সম্প্রতি তৃণমূল কংগ্রেস বিধায়ক হুমায়ূন কবীর (Humayun Kabir On Babri Masjid) পশ্চিমবঙ্গের মুর্শিদাবাদ জেলায় নতুন বাবরি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদ জেলার বেলডাঙা এলাকায় নতুন বাবরি মসজিদ প্রতিষ্ঠা করা হবে। তার দাবি, ২০২৫ সালের ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে যাবে। হুমায়ূন কবীর আরও জানান, এই মসজিদ নির্মাণের জন্য অর্থের কোনো অভাব হবে না এবং তিনি নিজে এক কোটি টাকা দান করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
হুমায়ূন কবীরের এই মন্তব্য রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। হুমায়ূন কবীর জানিয়েছেন, “পশ্চিমবঙ্গে মুসলমানদের সংখ্যা ৩৪ শতাংশ। তাদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে এবং তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আমি এই প্রকল্প পেশ করছি। বেলডাঙা এলাকায় এবং বেহরামপুর অঞ্চলের মাদ্রাসা পরিচালকদের নিয়ে একটি বাবরি মসজিদ ট্রাস্ট গঠন করা হবে। এই ট্রাস্ট ২০২৫ সালের ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে বেলডাঙার দুই একর জমিতে বাবরি মসজিদ নির্মাণ করবে।”
সম্পত্তির সেলফ-অ্যাসেসমেন্ট না করলে ৩০% পেনাল্টি, রাজ্য সরকারের নতুন নিয়ম
তিনি আরও জানান, “বাংলার মুসলমানরা মাথা উঁচু করে বাঁচতে চায় এবং তাদের ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠিত হবে। সেই লক্ষ্যেই বেলডাঙায় বাবরি মসজিদ নির্মাণ করা হবে। আমি নিজে এক কোটি টাকা দান করব এবং ২০২৫ সালের ৬ ডিসেম্বরের মধ্যে এই মসজিদ নির্মাণের কাজ শুরু হবে।” উল্লেখ্য, হুমায়ূন কবীর এর আগে বিভিন্ন সময় বিতর্কিত মন্তব্য করে খবরের শিরোনামে এসেছেন।
মুর্শিদাবাদ জেলার ভারতপুর বিধানসভা কেন্দ্রের বিধায়ক হুমায়ূন কবীর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম মন্ত্রিসভায় মন্ত্রী ছিলেন। তিনি প্রথম ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেসের টিকিটে রেজিনগর থেকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছিলেন। সম্প্রতি, হুমায়ূন কবীর এক নির্বাচন প্রচারে বলেছিলেন যে, যদি তিনি নির্বাচনে জিতেন তবে তিনি দুই ঘণ্টার মধ্যে বিজেপি সমর্থকদের কাটিয়ে ভাগীরথী নদীতে ফেলে দেবেন।
কাঁথির সমবায় ব্যাঙ্কের ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা, নির্দেশ সুপ্রিম কোর্টের
এছাড়াও তিনি মুর্শিদাবাদ জেলার জনসংখ্যা নিয়ে মন্তব্য করে বলেন, “মুর্শিদাবাদে ৭০ শতাংশ মুসলমান বাস করে।” তাঁর এই মন্তব্যগুলি দেশজুড়ে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে এবং সেইসঙ্গে রাজনৈতিক মহলে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে। হুমায়ূন কবীরের এই ঘোষণা রাজনৈতিক এবং সামাজিক মহলে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকেই তার এই মন্তব্যকে উত্তেজক এবং সংবেদনশীল বলে উল্লেখ করেছেন।
তার দাবি, বাবরি মসজিদ পুনর্নির্মাণ পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সম্প্রদায়ের অধিকার প্রতিষ্ঠার একটি পদক্ষেপ হবে। তবে তার এই পদক্ষেপটি কিছু রাজনৈতিক দল এবং বিশ্লেষকদের মতে, রাজ্যে অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে এবং ধর্মীয় সম্প্রীতি নষ্ট হতে পারে। এদিকে বিজেপির পক্ষ থেকেও এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনা করা হয়েছে। বিজেপি নেতারাও মনে করেন, এটি পশ্চিমবঙ্গের ধর্মীয় ঐক্য এবং সম্প্রীতির জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। হুমায়ূন কবীরের দাবির পরে রাজ্যে এক নতুন রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে।
সোমবার দিল্লিতে বঙ্গ বিজেপির সাংসদদের নিয়ে বৈঠক সুনীল বানসলের
তার বক্তব্যের প্রভাব শুধুমাত্র পশ্চিমবঙ্গের মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে না বরং এটি ভারতের রাজনৈতিক পরিবেশকেও প্রভাবিত করবে। মসজিদ নির্মাণের ঘোষণার মাধ্যমে হুমায়ূন কবীর ধর্মীয় অধিকার প্রতিষ্ঠার যে বার্তা দিতে চেয়েছেন তা রাজ্যে এক নতুন রাজনৈতিক বিপর্যয়ের সূচনা করতে পারে। এখন দেখার বিষয় হল, রাজ্য সরকার এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দল এই বিষয়টিকে কীভাবে গ্রহণ করে এবং রাজ্যে ধর্মীয় সম্প্রীতি বজায় রাখার জন্য আগামী দিনে তারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে চলেছে।
আলুর দাম আকাশছোঁয়া, চোরা পথে ঝাড়খণ্ডে পাচার, পুরুলিয়ায় গ্রেফতার ৭ জন