ফের হাইকোর্টে চরম ভর্ৎসনা রাজ্যের, নেপথ্যে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ

ফের একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে মুখ পড়ল রাজ্যের। এবার চুক্তিভিত্তিক কর্মী (Job) নিয়োগ নিয়ে আদালতের সমালোচনার মুখোমুখি হল মমতার সরকার। এদিন হাইকোর্টের তরফ থেকে…

ফের একটি মামলার শুনানিতে কলকাতা হাইকোর্টে মুখ পড়ল রাজ্যের। এবার চুক্তিভিত্তিক কর্মী (Job) নিয়োগ নিয়ে আদালতের সমালোচনার মুখোমুখি হল মমতার সরকার। এদিন হাইকোর্টের তরফ থেকে স্পষ্ট জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু তা নিয়মিত ভাবে আর করা যায় না। মঙ্গলবার অর্থাৎ আজ এই বিষয়ে কী বলেছে কলকাতা হাইকোর্ট?

মঙ্গলবার একটি মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ স্পষ্ট জানিয়েছেন, ব্যতিক্রমী পরিস্থিতিতে চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ করা যেতে পারে। কিন্তু তা নিয়মিত ভাবে করা যায় না। এখানে তো পুলিশও নিয়োগ হয় চুক্তিতে। দেশের আর কোথাও তো এমন হয় না। মঙ্গলবারের শুনানিতে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে প্রধান বিচারপতি প্রশ্ন তুলে বলেন, “যাঁরা ৩-৪ ঘণ্টার জন্য কাজ করেন, তাঁদেরকে না হয় চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করলেন।

   

তা বলে সব কর্মী কীভাবে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ করা হচ্ছে? আদালতের কাছে এটা বোধগম্য নয়। এখানে পুলিশও চুক্তির ভিত্তিতে নিয়োগ করা হয়। সকাল থেকে কাজ করিয়ে ১৪ হাজার টাকা বেতন দেওয়ার জন্যই কি নিয়োগ? দেশের কোথাও আমি এমন দেখিনি।” সেইসঙ্গে এ দিনের শুনানিতে প্রধান বিচারপতি রাজ্যের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, “সর্বত্র কীভাবে চুক্তির ভিত্তিতে কর্মী নিয়োগ করা যেতে পারে? এমন জিনিস আমি আর কোথাও দেখিনি। চুক্তিতে নিয়োগ হলে কর্মীরা দায়িত্বশীল হবেন কীভাবে?

আদালতের কর্মী যদি চুক্তিভিত্তিক হন, তবে একটি ফাইল হারিয়ে গেলে তার দায় তিনি নেবেন কেন? তখন দায়িত্ব কে নেবেন?” প্রসঙ্গত, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলায় চুক্তির ভিত্তিতে গত মার্চ মাসে আদালতে কর্মী নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল রাজ্য। রাজ্যের ওই বিজ্ঞপ্তিকে চ্যালেঞ্জ করে মামলা দায়ের হয়েছিল কলকাতা হাইকোর্টে। এরপর বিচারপতি অরিন্দম মুখোপাধ্যায়ের একক বেঞ্চ ওই নিয়োগের উপর স্থগিতাদেশ জারি করে। পরে ওই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ করে ডিভিশন বেঞ্চের দ্বারস্থ হয় রাজ্য সরকার।

এবার হাইকোর্টে বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যের আবেদন খারিজ করে দিয়ে জানিয়ে দেয় যে, ওই নিয়োগ প্রক্রিয়ার উপর সিঙ্গল বেঞ্চ যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল তা এখন বহাল থাকবে। এদিন চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগ সংক্রান্ত মামলার শুনানিতে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ কার্যত ভর্ৎসনা করল রাজ্য সরকারকে।