গণেশ চতুর্থীতে সোনার দামে আগুন! হু-হু করে বাড়ছে রুপােও

আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের অপেক্ষা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আগমনী সুর বাজতে শুরু করেছে চারিদিকে। এই সময়ে বাজারে যে জিনিসটির চাহিদা সবথেকে বেশি বেড়ে যায়,…

"Will Gold Prices Drop to ₹75,000? The Middle Class Poised to Seize the Opportunity"

আর মাত্র কয়েক সপ্তাহের অপেক্ষা। বাঙালির শ্রেষ্ঠ উৎসব দুর্গাপুজোর আগমনী সুর বাজতে শুরু করেছে চারিদিকে। এই সময়ে বাজারে যে জিনিসটির চাহিদা সবথেকে বেশি বেড়ে যায়, তা হল সোনার গয়না। নতুন জামাকাপড়ের পাশাপাশি গয়না কেনাও এই সময় বাঙালির বহু বাড়িতে রীতি।

দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে ধনতেরাস, কালীপুজো— সব উৎসবেই সোনার প্রতি এক বিশেষ টান থাকে ক্রেতাদের। তার পরেই শুরু হয় বিয়ের মরসুম, যেখানে সোনার (Gold price) গুরুত্ব আরও বেড়ে যায়। ফলে উৎসবের এই মরশুম আসতে না আসতেই গয়নার দোকানগুলিতে ভিড় জমতে শুরু করেছে।

   

তবে এ বছর ক্রেতাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ আরও গভীর হওয়ার কারণ হল সোনার দামের ওঠাপড়া। কয়েকদিন আগে যেখানে সোনার দামে খানিকটা হেরফের হয়েছিল, ফলে ক্রেতাদের মুখে হাসি ফুটেছিল, সেখানেই ফের নতুন করে দাম বাড়ার খবর সামনে এসেছে। এক ধাক্কায় দামের এই বৃদ্ধি ক্রেতাদের ভাবিয়ে তুলছে। বিশেষত, যাঁরা দুর্গাপুজো বা ধনতেরাসের আগে নতুন গয়না কেনার পরিকল্পনা করেছিলেন, তাঁদের অনেককেই বাজেট ফের নতুন করে ভাবতে হচ্ছে।

সাধারণত পুজো কিংবা বিয়ের মরশুমের আগে সোনার চাহিদা বাড়ে বলেই বাজারে দামের ওঠানামা দেখা যায়। আন্তর্জাতিক বাজারেও সোনার দামের উত্থান–পতন তার প্রভাব ফেলে ভারতীয় বাজারে। ডলার-টাকার বিনিময় হার, শেয়ার বাজারের অবস্থান, এমনকি বৈশ্বিক অর্থনীতির পরিবর্তনও সরাসরি প্রভাব ফেলে সোনার দামে। ফলে সাধারণ ক্রেতা যে সমস্যায় পড়বেন, তা বলাই বাহুল্য।

কলকাতার বড় বড় জুয়েলারি শোরুমগুলিতে ইতিমধ্যেই ভিড় বাড়ছে। অনেকেই অগ্রিম বুকিং করে রাখছেন, যাতে পুজোর আগে আরও দামের উত্থান হলে কিছুটা হলেও বাঁচা যায়। কেউ কেউ আবার পুরনো গয়না বদল করে নতুন ডিজাইনের গয়না নেওয়ার দিকে ঝুঁকছেন। জুয়েলারি ব্যবসায়ীদের মতে, দাম বাড়লেও বাঙালির উৎসব মানেই কেনাকাটা, আর তাতে সোনার গয়নার গুরুত্ব চিরকালীন। তবে এবার অনেকে ছোটখাটো গয়না বা হালকা ওজনের অলঙ্কার কেনার দিকে বেশি আগ্রহী হবেন বলে আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

Advertisements

পুজো মানেই শঙ্খ–সিঁদুর, ধূপ–ধুনো, আর তার সঙ্গে সোনার গয়নার ঝলকানি। প্রতিটি পরিবারই যতটুকু সামর্থ্য অনুযায়ী নতুন কিছু কেনার চেষ্টা করে। বাঙালির বিশ্বাস, ধনতেরাস বা কালীপুজোয় সোনা কেনা শুভ। তাই এই সময়ে গয়নার দোকানগুলিতে ভিড় বাড়বেই। যদিও দামের ঊর্ধ্বগতি অনেককে দ্বিধায় ফেলছে, কিন্তু তবুও পুজোর আমেজকে কেন্দ্র করে গয়নার ব্যবসা জমজমাট হবেই।

অন্যদিকে, বিয়ের মরশুমের দিকে তাকিয়ে অনেক পরিবার এখন থেকেই পরিকল্পনা শুরু করেছে। বাংলায় শীতকাল মানেই বিয়ের মরশুম। বিয়ে ঘিরে সোনার চাহিদা আরও বেড়ে যায়। কনের গহনা থেকে শুরু করে উপহার—সবেতেই সোনার প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। ফলে এই কয়েক মাস সোনার বাজারে রমরমা চলবেই বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

যদিও সাধারণ মধ্যবিত্তের জন্য দামের এই ঊর্ধ্বগতি বাড়তি চাপের কারণ। যাঁরা দীর্ঘদিন ধরে গয়না কেনার পরিকল্পনা করছিলেন, তাঁদের এখন নতুন করে হিসেব-নিকেশ বসাতে হচ্ছে। অনেক পরিবার আবার ব্যাংকের সোনার ঋণ বা ইএমআই স্কিমের সাহায্য নিচ্ছেন। ফলে গয়না কেনার প্রবণতা কমছে না, বরং নানা উপায়ে বাজেট সামলে উৎসবের আনন্দে শামিল হতে চাইছেন সকলে।

সব মিলিয়ে বলা যায়, দুর্গাপুজো থেকে কালীপুজো এবং তারপর বিয়ের মরশুম—এমন এক সময় যখন সোনার বাজার সবসময়ই উজ্জ্বল থাকে। দাম যতই বাড়ুক, বাঙালির কাছে উৎসব মানেই কেনাকাটা আর কেনাকাটা মানেই নতুন গয়না। তাই দাম বৃদ্ধির পরও পুজোর আগেই সোনার গয়নার বাজার ফের জমে উঠবে, সে বিষয়ে কোনও সন্দেহ নেই।