ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে ভাসল শহর কলকাতা

ঘূর্ণিঝড় দানার (Cyclone Dana) প্রভাব কলকাতায় ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টিপাত নিয়ে এসেছে। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি শুক্রবার ভোর চারটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত অব্যাহত…

ঘূর্ণিঝড় দানার (Cyclone Dana) প্রভাব কলকাতায় ব্যাপক পরিমাণে বৃষ্টিপাত নিয়ে এসেছে। মধ্যরাত থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি শুক্রবার ভোর চারটা থেকে দুপুর বারোটা পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। শহরের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিমাপ করা বৃষ্টির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য, এবং এটি স্থানীয় জীবনযাত্রা ও পরিবহণ ব্যবস্থাকে প্রভাবিত করেছে।

যোধপুর পার্কে সবচেয়ে বেশি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে, যেখানে পরিমাণ ছিল ১১১.০০ মিমি। এই অঞ্চলে এই বিপুল পরিমাণ বৃষ্টির ফলে রাস্তা, ফুটপাত এবং বিভিন্ন স্থানে জল জমে গেছে। ফলে স্থানীয় বাসিন্দাদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে।

   

বৃষ্টির পরিমাণের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কলকাতার অন্যান্য এলাকাগুলিতে বৃষ্টির পরিমাণও উল্লেখযোগ্য ছিল। মানিকতলায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৬২.০০ মিমি, বীরপাড়ায় ৪৭.০০ মিমি, এবং বেলগাছিয়ায়ও একই পরিমাণ বৃষ্টির রেকর্ড হয়েছে। ধাপা লক অঞ্চলে বৃষ্টি হয় ৫১.০০ মিমি, যা স্থানীয় কৃষিকাজের জন্য কিছুটা সহায়ক হলেও এটি বর্তমানে জলাবদ্ধতার সমস্যাও সৃষ্টি করেছে।

তপসিয়া অঞ্চল সব থেকে বেশি পরিমাণে প্রভাবিত হয়েছে, যেখানে বৃষ্টির পরিমাণ ৯০.০০ মিমি। এদিকে, উল্টোডাঙায় বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ৪৯.০০ মিমি, এবং পালমার ব্রিজে এটি ছিল ৭২.০০ মিমি। ঠনঠনিয়া অঞ্চলে ৬২.৮০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে।

বালিগঞ্জে বৃষ্টির পরিমাণ ছিল ১০৪.০০ মিমি, যা এখানকার নিকাশি ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। মমিনপুরে ৯৩.০০ মিমি, এবং চেতলা লকেও ৮৯.০০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। কালীঘাট অঞ্চলে ৮৯.৪০ মিমি বৃষ্টির ফলে বাসিন্দাদের মধ্যে উৎকণ্ঠা বৃদ্ধি পেয়েছে।

একদিকে, কান্দাহারী অঞ্চলে ১০৮.০০ মিমি এবং সি. পি. টি ক্যানেলে ৯৪.৪০ মিমি বৃষ্টি রেকর্ড হয়েছে। দত্তা বাগানে ৫০.০০ মিমি এবং জিনজিরা বাজারে ৮০.০০ মিমি বৃষ্টির পরিমাণ লক্ষ্য করা গেছে। বেহালা ফ্লাইং ক্লাবে বৃষ্টির পরিমাণ ৮০.১০ মিমি। কুলিয়া টেংরায় ৫৭.২০ মিমি এবং পাগলাডাঙ্গায় ৬৭.০০ মিমি বৃষ্টি হয়েছে। চিংড়িঘাটায় বৃষ্টির পরিমাণ ৫৩.০০ মিমি।

বৃষ্টির এই পরিমাণের ফলে কলকাতার বিভিন্ন অঞ্চলে জলাবদ্ধতার সমস্যা দেখা দিয়েছে। প্রশাসনের তরফ থেকে ইতিমধ্যে জরুরি ব্যবস্থার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সড়ক, রেলপথ এবং অন্যান্য যানবাহনের চলাচলে কিছুটা ব্যাঘাত ঘটেছে। পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্থানীয় কর্তৃপক্ষ দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করছে।

শেষে, ঘূর্ণিঝড় দানার এই প্রভাবের ফলে কলকাতাবাসীদের সচেতন থাকতে হবে। প্রত্যেককে নিরাপত্তা ব্যবস্থা মেনে চলার পাশাপাশি অযথা বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। জরুরী অবস্থার মোকাবিলায় সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করতে হবে।