News Desk, Kolkata: কাদম্বিনী আছেন ইতিহাস থেকে সমকালীন ডিজিটাল পোস্টারে। তিনি আছেন কলকাতা পুরনিগম ভোটে বামপন্থীদের প্রতিশ্রুতির প্রতীক হয়ে !
পুরনিগমের ভোটে বাম ইস্তেহার, নির্বাচনী প্রতুশ্রুতি প্রচার নিয়ে যথারীতি আলোচনার শীর্ষে সিপিআইএম। উত্তরবঙ্গে দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি থেকে দক্ষিণবঙ্গের পশ্চিম বর্ধমান জেলার আসানসোল পুরনিগমেও চলেছে চর্চা। সেইসঙ্গে বাম-অবাম দুই রাজনৈতিক মহলেই উঠে আসছে টুম্পা নেচে বিধানসভার ভোটে গোল্লা পেয়েছে সিপিআইএম। এবার টুম্পা উড়ে গেল! চলে এলেন কাদম্বিনী! এমন বুদ্ধিজীবী প্রচার কি পাব্লিক নিতে পারবে?
শুক্রবার কলকাতা পুরনিগমের ভোটে চমক তৈরি করেছে কলকাতা জেলা বামফ্রন্ট। রাজ্যে শাসক টিএমসি ও প্রধান বিরোধীদল বিজেপির আগে বাম শিবির প্রার্থী ঘোষণা করে। এর পরেই সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে বামেদের নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ও নাগরিক পরিষেবার চমকদার সব ঘোষণা। এই ঘোষণাগুলি কলকাতা ছাড়িয়ে দেশের অন্যান্য জায়গায় থাকা প্রবাসী বাঙালি বা বিদেশে থাকা প্রবাসীদের মধ্যেও সাড়া ফেলেছে। পুর পরিষেবার মধ্যে সবথেকে নজরকাড়া পোস্টারটি হল ‘কাদম্বিনীর কলকাতা’।
কলকাতা নিবাসী মহিলাদের বিভিন্ন সামাজিক বিষয় , নিরাপত্তা নিয়ে তৈরি হয়েছে কাদম্বিনীর কলকাতা নামে পরিষেবার ডিজিটাল পোস্টার।
কে এই কাদম্বিনী?
বিধানসভায় টুম্পা নেচে শূন্য হওয়া বাম বুদ্ধিজীবীদের ধারণা, পোস্টারে যদিও স্পষ্ট করা হয়নি। তবে এই নামে জড়িয়ে আছেন ভারতের দুই প্রথম মহিলা চিকিৎসকের একজন কাদম্বিনী গাঙ্গুলী। তিনি ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। রক্ষণশীল সমাজের বিরুদ্ধে মহিলাদের লড়াইয়ের সদা উজ্জ্বল। কলকাতাতেই তিনি চিকিৎসা করতেন।
টুম্পা ছেড়ে কিংবদন্তি চিকিৎসক কাদম্বিনী গাঙ্গুলী?
প্রশ্নের মুখে পড়ছে বাম মহল। নাগরিক পরিষেবা দিতে গিয়ে কেন এত আঁতেলমার্কা পোস্টার এমনও কটাক্ষ উড়ে আসছে।
তবে কলকাতা পুরনিগমের ভোটে বামফ্রন্টের আরও একটি পোস্টার প্রতিশ্রুতি নিয়ে তীব্র আগ্রহ জনতার মনে। ‘সবুজ সিটি’ ও ‘গ্রীন অ্যাডমিন’ নামে দুটি পোস্টার সহ প্রতিশ্রুতি চূড়ান্ত পেশাদারি ছাপ রেখেছে বামেরা। এতে বলা হয়েছে, ‘পরিবেশ বাঁচাতে চাই গণ উদ্যোগ। চালু হবে মোবাইল অ্যাপ। এই অ্যাপে আপনি নিজেকে অ্যাডমিন হিসেবে রেজিস্টার করুন। কোথাও গাছ কাটা, পুকুর ভরাট বা পরিবেশের জন্য ক্ষতিকারক কিছু দেখলে ওই অ্যাপে তার ছবি তুলে আপলোড করুন। ছবি ও লোকেশন সাথে সাথে চলে যাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে। নেওয়া হবে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।’
প্রতিশ্রুতির পোস্টারগুলি তীব্র আলোড়ন ফেলেছে। কোনওটার নাম ‘রামধনুর অধিকার’- এটি তৃতীয় লিঙ্গের জন্য। এছাড়া আছে শ্রমিকের অধিকার, ফিট সিটি, কাজের কলকাতা, উঠোন পাঠশালা সহ আরও।
কলকাতা পুরনিগমের সর্বশেষ বামপন্থী মেয়র ছিলেন বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য। তিনি এখন রাজ্যসভার সাংসদ। তবে বাম জমানাতেই মহানগরের পুরনিগম কার্যালয় অর্থাৎ ‘ছোট লালবাড়ি’ ( বড় লালবাড়ি মানে মহাকরণ) চলে গিয়েছিল তৃণমূল কংগ্রেসের দখলে। সে ছিল এক যুযুধান পরিস্থিতি।
বাম জমানা শেষে রাজ্যে ভোট বাজারে বিধায়ক, সাংসদ সংখ্যার নিরিখে ডোডো পাখির ন্যায় অবলুপ্ত হয়েছে বামেরা। পরিস্থিতি এমন যে নামমাত্র কয়েকটি ওয়ার্ডে জয়ের ক্ষীণ আসা আর কিছু ওয়ার্ডে ‘ফাইট’ করা ছাড়া আর কোনও বড় আশা দেখছেন না বাম সমর্থক, কর্মী ও নেতারা।