কলকাতার নামী পুজোর লাইট অ্যান্ড সাউন্ড সংস্থাকে পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদ

কলকাতা: দুর্গাপুজোর আবহে এবার নতুন বিতর্কের জন্ম দিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার (Santosh Mitra Square)। একদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর উৎসবের আড়ালে ভিড়ের…

কলকাতা: দুর্গাপুজোর আবহে এবার নতুন বিতর্কের জন্ম দিল সন্তোষ মিত্র স্কোয়ার (Santosh Mitra Square)। একদিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের উদ্বোধন অনুষ্ঠানের পর উৎসবের আড়ালে ভিড়ের ঢল, অন্যদিকে প্রশাসনের কড়া নজরদারি। মুচিপাড়া থানার পুলিশ নোটিস পাঠিয়েছে স্কোয়ারের লাইট ও সাউন্ড সংস্থাকে।

Advertisements

পুলিশ চেয়েছে সংস্থার সমস্ত নথি—লাইসেন্স, পুজোর উদ্যোক্তাদের সঙ্গে চুক্তিপত্র, জিএসটি সংক্রান্ত কাগজ এবং সাউন্ড লিমিটারের নথি। পাশাপাশি লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শোয়ের অনুমতিপত্রও চাইয়া হয়েছে। নোটিসে হাইকোর্ট ও দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদের নির্দেশের উল্লেখ রয়েছে।

   

নোটিস পাঠানো হয়েছে রাজস্থানের AK প্রোজেক্টিং সংস্থাকে। পুলিশ জানিয়েছে, সমস্ত নথি যাচাইয়ের পরই নিশ্চিত হবে যে অনুষ্ঠান নিরাপদ ও নিয়ম মাফিক হচ্ছে কি না।

এই ঘটনার পর বিজেপি কাউন্সিলর সজল ঘোষ ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন, “আমার এক বিজ্ঞাপনদাতাকে পুলিশ গতকাল তিন ঘণ্টা বসিয়েছে। আজ যাঁরা বাইরে থেকে লাইট ও সাউন্ড কাজ করছেন, তাঁদের কাগজপত্র চাওয়া হয়েছে। পুলিশই আমাদের অনুমতি দিয়েছে। যদি এমন পরিস্থিতি হয়, আমরা মণ্ডপ নিষ্প্রদীপ করব।”

তৃণমূল মুখপাত্র অরূপ চক্রবর্তী পাল্টা অভিযোগ করেছেন, সজল ঘোষ সস্তা জনপ্রিয়তার জন্য বিতর্ক সৃষ্টি করছেন। তিনি বলেন, “পুজো হিট করতে হলে বিতর্ক তৈরি করো। প্রশাসনকে গালাগাল দিলে বিতর্ক হয়। এখন যারা লাইটিংয়ের কাজ করছে, যদি লাইসেন্স ঠিক না থাকে এবং দুর্ঘটনা ঘটে, তার দায় কে নেবে? পুলিশ কেবল নথি চেয়েছে, পুজো বন্ধ করতে বলেনি।”

শহরের নানা প্রান্তে এই ঘটনার প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে। সাধারণ মানুষ, উদ্যোক্তা এবং সোশ্যাল মিডিয়ার ব্যবহারকারীরা প্রশাসন ও রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সমালোচনা করছেন। অনেকেই বলছেন, উৎসবকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক বিতর্ক তৈরি হওয়া উচিত নয়।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নোটিস কোনোভাবেই পূজা বন্ধের নির্দেশ নয়। এটি কেবল নিশ্চিত করার জন্য যে লাইট ও সাউন্ড সংক্রান্ত সমস্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়ম মাফিক চলছে। যদি কোনো অনিয়ম বা দূষণ নিয়ন্ত্রণ লঙ্ঘন হয়, তখন প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে।

সন্তোষ মিত্র স্কোয়ারের ভিড় ও উদযাপনের এই পরিস্থিতি দেখাচ্ছে, রাজনৈতিক চাপ ও প্রশাসনের নজরদারি মিলে উৎসবকে আরও উত্তেজনাপূর্ণ করে তুলেছে। সমস্ত দৃষ্টি এখন সংস্থা এবং প্রশাসনের সিদ্ধান্তের দিকে।