শ্রীক্ষেত্র ও কালীক্ষেত্র—এ দুটি তীর্থস্থানের (Jagannath Dev) ভৌগোলিক দূরত্ব যেমন অনেকখানি, তেমনি দুই জায়গার আরাধনার পদ্ধতিতেও রয়েছে নানা পার্থক্য। তবে আশ্চর্যজনকভাবে, এই দুই তীর্থের মধ্যে এক গভীর সাদৃশ্যও অবলোকন করা যায়, যা আমাদের ভক্তিপথে এক নতুন অভিজ্ঞতা যোগ করে। এই সাদৃশ্যটি সবচেয়ে সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয় তাদের স্নানযাত্রার আঙ্গিকে।(Jagannath Dev)
পুরীধামের জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা(Jagannath Dev) আমাদের সকলেরই পরিচিত। প্রতি বছর জ্যৈষ্ঠ মাসের পূর্ণিমা তিথিতে এই মহতী উৎসব আয়োজন করা হয়। (Jagannath Dev) এটি শুধু একটি ধর্মীয় অনুষ্ঠান নয়, বরং জগন্নাথদেবের আবির্ভাব তিথি বা জন্মদিন হিসেবেও চিহ্নিত। এই দিনে, জগন্নাথদেব শ্রীমন্দিরের রত্নবেদী ছেড়ে(Jagannath Dev) স্নানবেদীতে প্রবেশ করেন এবং এখানে তাঁর স্নানযাত্রার অনুষ্ঠান হয়। পুরীতে এটি একটি বিশাল উৎসব হয়ে ওঠে, যেখানে লক্ষাধিক ভক্ত উপস্থিত থাকেন। স্নানযাত্রার দিনে, শ্রীমন্দিরের পরিবেশ এক আশ্চর্য রূপ নেয় এবং ভক্তরা বিশ্বাস করেন যে, এই দিনে স্নানযাত্রা দর্শন করলে তারা জীবনের চক্র থেকে মুক্তি লাভ করেন এবং এক ধরনের আত্মিক মুক্তি অর্জন করেন।(Jagannath Dev)
এখানে, শ্রীক্ষেত্র এবং কালীক্ষেত্রের মিলটি অত্যন্ত বিস্ময়কর। মহাতীর্থ কালীঘাটেও স্নানযাত্রা উপলক্ষে বিশেষ পুজো অনুষ্ঠিত হয়, যা (Jagannath Dev) সতীঅংশের স্নানের সঙ্গে যুক্ত। শক্তিপীঠের দেবী কালীকে স্নান করানো এবং তাঁকে শুদ্ধ করার এই প্রথা, জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রার সঙ্গে একটি অপূর্ব সাদৃশ্য তৈরি করে। কালীঘাটে সতীঅংশের স্নান অনুষ্ঠিত হয়, আর শ্রীক্ষেত্রের জগন্নাথদেবের স্নানও একজন মহাপুরুষের পূর্ণ স্নান উৎসবের অংশ।(Jagannath Dev)
শ্রীক্ষেত্র এবং কালীক্ষেত্রের মধ্যে এই মিলটি শুধু উপাসনার পদ্ধতি পর্যন্ত (Jagannath Dev) সীমাবদ্ধ নয়, বরং তাদের সন্নিধানে যে আধ্যাত্মিক অনুভূতি সৃষ্টি হয়, সেটিও গভীরভাবে একে অপরকে পরিপূরক করে। শাক্তপন্থী দর্শনে, দেবীর কাছে সশ্রদ্ধ প্রার্থনা, তাঁর প্রতি আনুগত্য, এবং সমস্ত প্রপঞ্চের ঊর্ধ্বে উঠে তাঁর চরণে আত্মসমর্পণই মূল উদ্দেশ্য। ঠিক তেমনই, জগন্নাথদেবের স্নানযাত্রা এবং তাঁর প্রতি ভক্তির সম্পর্কেও সেই আত্মসমর্পণ(Jagannath Dev) এবং আত্মশুদ্ধির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে।
জগন্নাথের স্নানযাত্রা যেমন কেবল এক উপাসনা নয়, (Jagannath Dev) তেমনি এটি জীবনের চক্র থেকে মুক্তির এক মাধ্যম। ভক্তরা বিশ্বাস করেন, এই দিনে যদি তারা স্নানযাত্রার পূর্ণ দর্শন লাভ করেন, তবে তাঁদের জীবনে সকল দুঃখ ও কষ্টের অবসান হয়। শ্রীক্ষেত্র ও কালিক্ষেত্রের মধ্যে এই মিলটি যেন এক চিরকালীন সত্যকে প্রকাশ করে, যা আমাদেরকে মনে করিয়ে দেয় যে, শেষপর্যন্ত সকল পথ এসে মিলিত হয় একমাত্র শুদ্ধ ও নিষ্কলঙ্ক চরণে।(Jagannath Dev)
এই দুই তীর্থের সাদৃশ্য, ভিন্নতার মধ্যে স্নানযাত্রার যে আধ্যাত্মিক পরিচয় আমরা দেখতে পাই, তা এক নতুন মাত্রা যোগ করে আমাদের ধর্মীয় দর্শনে। শ্রীক্ষেত্র এবং কালীক্ষেত্রের পূজা ও সাধনার মধ্যে যে অদৃশ্য যোগসূত্র রয়েছে, তা শুধু ভক্তিপথের দিকে আমাদের নজরই ফেরায় না, বরং জীবন, মৃত্যুর পরিপ্রেক্ষিতেও একটি গভীর উপলব্ধি তৈরি করে, যেখানে আমরা এক চিরন্তন সত্যের দিকে প্রবাহিত হয়ে যাই(Jagannath Dev)