কলকাতার নিমতলা ঘাট সংলগ্ন মহর্ষি দেবেন্দ্র রোডে শুক্রবার মধ্যরাতে ঘটে গেল এক ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড (Nimtala Fire)। বিশালাকার কাঠের গুদামে রাত দেড়টা নাগাদ আগুন লেগে যায় এবং আগুন (Nimtala Fire) ক্রমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে আগুনের ফুলকি দেখতে পেয়ে দমকল বিভাগে খবর দেন। দমকলের মোট ২০টি ইঞ্জিন ঘটনাস্থলে এসে রাত থেকেই আগুন নেভানোর কাজে লেগে যায়।
দমকলের তৎপরতার (Nimtala Fire) পাশাপাশি আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে আসে রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু নিজে। মধ্যরাতে খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌঁছে তিনি পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করেন এবং সংশ্লিষ্ট দমকল কর্মীদের উৎসাহ দেন। যদিও রাত পেরিয়ে ভোর হয়েছে, এখনও আগুন সম্পূর্ণরূপে নিয়ন্ত্রণে আনা যায়নি। কাঠের গোলার বিশাল পরিমাণ কাঠ এবং অন্যান্য দাহ্য পদার্থ থাকার কারণে ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা আগুন এখনও দমকলের বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে রয়েছে।
ঘটনাস্থলটি মূলত একটি বড় কাঠের গুদাম, যেখানে শ্রমিকরা বসবাস করতেন। গুদাম থেকে বিস্ফোরণের মতো শব্দ শুনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী, আগুন লাগার (Nimtala Fire) কিছুক্ষণ পরেই একাধিক বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়, যা পরবর্তী সময়ে আগুনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়। দমকল কর্মীরা যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে আগুন (Nimtala Fire) নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন, তবে গুদামের ভিতরের কাঠের স্তূপ এবং দাহ্য পদার্থের কারণে আগুন সম্পূর্ণরূপে নেভানো কঠিন হয়ে পড়ছে।
আগুনের (Nimtala Fire) লেলিহান শিখা দ্রুত আশেপাশের বেশ কয়েকটি বাড়িতে ছড়িয়ে পড়ে। এর ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। অনেকেই তাদের বাড়িঘর ছেড়ে আশ্রয় নিতে বাধ্য হন। দমকল বিভাগের পাশাপাশি ডিএমজি (ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট গ্রুপ) কর্মীরাও ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে দ্রুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাজ শুরু করেন।
আশেপাশের এলাকায় ভয়াবহ আগুনের শিখা এবং ধোঁয়ার কুণ্ডলী আকাশে ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্থানীয় পরিবেশ দূষিত হয়ে ওঠে এবং অনেক বাসিন্দা শ্বাসকষ্টজনিত সমস্যার সম্মুখীন হন। দমকল বিভাগের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, আগুন নিয়ন্ত্রণে আসতে আরও কিছু সময় লাগতে পারে। বিশেষ করে কাঠের গুদামের ভিতরে থাকা দাহ্য পদার্থের কারণে আগুনের মাত্রা বেড়ে গিয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আগুনের সূত্রপাত কীভাবে হয়েছে, তা এখনও স্পষ্ট নয়। কেউ কেউ সন্দেহ করছেন, গুদামের ভিতরে হয়তো কোনো বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে। আবার অনেকেই মনে করছেন, হয়তো কোনো কারণে সেখানে দাহ্য পদার্থের বিস্ফোরণ হয়েছে। ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে তদন্ত শুরু করেছে দমকল বিভাগ এবং পুলিশ।
আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে দমকল কর্মীরা নিরলস পরিশ্রম করছেন। অনেকেই নিজেদের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাঠের স্তূপে প্রবেশ করছেন এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করছেন। রাজ্যের দমকলমন্ত্রী সুজিত বসু স্থানীয় বাসিন্দাদের আশ্বস্ত করেছেন যে, প্রশাসন দ্রুত এই পরিস্থিতি মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে এবং আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সব ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।
স্থানীয় এলাকায় বেশ কিছু বাড়ি আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দাদের দাবি অনুযায়ী, এই ধরনের একটি বড় গুদামের আশেপাশে এত বেশি কাঠ এবং দাহ্য পদার্থ মজুত থাকলে তা সাধারণ মানুষের জন্য বিপজ্জনক হতে পারে। প্রশাসনের কাছে তারা ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে নিরাপত্তার বিষয়টি আরও জোরদার করার দাবি জানিয়েছেন।
বর্তমানে দমকল কর্মীরা ধিকিধিকি জ্বলতে থাকা আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপ নিচ্ছেন। গুদামের ভেতরে থাকা কাঠের স্তূপ থেকে আগুন পুরোপুরি নিভে না যাওয়া পর্যন্ত পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়া সম্ভব নয়। এই ঘটনায় এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবে সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক।
শেষমেশ এই ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ফলে মানুষের জীবনে এক ভীতিকর অভিজ্ঞতার সৃষ্টি হয়েছে। সাধারণ মানুষ প্রশাসনের প্রতি ভরসা রেখেছেন এবং আশা করছেন, দ্রুত এই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হবে এবং আগুন পুরোপুরি নিভে যাবে।