অবৈধ হোটেল রেস্তরাঁ চালালে এবার কড়া ব্যবস্থা, নির্দেশ লালবাজারের

কলকাতা পুলিশের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ব‌্যবসায়ীদের উদ্দেশে কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন। বিশেষ করে হোটেল, রেস্তরাঁ, চায়ের দোকান, এবং খাদ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলির মালিকদের জন্য এবার…

Lalbazar guidelines

কলকাতা পুলিশের পুলিশ কমিশনার মনোজ ভার্মা ব‌্যবসায়ীদের উদ্দেশে কঠোর সতর্কতা জারি করেছেন। বিশেষ করে হোটেল, রেস্তরাঁ, চায়ের দোকান, এবং খাদ্য সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলির মালিকদের জন্য এবার বাধ্যতামূলক পুলিশ লাইসেন্স নেওয়া হবে। ১ এপ্রিল থেকে কলকাতার সব খাদ্য ও পানীয় বিক্রির ব্যবসার ক্ষেত্রে এই লাইসেন্সের মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আর আইন অনুযায়ী যদি ব্যবসা করতে হয়, তাহলে এই লাইসেন্স আবশ্যক। পুলিশ লাইসেন্স না থাকলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে, এমনটাই জানিয়েছেন কলকাতা পুলিশ।

১ এপ্রিল থেকে কলকাতায় সব ধরনের খাদ্য ও পানীয় বিক্রির প্রতিষ্ঠানের জন্য পুলিশ লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। চায়ের দোকান, খাবারের দোকান, মিষ্টির দোকান, রেস্তরাঁ, পানশালা, হোটেল এই সব প্রতিষ্ঠানের মালিকদের কাছে পুলিশের লাইসেন্স থাকতে হবে। কলকাতা পুলিশের দীর্ঘ প্রচারাভিযান থেকে জানা গেছে, অনেক ব্যবসায়ী এখনও জানতেন না যে পুলিশের লাইসেন্সও দরকার, তাঁদের কাছে শুধুমাত্র ট্রেড লাইসেন্স বা ফুড লাইসেন্স থাকলেই যথেষ্ট বলে মনে হয়েছিল।

   

লালবাজার (কলকাতা পুলিশ সদর দপ্তর)-এর সূত্রে জানা গেছে, ব্যবসায়ীদের মধ্যে অনেকেই জানতেন না যে, পুলিশ লাইসেন্সের প্রয়োজনীয়তা। এর জন্যই কলকাতা পুলিশের পক্ষ থেকে গত কয়েক মাসে ব্যাপক প্রচারাভিযান চালানো হয়। অনেক ব্যবসায়ী জানিয়েছেন, তাঁদের কাছে ট্রেড লাইসেন্স এবং ফুড লাইসেন্স থাকলেই যথেষ্ট, পুলিশ লাইসেন্সের দরকার নেই, এমন ধারণা ছিল। তবে এখন থেকে ওই ধারণা পাল্টাতে হবে।

পুলিশ লাইসেন্সের আবেদন প্রক্রিয়া সহজ করতে কলকাতা পুলিশ ‘বন্ধু অ্যাপ’ চালু করেছে, যেখানে ব্যবসায়ীরা অনলাইনে পুলিশ লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে পারবেন। চায়ের দোকান থেকে শুরু করে বড় রেস্তরাঁ বা হোটেল—সব ধরনের ব্যবসায়ীকে এই অ্যাপে আবেদন করতে হবে এবং তাঁদের ব্যবসায়িক তথ্য জমা দিতে হবে।

কলকাতা পুলিশ জানিয়েছে যে, ব্যবসায়ীদের ১ এপ্রিল থেকে ৩০ জুনের মধ্যে লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে। এই সময়সীমার মধ্যে সব ব্যবসায়ীকে তাঁদের লাইসেন্সের জন্য আবেদন করতে হবে, না হলে আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

পুলিশের প্রচারণায় বিভিন্ন ব্যবসায়িক কেন্দ্র এবং বাজারে গিয়ে পুলিশ কর্মকর্তারা বৈঠক করেছেন। অনেক ব্যবসায়ী জানতেন না যে পুলিশ লাইসেন্সও প্রয়োজন, শুধু ট্রেড এবং ফুড লাইসেন্স যথেষ্ট। এজন্য পুলিশের পক্ষ থেকে বাজার কমিটি এবং ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক করা হয়েছে। এই প্রচারণার ফলে গত এক বছরে উত্তর কলকাতায় প্রায় ৮০০ নতুন পুলিশ লাইসেন্স তৈরি হয়েছে।

কলকাতা পুলিশ স্পষ্ট জানিয়েছে, যারা খাবার ও পানীয় সম্পর্কিত দোকান চালাচ্ছেন এবং তাদের কাছে পুলিশ লাইসেন্স নেই, তাদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। নতুন নির্দেশিকায় বলা হয়েছে, ৩০ জুন ২০২৫-এর মধ্যে পুলিশ লাইসেন্স না নেওয়া হলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে বা জরিমানা করা হবে। এটি শুধু রেস্তরাঁ বা হোটেল নয়, পানশালা, ক্লাব বা সিনেমাহলের সঙ্গে যদি পানশালা থাকে, তাও পুলিশ লাইসেন্সের আওতায় পড়বে।

এই পদক্ষেপের উদ্দেশ্য হল শহরের নিরাপত্তা বৃদ্ধি করা, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জনস্বার্থ রক্ষা করা। পুলিশের লাইসেন্স বাধ্যতামূলক করার মাধ্যমে একটি সুসংগঠিত এবং নিরাপদ ব্যবসায়িক পরিবেশ তৈরি করার লক্ষ্য।