বৃহস্পতিবার জোড়াবাগান থানা এলাকার (Jorabagan Murder Case) সেন লেনে এক প্রৌঢ়কে খুনের ঘটনার তদন্তে নেমে মূল অভিযুক্তকে হাতেনাতে ধরল কলকাতা পুলিশ। ইতিমধ্যেই সেই অভিযুক্তকে আটক করেছে পুলিশ। ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই খুন হয়েছে বলে তদন্তে নেমে দাবি করেছে পুলিশ। প্রৌঢ়ের খুনের ঘটনায় শুক্রবার নদীয়া থেকে এক নাবালককে আটক করা হয়েছে।
এমনকি তাঁর কাছ থেকে লুট হওয়া গয়না ও প্রৌঢ়ের মোবাইল ফোনও পেয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ। কীভাবে পুলিশের হাতে ধরা পড়ল ধৃত? পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত প্রৌঢ় অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায়ের মোবাইল ফোনটির কোন খোঁজ মিলছিল না। সেই সূত্র ধরে তদন্ত এগোতেই পুলিশ জানতে পারে, ওই প্রৌঢ়ের মোবাইল ফোনটি কেউ ব্যবহার করার পাশাপাশি সেই ফোন থেকে অ্যাপ-ক্যাব বুক করে শেষে বাতিল করা হয়েছিল।
এরপর সব তথ্য নিয়ে তদন্ত যেতেই ওই নাবালকের বিষয়টি তদন্তে উঠে আসে। এরপর তদন্তকারীদের একটি দল ধৃতকে নদিয়ার চাপড়া এলাকা থেকে আটক করা হয়। কিন্তু হঠাৎ কেন এই ঘটনা ঘটাল ধৃত নাবালক? পুলিশ সূত্রের খবর অনুযায়ী, ধৃত নাবালকের মায়ের সঙ্গে প্রৌঢ়ের ঘনিষ্ঠতা ছিল। নাবালকটি ও তার মায়ের প্রৌঢ়ের বাড়িতে যাতায়াতের পাশাপাশি প্রৌঢ়েরও তাঁদের বাড়িতে যাতায়াত ছিল।
পুলিশ তদন্তে নেমে জানতে পেরেছে, নাবালকটির মায়ের ও ওই প্রৌঢ়ের কিছু ছবি ছিল নাবালকের কাছে। সম্ভবত সেই ছবিগুলো দিয়েই অভিজিতের কাছ থেকে টাকাপয়সা দাবি করা হলে সেই দাবি না মেটায় অভিজিতকে খুন করে সেই ধৃত। তবে শুধু খুনই নয়, খুন করার পরে ঘর থেকে লুটপাটও চালানো হয়েছে বলে অনুমান পুলিশের।
শুক্রবার রাতে সাংবাদিক বৈঠক করে এ সমস্ত কথাই জানান কলকাতা পুলিশের ডিসি (উত্তর) দীপক সরকার। পুলিশের তরফ থেকে জানানো হয়েছে, মৃত অভিজিত বন্দ্যোপাধ্যায় সেন লেনের ওই বাড়িতে চিলেকোঠার দু’টি ঘর নিয়ে একা থাকতেন। ওইদিন ঘটনা ঘটার পর দেখা যায় যে, চিলেকোঠার ঘরের সামনের দিকের দরজা ভিতর থেকে বন্ধ থাকলেও পিছনের দরজা খোলা ছিল। আর ওখানেই প্রৌঢ়ের দেহ মেলে।
তদন্তে নেমে এই নিয়ে তদন্তকারীদের সন্দেহ হওয়ায় এই ঘটনায় পরিচিত কেউ জড়িত রয়েছে বলে অনুমান করেছিল তাঁরা। এমনকি তদন্তের স্বার্থে ওই বাড়ির অন্য বাসিন্দা, প্রৌঢ়ের বোন, ভাগ্নে ও পরিচিত লোকজনকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছিলেন তদন্তকারীরা। প্রসঙ্গত, চিলেকোঠার ঘর থেকে ওই প্রৌঢ়ের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধারের পর খুনের অভিযোগ দায়ের করেছিল তাঁর পরিবার। এমনকি প্রৌঢ়ের দেহের ময়না তদন্তের রিপোর্ট দেখে প্রাথমিকভাবে পুলিশের মনে হয়েছিল তাঁকে খুন করা হয়েছে।
সেইসঙ্গে ওই রিপোর্টে প্রৌঢ়ের মাথায় ভারী কিছু দিয়ে আঘাতের হদিশ মেলার পাশাপাশি তাঁর মাথায় একাধিক আঘাতের চিহ্নও ছিল। তবে বর্তমানে এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ধৃতের খোঁজ মেলার পাশাপাশি সেই ধৃত নাবালক যে ওই প্রৌঢ়কে ভারী কিছু দিয়ে তাঁর মাথায় আঘাত করে খুন করেছিল তদন্তে নেমে সেই বিষয়েও নিশ্চিত হয়েছে পুলিশ।