ধৰ্মতলায় ধুন্ধুমার! শনিবারের বারবেলায় তৃণমূল VS তৃণমূলের লড়াইয়ে রেফারির ভূমিকায় খোদ পুলিশই

শনিবারের বারবেলায় কলকাতার রাজপথে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি (Kolkata Dharmatala) । হকার-ব্যবসায়ী সংঘাতে অবরুদ্ধ শহরের প্রাণকেন্দ্র! ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়ল ধর্মতলা চত্বর (Kolkata Dharmatala)। আবারও…

শনিবারের বারবেলায় কলকাতার রাজপথে ধুন্ধুমার পরিস্থিতি (Kolkata Dharmatala) । হকার-ব্যবসায়ী সংঘাতে অবরুদ্ধ শহরের প্রাণকেন্দ্র! ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভে কার্যত অচল হয়ে পড়ল ধর্মতলা চত্বর (Kolkata Dharmatala)। আবারও ঘুরেফিরে অভিযোগ সেই হকার সমস্যার দিকেই। আরও অদ্ভুত বিষয় এই হকার এবং ব্যবসায়ী উভয়েরই ইউনিয়ন তৃণমূলেরই। অর্থাৎ শনিবারের শহরের রাজপথে (Kolkata Dharmatala)  তৃণমূল ভার্সেস তৃণমূল।

গত কয়েক দিনের ঘটনায় ক্ষেপে লাল ফিরহাদ! পোস্টম্যান, পুতুল বললেন কাকে?

   

নিউমার্কেট এলাকার যারা স্থায়ী ব্যবসায়ী, তাঁদের অভিযোগ ফুটের হকারদের দিকে। অভিযোগ ৪০-৫০ জনের হকারদের একটি দল বাঁশ,রড,লাঠি নিয়ে তাঁদের উপরে আক্রমণ করে। এমনকি তাঁদের ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মকসুদ খানকেও মারধর করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। ঘটনায় প্রতিবাদের জেরে ব্যবসায়ীরা কার্যত অবরুদ্ধ করে দেন ধর্মতলা চত্বর (Kolkata Dharmatala), এস এন ব্যানার্জি রোড, লিন্ডসে স্ট্রিটের মত অতি গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলি।

হামলার কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীদের অভিযোগ,একটি বৈধ পার্কিং প্লেসে থাকা গাড়ি সরাবার জন্য ঝামেলা শুরু করেন হকাররা। ব্যবসায়ীরা আরও অভিযোগ করেন, নিউমার্কেট থানার থেকে অর্ডার জারি করা হয়েছে এরকম একটি কাগজ নিয়ে এসে তারা দাবি করতে থাকেন যে ওই পার্কিং সরিয়ে দিতে হবে। ব্যবসায়ীদের অনেকেরই বক্তব্য দীর্ঘ প্রায় ৫০ বছর ধরে ওই জায়গায় পার্কিং রয়েছে এবং সেটি বৈধ পার্কিং। এমনকি কলকাতা কর্পোরেশনের ম্যাপেও ওই জায়গাকে পার্কিং প্লেস হিসাবেই দেখানো হয়েছে। সেই জায়গায় পুলিশের কাগজ নিয়ে এসে হকাররা কেন জুলুমবাজি করছে, এই নিয়ে ক্ষোভে ফেটে পড়েন নিউমার্কেটের স্থায়ী ব্যবসায়ীরা। প্রতিবাদে শনিবার বিকেল বেলায় তাঁরা সমস্ত দোকান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানা যাচ্ছে।

মমতার নির্দেশই সার, সাতসকালে বুলডোজার দিয়েই চলছে হকার উচ্ছেদ

এদিকে পরিস্থিতি সামাল দিতে কার্যত হিমশিম খেতে হয়েছে কলকাতা পুলিশকেও। কলকাতা পুলিশের ডিসি ও অন্যান্য পদস্থ পুলিশ অফিসাররা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান। লালবাজার থেকে আসে বিশাল পুলিশবাহিনী। তাদের সামনেই পুলিশের পদস্থ কর্তাদের ঘিরে ধরে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন ব্যবসায়ীরা। পুলিশকর্তারা ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছেন । তবে নিউ মার্কেট চত্বরের স্থায়ী ব্যবসায়ীদের দাবি এইমুহূর্তে একটাই। হামলার ঘটনায় অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। না হলে নিউ মার্কেট খোলা হবে না। সূত্রের খবর মেয়র ফিরহাদ হাকিম এবং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নিয়েছেন এবং পুলিশ আধিকারিকদের দ্রুত সমস্যা সমাধানের দিয়েছেন।

ইতিমধ্যেই শহর জুড়ে হকার উচ্ছেদ অভিযান শুরু হয়েছে যা সাময়িক স্থগিত রয়েছে খোদ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে। নিউমার্কেট, ধর্মতলার চত্বরে হকার সমস্যা দীর্ঘদিনের। একাধিকবার প্রশাসনের কাছে বলেও সুরাহা হয়নি এরকমই দাবী স্থায়ী ব্যবসায়ীদের। এমনকি ফুটপাতের ব্যবসায়ীদের উৎপাতে তাদের দোকানে ঢোকাই মুশকিল হয়ে যায়, এমন অভিযোগ ও বারবার করেছেন তাঁরা। কিন্তু হকাররা রীতিমত মারমুখী হয়ে আক্রমণ করছেন ব্যবসায়ীদের, এমন অভিযোগ আগে কখনো শোনা যায়নি। তেমনি দেখা যায়নি রাজপথে এরকম ব্যবসায়ী বিক্ষোভও। সবমিলিয়ে শনিবারে ধর্মতলা চত্বরে যাওয়া মানুষজন যেরকম এক অদ্ভুত দৃশ্যের সাক্ষী হলেন। সেরকমই উইকেন্ডে যারা শপিং করবেন বলে ভেবেছিলেন, তাদের শনিবারের বৃষ্টি ভেজা বিকেলটা জলেই গেল বলে মনে করা হচ্ছে।