দক্ষিণ–পূর্ব রেল (Indian Railways) খড়্গপুর ডিভিশনের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে যাত্রীদের মুখে ফিরল স্বস্তির হাসি। সম্প্রতি রেলের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে, দূরপাল্লার (Express Trains) একাধিক এক্সপ্রেস ও মেল ট্রেন এবার দাঁড়াবে খড়্গপুর ডিভিশনের ১৪টি স্টেশনে। এর ফলে প্রায় ১৩টি ট্রেনে (Indian Railways) ওঠানামার নতুন সুযোগ তৈরি হল এই অঞ্চলের যাত্রীদের জন্য।
কোন কোন স্টেশনে থামবে ট্রেন?
রেলের (Express Trains) নির্দেশিকা অনুযায়ী, খড়্গপুর ডিভিশনের বেলদা, পাঁশকুড়া, তমলুক, কাঁথি, সর্ডিহা-সহ বেশ কয়েকটি স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেনগুলির স্টপেজ বাড়ানো হয়েছে। এতদিন পর্যন্ত এইসব স্টেশনে বেশির ভাগ এক্সপ্রেস ট্রেন দাঁড়াত না। এর ফলে ওই এলাকার মানুষকে খড়্গপুর বা হাওড়ার মতো বড় স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরতে হত। যাতায়াতের অসুবিধা, সময় ও খরচ—সব কিছুর সঙ্গেই জড়িয়ে ছিল যাত্রীদের দৈনন্দিন ভোগান্তি। নতুন সিদ্ধান্ত কার্যকর হলে সেই ভোগান্তি অনেকটাই কমবে।
নিত্যযাত্রী থেকে ভ্রমণপিপাসু—সবার সুবিধা
শুধু অফিসগামী বা নিত্য কাজের জন্য যাতায়াতকারী মানুষই নন, রেলের এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন সাধারণ ভ্রমণপিপাসুরাও। এতদিন পর্যটনকেন্দ্র বা বাইরে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনেককে অন্য স্টেশনে গিয়ে ট্রেন ধরতে হত। এখন নিজের জেলার স্টেশন থেকেই দূরপাল্লার ট্রেনে উঠতে পারলে যাত্রা হবে অনেক সহজ। বিশেষ করে দুর্গাপুজো, শীতকাল বা গ্রীষ্মকালীন ছুটির মতো ভ্রমণ মরসুমে এই বাড়তি স্টপেজ অনেক যাত্রীকে স্বস্তি দেবে।
রেলের যুক্তি
রেল কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, যাত্রী চাহিদার কথা ভেবেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। গত কয়েক মাসে দক্ষিণ–পূর্ব রেলের খড়্গপুর ডিভিশনের বিভিন্ন স্টেশন থেকে দূরপাল্লার ট্রেনের স্টপেজ বাড়ানোর দাবি উঠেছিল। স্থানীয় মানুষ, যাত্রী সংগঠন এবং বিভিন্ন প্রশাসনিক মহল থেকেও চাপ তৈরি হয়। যাত্রী সুরাহার কথা মাথায় রেখেই অবশেষে রেল ১৩টি ট্রেনকে ১৪টি স্টেশনে থামানোর অনুমতি দিল।
অর্থনৈতিক দিক থেকেও বড় সুবিধা
যাত্রীসুবিধা ছাড়াও এই সিদ্ধান্ত অর্থনৈতিক দিক থেকেও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। ছোট ছোট স্টেশনে দূরপাল্লার ট্রেন থামলে স্থানীয় ব্যবসা-বাণিজ্য বাড়বে। ট্রেন ধরতে আসা যাত্রীদের জন্য দোকানপাট, খাবারের দোকান, ট্যাক্সি–অটো পরিষেবা আরও বেশি সক্রিয় হবে। এতে স্থানীয় অর্থনীতিতে গতি আসবে।
যাত্রীদের প্রতিক্রিয়া
এই বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের পর থেকেই সাধারণ যাত্রীদের(Indian Railways) মধ্যে উচ্ছ্বাস দেখা দিয়েছে। অনেকেই জানিয়েছেন, এতদিন ট্রেন ধরতে অতিরিক্ত খরচ ও সময় নষ্ট হত। এখন নিজস্ব স্টেশন থেকেই দূরপাল্লার ট্রেনে উঠতে পারলে যাতায়াত আরও স্বচ্ছন্দ হবে। একজন নিত্যযাত্রী বলেন, “আগে প্রতিদিন পাঁশকুড়া থেকে হাওড়া যেতে আমাদের লোকাল ধরতে হত, তারপর এক্সপ্রেস। এখন সরাসরি এক্সপ্রেস ট্রেন থামলে অনেকটা সময় বাঁচবে।”
ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
রেল সূত্রে খবর, যদি এই বাড়তি স্টপেজে যাত্রী সাড়া ভালো মেলে, তবে ভবিষ্যতে আরও ট্রেনের ক্ষেত্রে একই রকম সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে। একই সঙ্গে ছোট স্টেশনের আধুনিকীকরণ ও যাত্রী পরিষেবার মানোন্নয়নেও জোর দিচ্ছে দক্ষিণ–পূর্ব রেল।