হাওড়ায় উদ্ধার হল বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক চিনা রসুন

হাওড়া পুলিশ বুধবার একটি বড় অভিযান চালিয়ে ২৫৪ বস্তা চিনা রসুন (Chinese garlic) বাজেয়াপ্ত করেছে। গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে সাঁকরাইল থানার পুলিশ ধুলাগড় ট্রাক…

Howrah Police Seizes Banned Chinese Garlic in Major Bust

হাওড়া পুলিশ বুধবার একটি বড় অভিযান চালিয়ে ২৫৪ বস্তা চিনা রসুন (Chinese garlic) বাজেয়াপ্ত করেছে। গোপন সূত্রের মাধ্যমে খবর পেয়ে সাঁকরাইল থানার পুলিশ ধুলাগড় ট্রাক টার্মিনালে অভিযান শুরু করে এবং সেখানে এক বিশাল পরিমাণ চিনা রসুন (Chinese garlic) উদ্ধার করে। উদ্ধার করা রসুনের মোট বাজারমূল্য প্রায় ৭ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা বলে পুলিশ সূত্রে জানা গেছে।

পুলিশের তথ্য অনুযায়ী, প্রতিটি বস্তায় প্রায় ১৮ কেজি চিনা রসুন (Chinese garlic) ছিল। এই রসুনগুলি দীর্ঘদিন ধরে হাওড়া অঞ্চলে বিভিন্ন ব্যবসায়ী এবং বাজারে বিক্রি হওয়ার উদ্দেশ্যে নিয়ে আসা হয়েছিল। উল্লেখযোগ্যভাবে, ভারত সরকার ২০১৪ সালে চিনা রসুন আমদানি নিষিদ্ধ করেছে, কারণ এতে ছত্রাকের সংক্রমণ এবং বিষাক্ত রাসায়নিকের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

   

ভারত সরকার চিনা রসুন আমদানি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল ২০১৪ সালে, কারণ পরীক্ষায় দেখা গিয়েছিল যে এই রসুনে একটি বিপজ্জনক রাসায়নিক পদার্থ মিথাইল ব্রোমাইডের উপস্থিতি রয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই রাসায়নিকটি রসুনকে ফাঙ্গাস থেকে রক্ষা করতে ব্যবহার করা হত, তবে এটি মানুষের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর। মিথাইল ব্রোমাইড একটি বিষাক্ত রাসায়নিক যা রসুনের সঙ্গে মিশিয়ে ব্যবহার করা হত, যাতে রসুনে কোনো ধরনের ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাকের সংক্রমণ না ঘটে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এই রাসায়নিকটি যদি শরীরে প্রবাহিত হয়, তবে তা লিভার ও কিডনি বিকল করতে পারে এবং স্নায়ুর সমস্যাও তৈরি করতে পারে। এর পাশাপাশি, নিয়মিত মিথাইল ব্রোমাইড খাওয়া হলে মানুষের দৃষ্টিশক্তি নষ্ট হতে পারে এবং অন্যান্য মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে।
এই অভিযানে সাঁকরাইল থানার পুলিশ এক গোডাউন ম্যানেজার, উপেন্দ্র যাদবকে গ্রেফতার করেছে। পুলিশের দাবি, উপেন্দ্র যাদবই এই নিষিদ্ধ চিনা রসুনের দোকান এবং সাপ্লাই চ্যানেলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির অধীনে অপরিহার্য পণ্য আইন অনুযায়ী মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে উঠে এসেছে যে, উপেন্দ্র যাদব দীর্ঘদিন ধরে এই নিষিদ্ধ চিনা রসুনের ব্যবসা করছিল এবং অবৈধভাবে এই রসুন বাজারে আনা-নেওয়া করছিল।

এই ঘটনায় হাওড়া পুলিশ ব্যাপক অভিযান চালিয়েছে এবং আরও তদন্তের জন্য সম্ভাব্য ব্যবসায়ীদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে শুরু করেছে। পুলিশ জানিয়েছে, এই ধরনের অবৈধ ব্যবসা রোধে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে এবং যারা এই ধরনের নিষিদ্ধ পণ্য আমদানি করছে তাদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

এছাড়া, স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা জনগণকে সতর্ক করেছেন যে, এই ধরনের চিনা রসুন বা যেকোনো বিদেশী পণ্য যা সরকার অনুমোদন করেনি, তা কখনও কিনবেন না এবং ব্যবহারের জন্য গ্রহণ করবেন না। এটা শুধু ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য নয়, দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার জন্যও বিপজ্জনক।