মমতার ধমকেই শোকজের উত্তর দিলেন হুমায়ুন

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শৃঙ্খলা রক্ষার কঠোর মনোভাব আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে (Humayun Kabir) শোকজ (show cause) করার পর তিনি দ্রুত…

Humayun Kabir On Babri Masjid Claim For The Construction Of A New Babri Masjid In West Bengal

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের শৃঙ্খলা রক্ষার কঠোর মনোভাব আরও একবার স্পষ্ট হয়ে উঠল। ভরতপুরের তৃণমূল বিধায়ক হুমায়ুন কবীরকে (Humayun Kabir) শোকজ (show cause) করার পর তিনি দ্রুত তার উত্তর জমা দিয়েছেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন। গত সোমবার কালীঘাটে মমতার (Mamata) নেতৃত্বে দলের জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে দলের শৃঙ্খলা রক্ষায় একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেদিনই, তার পরের দিন, বিধায়ক হুমায়ুন কবীর দলের নির্দেশ উপেক্ষা করে কিছু বিতর্কিত মন্তব্য করেন। তার এই মন্তব্য দলের মধ্যে অস্বস্তি তৈরি করে এবং দলের শৃঙ্খলারক্ষা কমিটির কাছে বিষয়টি ওঠে আসে।

বুধবারই তাকে শোকজ করা হয় এবং তিন দিনের মধ্যে তার জবাব জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। শোকজের পর পরই হুমায়ুন বিধানসভার অধিবেশনে অংশগ্রহণ করতে আসেন। অধিবেশন শেষে যখন দলের বিধায়করা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে দেখা করতে যান, তখন প্রথমে হুমায়ুনকে সেখানে দেখা যায়নি। তবে শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পরে তাকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরাসরি হুমায়ুনকে ধমক দিয়ে বলেন, ‘‘তোমাকে অনেক বার বলেছি, দলীয় বিষয়ে শুধু দলের অন্দরেই কথা বলো। তাহলে কেন সর্বত্র এত কথা বললে?’’ এরপর তিনি তড়িঘড়ি শোকজের উত্তর জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন এবং বলেন, ‘‘তোমার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হবে, তা আমি দেখবো।’’

   

মুখ্যমন্ত্রীর এই তীব্র সতর্কবার্তার পরই হুমায়ুন দ্রুত শোকজের উত্তর দেন। তিনি জানান, তার বক্তব্যের জন্য যদি কেউ কষ্ট পেয়ে থাকেন তবে তিনি আন্তরিকভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করছেন। তিনি আরও বলেন, ‘‘বারবার কিছু বলতে চেয়েও সেটা কার্যকর হয়নি, আর হতাশা থেকেই এমন মন্তব্য করেছি।’’

এই ঘটনায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কঠোর পদক্ষেপ দলের শৃঙ্খলার প্রতি তার অবিচল মনোভাবকে আরও পরিষ্কার করেছে। দলের মধ্যে শৃঙ্খলা ভঙ্গের বিষয়টি তিনি কখনও সহ্য করবেন না, তা এই পদক্ষেপের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়েছে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতাকর্মীদের এখন থেকে আরও সতর্ক থাকতে হবে এবং দলীয় নির্দেশ মেনে চলতে হবে, যাতে ভবিষ্যতে এই ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়।

মমতার শৃঙ্খলা রক্ষার এই কঠোর মনোভাব দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বার্তা, যাতে ভবিষ্যতে শৃঙ্খলার বিরুদ্ধে কোনও ধরনের গাফিলতি না ঘটে। দলের অন্দরেই অভিযোগ বা সমালোচনা রাখার নির্দেশ দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আবারও প্রমাণ করেছেন, দলের ভিতরে কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা তিনি বরদাস্ত করবেন না। তৃণমূলের শৃঙ্খলা রক্ষা কমিটি, দলের শীর্ষ নেতৃত্ব এবং বিধায়করা এই সিদ্ধান্তের পর আরও সতর্ক হবেন এবং দলীয় শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সচেষ্ট হবেন।

এছাড়া, দলের অন্যান্য নেতাকর্মীদের জন্যও এটি একটি সতর্কবার্তা, যাতে তারা দলের মধ্যে কোনও বিতর্ক বা বিভাজন সৃষ্টি না করেন এবং দলের স্বার্থে কাজ করেন। হুমায়ুন কবীরের শোকজের উত্তর এবং ক্ষমা প্রার্থনা দলীয় শৃঙ্খলা রক্ষায় মমতার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানিয়ে, আগামীদিনে তৃণমূল কংগ্রেসের জন্য এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে মনে করা হচ্ছে।