সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য দফতরের নয়া পদক্ষেপ

রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর(Health department) সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল যে, সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি করার জন্য দালালরা…

Health department

রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতর(Health department) সরকারি হাসপাতালে দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে চলেছে। দীর্ঘদিন ধরেই অভিযোগ উঠছিল যে, সরকারি হাসপাতালে রোগী ভর্তি করার জন্য দালালরা টাকা নিচ্ছে, এবং সেই টাকার বিনিময়ে রোগীদের দ্রুত চিকিৎসা, হাসপাতালের বেড, বা বিশেষ সুবিধা প্রদান করছে। এর মধ্যে কিছু দালাল রোগীদের জন্য পরবর্তী সময়ে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করেন, এমনকি ভিজিটিং আওয়ার্সের পরও চিকিৎসক দেখানোর কথা বলে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করেন।

এমন অভিযোগ প্রায় সব সরকারি হাসপাতালে উঠে আসে। তবে বেশিরভাগ রোগী এসব ঘটনার প্রতিবাদ জানান না। অভিযোগ করার জন্য হাসপাতালের যে বাক্স রাখা হয়, তাতে সাধারণত অনেক অভিযোগ জমা পড়লেও তা প্রক্রিয়া করা হয় না। এমনকি অভিযোগ বাক্সগুলি সাধারণত চোখের আড়ালে রাখা হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। ফলে রোগীরা তাদের দুর্ভোগের কথা জানানোর সুযোগ পান না।

   

এখন এই পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে স্বাস্থ্য দফতর নানা পদক্ষেপ নিচ্ছে। দালাল চক্রের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে শুরু করেছে রাজ্য সরকার। সরকারি হাসপাতালগুলোতে রোগীর পরিবার ও আত্মীয়দের অভিযোগ জানানো জন্য একাধিক অভিযোগ বাক্স রাখা হবে, এবং এগুলি নিয়মিতভাবে মনিটর করা হবে। স্বাস্থ্য দফতর সম্প্রতি সব জেলা হাসপাতালকে এই নির্দেশ পাঠিয়েছে, যাতে সঠিকভাবে রোগী ও তাদের পরিবার অভিযোগ জানাতে পারে।

স্বাস্থ্য দফতরের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, “কিছু চিকিৎসক, নার্স বা স্বাস্থ্য কর্মী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে দায়িত্ব পালন করেন না। তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে যে তারা রোগীকে বেসরকারি হাসপাতালে পাঠান, এবং সেখানে চিকিৎসার জন্য বেশি টাকা নেওয়া হয়। এছাড়া অনেক সময় সরকারি হাসপাতালের কিছু চিকিৎসক দালালদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে মোটা অঙ্কের টাকা কামান।” এর ফলে রোগীদের অতিরিক্ত খরচ করতে হয় এবং সরকারও বদনামে পড়ে।

মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিষয়টি নিয়ে অত্যন্ত চিন্তিত। তিনি জানিয়েছেন, সরকারের পক্ষ থেকে ইতিমধ্যেই বিভিন্ন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে হাসপাতালগুলিতে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো, চিকিৎসকদের ডিউটি সময়ের কঠোর নজরদারি এবং রোগীদের সুবিধা নিশ্চিত করার জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা করা। মুখ্যমন্ত্রী চিকিৎসকদের প্রতি কঠোর বার্তা দিয়েছেন, বলেছেন, “৮ ঘন্টার ডিউটি অনুসরণ করতে হবে। যারা দায়িত্বে গাফিলতি করবেন, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”

এখন স্বাস্থ্য দফতরের লক্ষ্য, সরকারি হাসপাতালগুলিতে দালাল চক্রের প্রভাব কমিয়ে আনা এবং রোগীদের যাতে কোনো ধরনের হয়রানি বা অতিরিক্ত অর্থ ব্যয়ের শিকার না হতে হয় তা নিশ্চিত করা। স্বাস্থ্য দফতরের প্রক্রিয়া, যার মধ্যে রয়েছে অভিযোগ বাক্সের ব্যবস্থা, সিসিটিভি নজরদারি এবং কড়া মনিটরিং, এটি রাজ্যের সরকারি হাসপাতালে স্বচ্ছতা এবং পরিষেবা নিশ্চিত করতে সহায়ক হবে।

রাজ্য সরকার নিশ্চিত করেছে যে, এখন থেকে রোগীদের সব ধরনের অভিযোগ গুরুত্ব সহকারে নেওয়া হবে এবং দালালদের হাত থেকে জনগণকে মুক্তি দিতে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।