যাদবপুরে ‘তালা ঝোলানোর’ ইঙ্গিত, পড়ুয়াদের জন্য কঠিন সময়সীমা

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও, ক্যাম্পাসে অস্থিরতা কাটেনি। সম্প্রতি, এক নতুন আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। পড়ুয়ারা পুনরায় সোচ্চার হয়ে উঠেছে, এবং তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—ক্যাম্পাসে…

Jadavpur University Students Call for Another Protest Rally

short-samachar

যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে এক সপ্তাহ পেরিয়ে গেলেও, ক্যাম্পাসে অস্থিরতা কাটেনি। সম্প্রতি, এক নতুন আন্দোলনের সূচনা হয়েছে। পড়ুয়ারা পুনরায় সোচ্চার হয়ে উঠেছে, এবং তাদের আন্দোলনের উদ্দেশ্য স্পষ্ট—ক্যাম্পাসে তৈরি হওয়া অচলাবস্থা নিরসন। বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তৃপক্ষের কাছে তারা তাগিদ দিচ্ছে যে, সোমবারের মধ্যে যদি অচলাবস্থার সমাধান না হয়, তাহলে তারা প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে এবং ক্যাম্পাসে ‘তালা ঝোলানোর’ হুঁশিয়ারি দিয়েছে।

   

এই সময়সীমা, অর্থাৎ সোমবার দুপুর ১টা, বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ তাতে পড়ুয়াদের দাবি হচ্ছে, ক্যাম্পাসের সকল অচলাবস্থা কাটাতে জরুরি ভিত্তিতে কর্মসমিতির বৈঠক ডাকা হোক। তাঁরা জানিয়ে দিয়েছেন, যদি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এই বিষয়ে কোন কার্যকর পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে সোমবার থেকেই ক্যাম্পাসে অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ শাটডাউন চালু হবে। তবে, আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা স্পষ্ট করে বলেছে যে, তাদের আন্দোলন পঠন-পাঠন ব্যবস্থায় কোনও প্রভাব ফেলবে না। তারা দাবি করেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনের যে দফতরগুলো পঠন-পাঠন সংক্রান্ত নয়, সেগুলিকেই বন্ধ করতে বাধ্য হবে তারা।

অবশ্য, এই আন্দোলনের পেছনে রয়েছে দীর্ঘদিনের অস্থিরতা। একদিকে ছাত্রভোটের দাবিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে তৈরি হওয়া স্ফুলিঙ্গ, অন্যদিকে সেখানকার অচলাবস্থা এবং পরিস্থিতির অবনতি—এই সবই এক নতুন দাবানলের জন্ম দিয়েছে। এখন, ছাত্ররা মনে করছে যে তাদের দাবির প্রতি কর্তৃপক্ষের যথাযথ মনোযোগ না দেওয়া হলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে।

তাদের দাবি, ক্যাম্পাসের ভিতরে যেভাবে এক অস্থির পরিবেশ তৈরি হয়েছে, তা শিক্ষার পরিবেশের পক্ষে ক্ষতিকর। অচলাবস্থা এবং রাজনৈতিক চাপ সৃষ্টি হওয়ার কারণে পড়ুয়াদের পঠন-পাঠনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। সেই কারণে তারা আশা করছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেবে, যাতে শিক্ষার পরিবেশ আবার স্বাভাবিক হতে পারে।

কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, কেন এই অস্থিরতা? যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদের মধ্যে কিছু সমস্যা বেড়ে গেছে, এবং সেগুলোর সমাধান না হওয়ায় অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। ছাত্রভোটের দাবি আর প্রশাসনিক অকার্যকরতা নিয়ে মিছিল, বিক্ষোভ—সবই এই অস্থিরতার পেছনে মূল কারণ। কিন্তু এটি এখন এক ধরনের দাবানল হিসেবে পরিণত হয়েছে, যার ফলে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা আরও বেড়েছে।

এখন, যদি প্রশাসন সময়মতো পদক্ষেপ না নেয়, তাহলে পড়ুয়াদের আন্দোলন আরও তীব্র হতে পারে। তাদের উদ্দেশ্য স্পষ্ট, তারা চায় যে কর্তৃপক্ষ দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ নিক, যাতে ক্যাম্পাসে শান্তি প্রতিষ্ঠিত হয়। এবং যদি কর্তৃপক্ষ এই দাবির প্রতি সাড়া না দেয়, তাহলে ক্যাম্পাসের অন্যান্য দফতর বন্ধ করার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পড়ুয়ারা।

এখানে সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হলো, এই অস্থিরতা কখনো কি শেষ হবে? প্রশাসন কি সময়মতো ছাত্রদের দাবি মেনে নেবে, নাকি আন্দোলন আরও বড় আকার ধারণ করবে? তা সময়ই বলে দেবে। তবে, বর্তমানে যাদবপুরে যা ঘটছে, তা কোনোভাবেই বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নতির পথে সহায়ক নয়।