বৃহস্পতিবার দিনভর দফায় দফায় উত্তাল হল যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়। এরপর এইদিন বিকেলে আটক মূল অভিযুক্ত সৌরভ চৌধুরী। আটক করল যাদবপুর থানার পুলিশ। হস্টেলে স্বপ্নদীপের রহস্যজনক মৃত্যু ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিস। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিজস্ব কমিটি তৈরি করেছে। বৃহস্পতিবার থেকে যাদবপুর মেন হোস্টেলের একাধিক আবাসিককে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিস। তাদের বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। জানা যাচ্ছে প্রতিবেদন প্রকাশের কিছুক্ষণ আগে সৌরভ চৌধুরী নামে এক পড়ুয়াকে আটক করা হয়েছে। আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাকে।
জানা যাচ্ছে, স্বপ্নদীপ কুন্ডুর পরিবারের তরফে পুলিশের কাছে যে অভিযোগপত্র জমা দেওয়া হয়েছে সেখানে রয়েছে এই প্রাক্তনীর নাম। কিছুদিন আগেই স্নাতকোত্তর পাশ করেছেন সৌরভ। পাশ করলেও থাকতেন মেন হস্টেলেই। সৌরভে বাড়ি পশ্চিম মেদিনীপুরের চন্দ্রকোনায় এবং তিনি ২০২২ সালে এমএসসি পাশ করেন। জানা যাচ্ছে সৌরভ মেস কমিটির একজন গুরুত্বপূর্ণ মেম্বার ছিলেন এবং তিনি হস্টেলে থেকেই চাকরির চেষ্টা করছিলেন।
জানা যাচ্ছে চলতি মাসের ৩ তারিখে চায়ের দোকানে সৌরভের সঙ্গে পরিচয় হয় স্বপন্দীপের বাবার। সৌরভ স্বপ্নদীপের বাবাকে জানায় যে পাকাপাকিভাবে ঘর পাচ্ছে না ততদিন চাইলে মেন হস্টেলে গেস্ট হয়ে থাকতে পারে স্বপ্নদীপ। এরপর থেকেই ১০৪ নম্বর রুমের পড়ুয়া মনোতোষের গেস্ট হিসাবে ৬৮ নম্বর রুমে থাকার ব্যবস্থা হয় স্বপ্নদীপের। বুধবার রাতে এখানেই এ-১ ব্লকের ব্যালকনি থেকে পড়ে মৃত্যু হয় বগুলার স্বপ্নদীপের।
যাদবপুরে স্বপ্নদীপের মৃত্যুর পর থেকে উত্তাল যাদবপুর। শুধু যাদবপুর নয় স্বপ্নদীপের বাড়ি নদিয়ার বগুলাতেও তার মৃত্যুর প্রতিবাদ বিক্ষোভ চলছে। হোস্টেলে ব়্যাগিং হয়েছিল কিনা খতিয়ে দেখছে কলকাতা পুলিশ। স্বপ্নদীপের মোবাইল খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। ছেলের মৃত্যুতে হস্টেলের আবাসিকদের বিরুদ্ধে খুনের ধারা রুজু করেছেন বাবা রমাপ্রসাদ কুণ্ডু। তবে স্বপ্নদীপের বাবা নির্দিষ্ট করে কারোর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেননি।
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র স্বপ্নদীপ কুণ্ডুর মৃত্যু ঘিরে বেশ কিছু প্রশ্ন উঠছে। ইতিমধ্যেই, এই ঘটনায় ১০-১৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে পুলিশ। তবে কাউকে গ্রেফতার করা হয়নি। স্বপ্নদীপের বাবাকে ফোন করে খোঁজ নিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তবে এটা এই প্রথম আটক হল এই ঘটনায়।
স্বপ্নদীপের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে পড়ে যাওয়ার কারণেই তার মৃত্যু হয়েছে। ছাত্রের মাথার বাঁ দিকের হাড়ে চিড় ছিল। বাঁ দিকের পাঁজরের হাড়ও ভেঙে যায়। কোমরও ভেঙে গিয়েছিল। তবে স্বপ্নদীপের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল গুরুতর। সেটা কেন, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।