ইসকনের (ISKCON) সন্ন্যাসী চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারির পর বাংলাদেশের (Bangladesh) পরিস্থিতি আরও অবনতির দিকে চলে গেছে। একদিকে যেখানে সন্ন্যাসীদের জন্য বিভিন্ন হুমকি এবং আক্রমণের ঘটনা ঘটছে, অন্যদিকে সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার ও নির্যাতনও বেড়ে গেছে। বিশেষত, ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করলে তাদের উপর ক্ষতির আশঙ্কা আরও বেশি হয়ে উঠেছে। এই চরম পরিস্থিতিতে কলকাতা (kolkata) ইসকন (ISKCON) তাদের সন্ন্যাসীদের জন্য নিরাপত্তার ব্যাপারে বিশেষ পরামর্শ দিয়েছে।
ইসকনের (ISKCON) ভাইস প্রেসিডেন্ট রাধারমণ দাস বলেন, ‘‘বর্তমান সংকটের সময়ে সন্ন্যাসীদের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজের সুরক্ষা। তাই ধর্মীয় চিহ্ন যেমন গেরুয়া বসন বা কপালে তিলক লাগানো থেকে বিরত থাকতে হবে।’’ তিনি আরও জানান, ‘‘যদি একান্তই গেরুয়া পরতেই হয়, তবে তা অন্য পোশাকের নিচে ঢাকা রাখতে হবে এবং মাথাও ঢেকে রাখুন।’’ এর মাধ্যমে তিনি সন্ন্যাসীদের সতর্ক করেছেন, যেন তারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ্যে না আনেন এবং নিজেদের সুরক্ষিত রাখতে পারেন। রাধারমণ দাস এই পরামর্শের মাধ্যমে বাংলাদেশের পরিস্থিতি ও সন্ন্যাসীদের নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেছেন।
চিন্ময় প্রভুর গ্রেপ্তারের পরবর্তী সময়ে রমেন রায়সহ বেশ কয়েকজন আইনজীবীর ওপর মৌলবাদীদের আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। রমেন রায়ের বাড়িতে হামলা চালিয়ে তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। শুধু রমেন রায়ই নয়, চিন্ময় প্রভুর পক্ষে যেসব আইনজীবী লড়াই করছেন, তাদের সঙ্গেও একই ধরনের আচরণ করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং তাদের খুনের মামলায় ফাঁসানোর হুমকি দেওয়া হয়েছে। এই ঘটনার পর বাংলাদেশের আইনজীবী মহল এবং সন্ন্যাসীদের মধ্যে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে।
ইসকন-এর (ISKCON) পক্ষ থেকে, চিন্ময় প্রভুর জামিনের জন্য বিশেষ প্রার্থনা সভার আয়োজন করা হয়েছিল সোমবার। রাধারমণ দাস জানিয়েছেন, তিনি চিন্ময়ের সচিবের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রেখেছিলেন, কিন্তু গত কয়েকদিন ধরে সচিব নিখোঁজ রয়েছেন। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের আইনজীবী এবং সন্ন্যাসীদের জন্য এক নতুন বিপদ সৃষ্টি হয়েছে।
এমন পরিস্থিতিতে, ইসকন (ISKCON) তাদের সন্ন্যাসীদের পরামর্শ দিয়েছে যাতে তারা যেন সর্বোচ্চ সাবধানতা অবলম্বন করে এবং সুরক্ষিত থাকার জন্য সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। ইসকন জানিয়ে দিয়েছে, চিন্ময় প্রভুর মুক্তির জন্য তাদের প্রার্থনা অব্যাহত থাকবে, এবং এই সংকটময় সময়ে সন্ন্যাসীদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য তারা সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত।
এই ঘটনায় বাংলাদেশে সন্ন্যাসীদের নিরাপত্তা প্রশ্নে এক গভীর উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইসকনের (ISKCON) সতর্কবার্তা এবং পদক্ষেপের ফলে তাদের অনুসারীরা এই পরিস্থিতিতে নিজেদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট থাকবে, যাতে ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করার কারণে আর কোনও বিপদ না আসে।