কলকাতার রাস্তায় নীল-সাদা রঙ নিয়ে চলমান বিতর্কের পর, হাইকোর্ট রাজ্য সরকারকে একটি হলফনামা পেশ করতে নির্দেশ দিয়েছে। এই হলফনামাটি পেশ করতে রাজ্যকে তিন সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে। ২০১১ সালে তৃণমূল কংগ্রেস ক্ষমতায় আসার পর থেকেই রাজ্যে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, সেতু, সড়ক, এবং ভবনে নীল-সাদা রঙের ব্যবহার বাড়ে। সম্প্রতি, এই রঙের ব্যবহার নিয়ে একটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি চলছিল হাইকোর্টে। মামলার পরিপ্রেক্ষিতে, ২৭ ফেব্রুয়ারি আদালতের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম এবং বিচারপতি চৈতালি চট্টোপাধ্যায়ের ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যকে হলফনামা পেশের নির্দেশ দেয়। মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পাঁচ সপ্তাহ পরে। রাজ্য সরকারকে তিন সপ্তাহের মধ্যে হলফনামা জমা দিতে বলা হয়েছে এবং মামলাকারীকে তার জবাব দিতে দুই সপ্তাহ সময় দেওয়া হবে।
এদিকে, মামলার অভিযোগের মধ্যে অন্যতম ছিল যে কলকাতা বিমানবন্দর থেকে শহরে প্রবেশের সড়কগুলির গার্ডরেল এবং ডিভাইডারগুলো নীল-সাদা রঙ করার কারণে রাতের বেলায় পথ দুর্ঘটনা বাড়ছে। কারণ অন্ধকারে চালকদের জন্য ওই রঙ চিনতে অসুবিধা হয়। মামলা করা হয়েছিল কেন ভারতীয় রোড কংগ্রেসের নির্ধারিত সাদা, কালো এবং হলুদ রঙের পরিবর্তে নীল-সাদা রঙ ব্যবহার করা হচ্ছে। মামলাকারী দাবি করেন, যদি সড়কগুলোতে হলুদ বা সাদা-কালো রঙ ব্যবহার করা হতো, তাহলে চালকদের জন্য তা অনেক সুবিধাজনক হতো। এই মামলাটির শুনানি চলাকালে প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানম রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেলের উদ্দেশে মন্তব্য করেন, “ভাগ্যিস জলপাইগুড়ি সার্কিট বেঞ্চ হাইকোর্টের নজরদারিতে হচ্ছিল, না হলে ওখানেও তো আপনারা নীল-সাদা রঙ করে দিতেন!”
রাজ্য সরকার একাধিক স্থানে এই রঙ ব্যবহার করেছে, যার মধ্যে সেতু, রাস্তা, ডিভাইডার এবং ভবনগুলি উল্লেখযোগ্য। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রিয় রঙ হিসেবে পরিচিত এই নীল-সাদা রঙটি তার শাসনকালে ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয়েছে। যদিও, এটি ভারতীয় রোড কংগ্রেসের নিয়মবিধির সাথে অমিল রয়েছে, যেখানে সড়ক ও রেলিংয়ের জন্য সাদা, কালো এবং হলুদ রঙ ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। এই মামলার পরবর্তী শুনানি হবে পাঁচ সপ্তাহ পরে। রাজ্য সরকার হলফনামা পেশ করার পর, মামলাকারী তার প্রতিক্রিয়া জানাবেন। আদালতের এই নির্দেশনাই ঠিক করবে পরবর্তীকালে নীল সাদা রং আবার দেখা যাবে কিনা।