বাঙালির কাছে এক আবেগ হল ইলিশ (HIilsa) । ছোট থেকে বড় সকলের পাতে যদি পরে ইলিশ তাহলে তো আর কোনও কথাই নেই। বিশেষ করে পুজোর আগে প্রতিবছরই পশ্চিমবঙ্গের বাজারে বাংলাদেশি ইলিশ নিয়ে ব্যাপক আগ্রহ দেখা যায়। সেই ধারাবাহিকতায় ২০২৫ সালেও ইলিশপ্রেমীদের জন্য এক বড়সড় ঘোষণা এসেছিল—বাংলাদেশ সরকার এ বছর ১২০০ টন ইলিশ ভারতে রপ্তানির অনুমতি দিয়েছে।
কিন্তু বাস্তবে সেই আশায় কার্যত জল ঢেলে দিয়েছে রপ্তানির পরিসংখ্যান। সময়সীমা শেষ হওয়ার পর দেখা গেছে, মাত্র ১৪৫ টন ইলিশই ভারতে এসেছে, যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে এসেছে ১০৬ টন ৩৪ কেজি এবং ত্রিপুরায় এসেছে ৩৯ টন।
এই তথ্য নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশের সরকারি সূত্র। অন্যদিকে পশ্চিমবঙ্গের আমদানিকারক সংস্থাগুলিও জানিয়েছে, ইলিশ এলেও তা ছিল সীমিত এবং দামের কারণে সাধারণ মানুষের নাগালের বাইরে। গত বছর যেখানে ভারতে প্রায় ৫৩২ টন ইলিশ রপ্তানি হয়েছিল, সেখানে এ বছরের পরিসংখ্যান তুলনামূলকভাবে উদ্বেগজনক।
বাংলাদেশের বর্তমান মুহাম্মদ ইউনূস নেতৃত্বাধীন সরকার সেপ্টেম্বরের শুরুতে ঘোষণা করে যে, পুজোর মরসুমে ভারতের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তারা ১২০০ টন ইলিশ রপ্তানির অনুমতি দিচ্ছে। কিন্তু অনুমতি থাকলেও বাস্তবে বাংলাদেশি ইলিশের সরবরাহ লক্ষণীয়ভাবে কম ছিল।
বাংলাদেশের বেসরকারি রপ্তানিকারক ও মাছ ব্যবসায়ী মহল বলছে, দেশের অভ্যন্তরে ইলিশের জোগান এ বছর তুলনামূলকভাবে কম। আবার অন্যদিকে, দেশের বাজারে ইলিশের দামও ছিল চড়া। ফলে রপ্তানিতে আগ্রহ কম দেখা যায় অনেক রপ্তানিকারকের মধ্যে।
ভারতে বিশেষত পশ্চিমবঙ্গে দুর্গাপুজোর আগে ইলিশের চাহিদা তুঙ্গে থাকে। ইলিশপ্রেমীরা বাংলাদেশি ইলিশের স্বাদ নিতে উন্মুখ থাকেন। কিন্তু সরবরাহ কম থাকায় এই বছর বাজারে ইলিশের দাম ছিল রেকর্ড পরিমাণে বেশি। কোথাও কোথাও এক কেজি ইলিশের দাম ২০০০ টাকা ছাড়িয়ে যায়। এক আমদানিকারক সংস্থা জানিয়েছে, ‘‘বাংলাদেশে ইলিশের দাম এতটাই বেশি ছিল যে, ভারতীয় ক্রেতাদের জন্য তা আমদানি করে বিক্রি করা লাভজনক হচ্ছিল না। শুধু প্রতীকী রপ্তানি হয়েছে বলা যায়।’’