রাজনৈতিক উত্তাপের মাঝে বিধানসভায় রক্ষীদের প্রবেশ চাইলেন ফিরহাদ

বিধানসভায় নিরাপত্তা ইস্যুতে এবার সরব হলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) । সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন,…

Kolkata Mayor Firhad Hakim Urges Calcutta High Court to Allow Entry of Guards into Assembly

বিধানসভায় নিরাপত্তা ইস্যুতে এবার সরব হলেন কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) । সম্প্রতি এক সাংবাদিক বৈঠকে তিনি জানিয়েছেন, বিধানসভায় সব দলের বিধায়করা যেন তাঁদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী, অর্থাৎ পিএসও (PSO)–দের সঙ্গে নিয়ে ভিতরে প্রবেশ করতে পারেন, সেই বিষয়ে হাইকোর্ট যেন বিবেচনা করে— এমনই আবেদন তিনি জানিয়েছেন আদালতের কাছে।

ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim)  বলেন, “সব দলের বিধায়কদের পিএসও–কে বিধানসভায় ঢোকার অনুমতি দেওয়া হোক। তাহলে বিধানসভার নিরাপত্তা আরও জোরদার হবে। একজন নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি যাতে নিজেকে সুরক্ষিত বোধ করেন, সেটাও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।”

   

বর্তমানে বিধানসভায় প্রবেশের ক্ষেত্রে বিধায়কদের পিএসও–দের প্রবেশাধিকার নেই। তবে সাম্প্রতিক সময়ে বিধানসভায় একাধিক উত্তেজনাকর পরিস্থিতি, ঝামেলা ও সংঘর্ষের ঘটনার পর এই বিষয়ে নতুন করে আলোচনা শুরু হয়েছে। কিছু বিধায়ক তাঁদের পিএসও–দের নিয়ে ঢুকতে চাইলে নিরাপত্তা রক্ষীরা তাঁদের আটকে দেন, যা ঘিরে তুমুল রাজনৈতিক বিতর্ক শুরু হয়।

ফিরহাদের(Firhad Hakim) মতে, পিএসও–রা কোনও রাজনৈতিক কর্মী নন, বরং সরকারের স্বীকৃত নিরাপত্তারক্ষী। তাঁদের কাজই হল সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রক্ষা করা। তিনি বলেন, “একজন বিধায়কের যদি মনে হয়, তাঁর জীবনের ওপর কোনও রকম ঝুঁকি রয়েছে, তাহলে তাঁর পিএসও–কে সঙ্গে রাখা সম্পূর্ণ যুক্তিসঙ্গত। এই বিষয়টি রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে না দেখে নিরাপত্তার দিক থেকে দেখা উচিত।”

কেন এই দাবি?

বিধানসভা হল রাজ্যের সর্বোচ্চ আইনসভা। যেখানে রাজ্যের সমস্ত রাজনৈতিক দলের বিধায়ক একত্রিত হয়ে রাজ্যের ভবিষ্যত পরিকল্পনা ও আইন প্রণয়ন করেন। এই জায়গায় সুরক্ষা নিশ্চিত করাই প্রশাসনের অন্যতম দায়িত্ব। ফিরহাদের যুক্তি হল, যখন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা, বিতর্ক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণ হয় বিধানসভায়, তখন এমন একটি জায়গায় প্রত্যেক নির্বাচিত প্রতিনিধির নিরাপত্তা অগ্রাধিকার পাওয়ার কথা। সেই জায়গা থেকেই পিএসও–দের প্রবেশাধিকার দেওয়ার পক্ষে তিনি মত প্রকাশ করেছেন।

Advertisements

বিরোধীদের প্রতিক্রিয়া

তবে এই দাবিকে ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। বিরোধীদের একাংশের মতে, যদি প্রত্যেক বিধায়ক নিজের পিএসও নিয়ে বিধানসভায় ঢোকেন, তাহলে সেটি সংসদীয় পরিসরের মর্যাদায় আঘাত হানতে পারে। বিরোধীরা মনে করছেন, এর মাধ্যমে বিধানসভার অভ্যন্তরে রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি করা হতে পারে। অন্যদিকে, তৃণমূলের তরফে দাবি করা হয়েছে, বর্তমান সময়ের রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যক্তিগত নিরাপত্তার প্রশ্নে এই দাবি বাস্তবসম্মত এবং যুক্তিনিষ্ঠ।

হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ

ফিরহাদ হাকিম(Firhad Hakim) পরিষ্কারভাবে জানিয়েছেন, তিনি হাইকোর্টের দৃষ্টি আকর্ষণ করছেন এই বিষয়ে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন, আদালত বিষয়টি যুক্তিসঙ্গত ও গম্ভীর দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করে প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত নেবে। তাঁর কথায়, “আমি আদালতের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব যদি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হয়। কারণ এটা কোনও রাজনৈতিক দাবি নয়, এটা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তার দাবি।”