ্ট হচ্ছে দেড়শ বছরের সেই গরিমা। অভয়া হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গত ছটি শুনানিতে দেশের শীর্ষ আদালতের কাছে মুখ থুবড়ে পড়েছে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা।

কৃষ্ণনগরে তরুণী হত্যার ঘটনায় কোন কোন ধারায় মামলা রুজু 

   

গত মঙ্গলবার শহরে জোড়া কার্নিভালের আয়োজন করা হয়। একদিকে রাজ্য সরকারের তরফ থেকে দুর্গাপুজোর কার্নিভাল অন্যদিকে জুনিয়ার চিকিৎসকদের ডাকে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’। আন্দোলনকারীদের রুখতে ‘দ্রোহের কার্নিভাল’-এর অনুমতি দিতে নারাজ থাকে কলকাতা পুলিশ। মিছিল আটকাতে রানী রাসমণি এভিনিউতে পুলিশের তরফ থেকে তৈরি করা হয় লোহার বেড়াজাল। হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন আন্দোলনকারীরা। আদালতে মুখ পড়ে কলকাতা পুলিশের। রাজ্যের শীর্ষ আদালত মিছিলের অনুমতি দেয়, এরপরই রানী রাসমণি রোড থেকে সরিয়ে ফেলা হয় কলকাতা পুলিশের লৌহ শিখল। 

দক্ষিণ-পূর্ব রেলে ফের ট্রেন বাতিল, দেখুন পরিবর্তিত সূচি

এখানেই শেষ নয় রাজ্য সরকারের উদ্যোগে যে কার্নিভালের আয়োজন করা হয়েছিল সেখানে মেডিকেল ক্যাম্পে কর্মরত থাকা অবস্থায় গ্রেফতার হতে হল কলকাতা পুর সংস্থার এক চিকিৎসককে। কারণ জানলে কিছুটা অবাক হবেন, কার্নিভালের অনুষ্ঠানে যে মেডিকেল ক্যাম্প করা হয়েছিল সেখানে ওই চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন। তার টি-শার্টে লেখা ছিল ‘we want justice’ । যদিও তিনি কি কারণে আটক হলেন সে বিষয়ে কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি কলকাতা পুলিশের আধিকারিকরা। প্রায় ৫ ঘন্টারও বেশি সময় তাকে বসিয়ে রাখা হয় ময়দান থানায়। অনুমান করা হচ্ছে, তার টি-শার্টে বিচারের স্লোগান লেখা থাকার কারণেই তাকে কলকাতা পুলিশের হাতে আটক হতে হয়েছিল। এই ঘটনা নিয়ে ইতিমধ্যেই সরগরম রাজ্য রাজনীতি। প্রতিবাদে বুধবার কলকাতা পুরসংস্থার অন্যান্য চিকিৎসকরা দাবি তোলেন ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কলকাতা পুলিশকে ক্ষমা চাইতে হবে। ফলে বারবার প্রশ্নের মুখে পড়ছে কলকাতা পুলিশের ভূমিকা। 

গত আগস্ট মাসে আরজিকর হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় চিকিৎসক হত্যাকান্ডের ঘটনার পর থেকে গোটা রাজ্যজুড়ে একাধিক নারকীয় ঘটনার সাক্ষী থেকেছে এই বাংলার মানুষ। জয়নগর, কৃষ্ণনগর থেকে পুরুলিয়া নারী নির্যাতনের ঘটনায় বারবার প্রশ্নের মুখে পুলিশের ভূমিকা। কোথাও অভিযোগ নিতে দেরি কোথাও আবার পুলিশের বিরুদ্ধে তথ্য প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা সাধারণ মানুষের কথায় এ যেন রক্ষকই ভক্ষক। পুলিশ প্রশাসনের উপর আস্থা হারাচ্ছে সাধারণ মানুষ। উপর মহলের চাপের কাছে মাথা নত নয়, সাধারণ মানুষের সুরক্ষার স্বার্থে উর্দিধারীদের দায়িত্বে অবিচল থাকার কথা বলছেন অনেকে।