কলকাতা, ৩০ সেপ্টেম্বর: শারদোৎসব মানেই বাঙালির এক অদ্ভুত আবেগ, যার সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে খাবার। আর খাবারের তালিকায় যদি থাকে ইলিশ মাছ (Hilsa Fish) , তাহলে তো কথাই নেই! পুজোর ক’টা দিন বাঙালির প্লেট জুড়ে মাছে-ভাতে উৎসব চলে। আর যদি সেই ইলিশ আসে পদ্মার বুক থেকে, তাহলে তা হয়ে ওঠে একপ্রকার আবেগের পর্যায়ে। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। পুজোর আগে এবং পুজোর মধ্যেই বাংলাদেশ থেকে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে শতাধিক মেট্রিক টন ইলিশ — বাঙালির ষোলোকলা যেন পূর্ণ।
বাংলাদেশ সরকার গত ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ভারতে ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দেয়। এই বছর মোট ৩ হাজার ৯৫০ মেট্রিক টন ইলিশ রপ্তানির কোটা নির্ধারণ করেছে বাংলাদেশ। সেই হিসাবেই শুরু হয় ইলিশের রপ্তানি প্রক্রিয়া, যার সিংহভাগই এপারে পৌঁছায় বেনাপোল স্থলবন্দর দিয়ে।
সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ১৬ সেপ্টেম্বর থেকে ২৫ সেপ্টেম্বর — এই ১০ দিনের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে বেনাপোল বন্দর হয়ে ৮১.৪৩৮ মেট্রিক টন ইলিশ পশ্চিমবঙ্গে এসেছে। এরপরের ক’দিনে আরও ইলিশ এসে পৌঁছায়, ফলে পুজোর সময় পর্যন্ত মোট ১০৩ মেট্রিক টন ইলিশ এদেশে ঢুকেছে।
বিধানসভা নির্বাচনের চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ করল কমিশন
এ বছর বাংলাদেশের ইলিশ রপ্তানিকারক প্রতিষ্ঠানগুলি প্রতিটি চালানের সঙ্গে গড় ওজন, মান এবং স্বাস্থ্য সংক্রান্ত শংসাপত্র দিচ্ছে। রপ্তানি করা ইলিশের অধিকাংশই ৮০০ গ্রাম থেকে ১.২ কেজি ওজনের, মানেও বেশ ভালো। ফলে কলকাতা, হাওড়া, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, নদিয়া, বর্ধমান সহ বিভিন্ন জেলার বাজারে যথেষ্ট চাহিদা তৈরি হয়েছে।
পুজোয় অনেকে খাসি বা মাটনের দিকে ঝোঁকেন ঠিকই, কিন্তু একটা বড় অংশের বাঙালির জন্য নবমী বা দশমীর পাতে যদি ইলিশ না থাকে, তাহলে উৎসবটা কিছুটা অপূর্ণ মনে হয়। আর সেই ইলিশ যদি হয় পদ্মার রুপোলি শস্য, তাহলে তো যেন দেবী দুর্গারই আশীর্বাদ। কলকাতার গড়িয়াহাট, মানিকতলা, নিউ মার্কেট, কিংবা কোলাঘাট, বহড়ুয়া বা বারাসাতের বাজার — সব জায়গাতেই এখন পদ্মার ইলিশের জোয়ার।