কলকাতা: আর হাতে গোনা কয়েক সপ্তাহ, তারপরই বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজো। শহর জুড়ে প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে পুরোদমে। কিন্তু এর মধ্যেই কিছু অসত্য তথ্য ও ভুয়ো খবর সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হতে শুরু করেছে, যা নিয়ে উদ্বেগে সাধারণ মানুষ। এই পরিস্থিতিতে এগিয়ে এল কলকাতা পুলিশ (Kolkata Police)। বুধবার কলকাতা পুলিশের এক্স হ্যান্ডেলে একটি সরকারি বিবৃতি জারি করে ভুয়ো খবর সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক করা হয়েছে।
কলকাতা পুলিশের তরফে স্পষ্টভাবে জানানো হয়েছে, পুজো উপলক্ষে কোনওরকম সরকারি বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়নি। বরং উৎসব নির্বিঘ্নে ও শান্তিপূর্ণভাবে পালন হোক, তা নিশ্চিত করতেই একাধিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরিকল্পনা করেছে পুলিশ প্রশাসন।
কলকাতা পুলিশের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “দুর্গাপুজো কলকাতার হৃদয়স্পর্শী উৎসব। এই সময় জনজীবনের স্বাভাবিক গতি বজায় রাখতে এবং ভিড় নিয়ন্ত্রণে রাখতে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। তবে, কোনওরকম বিধিনিষেধ জারি হয়নি। সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ভুয়ো ও ভিত্তিহীন খবরের উপর যেন কেউ বিশ্বাস না করেন।”
পুলিশের বার্তা জনগণের উদ্দেশে:
“আমাদের অনুরোধ, শুধুমাত্র কলকাতা পুলিশের অফিসিয়াল সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেল এবং সরকারি সূত্র থেকে তথ্য গ্রহণ করুন। অসত্য তথ্য ছড়ানো বা শেয়ার করার আগে যাচাই করে নিন। আপনারাই আমাদের উৎসবকে নিরাপদ এবং আনন্দময় করে তুলতে পারেন।”
এই ধরনের গুজব রটানোর পেছনে কারা রয়েছে, তা খতিয়ে দেখার জন্য ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে লালবাজার। সোশ্যাল মিডিয়া মনিটরিং টিমকে আরও সক্রিয়ভাবে নজরদারি চালানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
Public Advisory
It has been observed that misinformation is being circulated regarding crowd management measures during Durga Puja 2025.
Kolkata Police would like to clarify that no directive has been issued to halt or restrict any Durga Puja celebrations. Our sole priority is…
— Kolkata Police (@KolkataPolice) July 16, 2025
কলকাতা পুলিশের একটি সূত্রের মতে, এই বছর শহরে ৩৫০০-রও বেশি পুজো আয়োজিত হচ্ছে। সেই অনুযায়ী তৈরি হচ্ছে নিরাপত্তা পরিকল্পনা। গুরুত্বপূর্ণ প্যান্ডেলগুলিতে QR কোড ভিত্তিক প্রবেশ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে মহিলাদের জন্য ‘শক্তি বাহিনী’, ট্র্যাফিক ব্যবস্থার উপর বিশেষ নজর থাকবে।
এছাড়াও, সিসিটিভি ক্যামেরা, ড্রোন নজরদারি, বম্ব স্কোয়াড ও কুইক রেসপন্স টিম নিয়মিতভাবে শহরের গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে মোতায়েন থাকবে।
শহরের নাগরিকেরা পুলিশের এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন। বেহালার বাসিন্দা অনিন্দিতা ঘোষ বলেন, “সোশ্যাল মিডিয়ায় এমন অনেক গুজব দেখি, যেগুলির কোনও ভিত্তি নেই। পুলিশের তরফ থেকে স্পষ্ট বার্তা আসায় অনেকটা নিশ্চিন্ত লাগছে।”
উৎসব মানেই আনন্দ, মিলন, নিরাপত্তা এবং সামাজিক সহাবস্থান। সেই উৎসব যাতে ভুয়ো খবরের ছায়ায় না ঢাকে, তার দায়িত্ব সকলের। কলকাতা পুলিশের মতো দায়িত্বশীল সংস্থা যখন এগিয়ে আসে, তখন জনসচেতনতা তৈরি হয়—এটাই বড় প্রাপ্তি।