বৃহস্পতিবার সোনার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের শুল্ক নীতির অস্থিরতা এবং নিরাপদ আশ্রয়ের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে হয়েছে। পাশাপাশি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতির পরিসংখ্যান পূর্বাভাসের চেয়ে কম হওয়ায় সোনার দাম আরও বেড়ে গেছে, যা সুদের হার কমানোর প্রত্যাশা জোরালো করেছে। এই পরিস্থিতি সোনার বাজারে আরও অস্থিরতা সৃষ্টি করেছে, এবং বিনিয়োগকারীরা নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ঝুঁকছেন।
সোনার দাম সাধারণত অর্থনৈতিক অস্থিরতা, রাজনৈতিক অস্থিরতা, এবং উচ্চ মূল্যস্ফীতির সময়ে বৃদ্ধি পায়। বর্তমানে, বিশ্ব অর্থনীতি এবং মার্কিন শুল্ক নীতির অস্থিরতা সোনার দাম বৃদ্ধির অন্যতম প্রধান কারণ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলমান বাণিজ্যিক উত্তেজনা এবং শুল্ক সম্পর্কিত আলোচনা এই অস্থিরতার সৃষ্টি করেছে। যখন এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়, তখন সোনার মতো নিরাপদ বিনিয়োগের দিকে বিনিয়োগকারীদের প্রবণতা বাড়ে, যার ফলে সোনার দাম বৃদ্ধি পায়।
এরপর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গত মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশিত হয়, যা প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম ছিল। মূলত, বাজারে পূর্বাভাস ছিল যে, মূল্যস্ফীতি আবারও বেড়ে যাবে, কিন্তু তার পরিবর্তে এটি কমেছে। এই পরিস্থিতি বিশ্বব্যাপী অর্থনীতির জন্য একটি ইতিবাচক সংকেত হিসেবে দেখা হচ্ছে। এতে করে সুদের হার কমানোর সম্ভাবনা আরও জোরালো হয়ে উঠেছে। সুদের হার কমানোর ঘোষণা দিলে, এর ফলে সোনার মতো মুলতুবি সম্পদের প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বৃদ্ধি পাবে, কারণ সুদের হার কমালে সঞ্চয়ের ওপর লাভ কমে যায় এবং সোনার মতো নিরাপদ বিনিয়োগে লাভের সম্ভাবনা বাড়ে। সোনার দাম বৃদ্ধি পাওয়ার আরও একটি কারণ হলো যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল রিজার্ভের (Fed) মনিটারি পলিসি। ফেড তার সুদের হার বাড়ানোর পরিকল্পনা থেকে সরে এসেছে এবং এটি মার্কিন অর্থনীতিতে তার প্রভাব বিস্তার করছে। এই অবস্থায় সোনার দাম আরো বাড়তে পারে, কারণ সুদের হার কমানোর পরিমাণ সোনার বিনিয়োগে একটি বড় সহায়ক হিসেবে কাজ করবে। তাছাড়া, আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার চাহিদা বাড়ছে, যা আরও দাম বাড়াতে সহায়ক হচ্ছে।
বিশ্বব্যাপী অন্যান্য দেশেরও পরিস্থিতি বেশ উদ্বেগজনক। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং অন্যান্য দেশগুলোও শুল্ক নীতি এবং অর্থনৈতিক অস্থিরতা নিয়ে চিন্তিত। সোনার দাম তাদের জন্যও নিরাপদ আশ্রয়ের উপায় হয়ে উঠেছে, যার ফলে সোনার চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সোনার দাম বৃদ্ধির এই ধারা যদি অব্যাহত থাকে, তবে এটি বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধারের জন্য একটি সংকেত হতে পারে। তবে, ভবিষ্যতে কি পরিস্থিতি সৃষ্টি হবে, তা বলাটা এখনই কঠিন। তবে বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী সোনার দাম বৃদ্ধি পেতে পারে, এবং বিনিয়োগকারীরা সোনায় বিনিয়োগের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠতে পারেন।