অবশেষে কলকাতায় পাঁচমাসের শিশুর শরীরে মিলল HMPV ভাইরাস

অবশেষে কলকাতায় মিলল এইচএমপি ভাইরাস (HMPV) । পাঁচমাসের এক শিশু HMP ভাইরাসে (HMPV) আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে দেশে আরও দুই শিশু এই…

hmpv cases risen to 7 in india

অবশেষে কলকাতায় মিলল এইচএমপি ভাইরাস (HMPV) । পাঁচমাসের এক শিশু HMP ভাইরাসে (HMPV) আক্রান্ত হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। এর আগে দেশে আরও দুই শিশু এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছে। এবার কলকাতায় এসে গেল এই ভাইরাস।

চিনের নতুন এইচএমপি ভাইরাস (হিউম্যান মেটানিউমো ভাইরাস) গত কয়েক সপ্তাহ ধরে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেছে। ভারতেও এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়ানোর আশঙ্কা তৈরি হয়েছে, এবং এরই মধ্যে কলকাতা সহ বিভিন্ন জায়গায় আক্রান্তের খবর পাওয়া গেছে। এর আগে কর্নাটক এবং গুজরাটে তিনটি শিশুর শরীরে এই ভাইরাস পাওয়া গিয়েছিল। আর এখন কলকাতায় এক পাঁচ মাসের শিশুর শরীরে এই ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে, যা উদ্বেগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

   

কলকাতায় আক্রান্ত শিশুটি বর্তমানে সুস্থ থাকলেও তার শরীরে এইচএমপি ভাইরাসের পজিটিভ রিপোর্ট এসেছে। জানা গিয়েছে, শিশুটি কলকাতার বাইপাস সংলগ্ন একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল। এই শিশুর পরিবার মুম্বইয়ে কর্মসূত্রে বসবাস করত, এবং নভেম্বর মাসে তারা কলকাতায় এসেছিল। সেই সময় শিশুটি অসুস্থ হয়ে পড়ে, এবং তার পরে পঞ্চসায়রের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, আপাতত শিশুটির শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল, তবে তার শরীরে এইচএমপি ভাইরাসের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়েছে।

এই ভাইরাসের সংক্রমণ সারা বিশ্বে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এবং বিশেষত শিশু ও বয়স্কদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। এই ভাইরাসের লক্ষণগুলি সাধারণত সর্দি, কাশি, শ্বাসকষ্ট, এবং গলা ব্যথার মতো হয়ে থাকে। তবে, কিছু ক্ষেত্রে এটি আরও গুরুতর হতে পারে এবং শ্বাসতন্ত্রের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, বিশেষত যদি শরীরের প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল থাকে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই ভাইরাসের জন্য কোনো বিশেষ চিকিৎসা বা অ্যান্টিবায়োটিক নেই, তাই সাবধানতা অবলম্বন করাই একমাত্র উপায়।

কলকাতায় এই ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের পর স্বাস্থ্য দপ্তর দ্রুত সতর্কতা জারি করেছে। বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, ৫ বছরের কম বয়সী শিশুরা এবং বয়স্ক নাগরিকদের জন্য বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা জরুরি। একইসঙ্গে, এই ভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে জনসমাগম এড়িয়ে চলা, মুখে মাস্ক পরা, এবং শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখা প্রয়োজন।

এখনও পর্যন্ত, ভারতের অন্যান্য জায়গায় যেখানে এই ভাইরাসের সংক্রমণ দেখা গেছে, সেখানেও কোনো বিদেশ ভ্রমণের ইতিহাস ছিল না, যা আরও চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, এই ভাইরাসের সংক্রমণ স্থানীয়ভাবে ঘটছে এবং আরও বেশি মানুষের মধ্যে ছড়াতে পারে, যদি দ্রুত পদক্ষেপ না নেওয়া হয়।

কলকাতার স্বাস্থ্য দপ্তর ইতিমধ্যেই একাধিক নির্দেশিকা জারি করেছে এবং হাসপাতালগুলিকে বিশেষ সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে। শিশুরা যেন যথাযথ চিকিৎসা পায় এবং পরিবারের সদস্যরা যেন তাদের স্বাস্থ্য পরিস্থিতির দিকে নজর রাখেন, সেজন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সবাইকে তাদের শারীরিক অবস্থার দিকে নজর রাখতে এবং উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরামর্শ দিয়েছেন।

এই ভাইরাসের সংক্রমণ সারা দেশে ছড়ানোর আশঙ্কা থাকায় স্বাস্থ্য দপ্তর কি নতুন কোনো নির্দেশিকা জারি করবে, সেটাই এখন বড় প্রশ্ন। তবে যেহেতু ভাইরাসটি এখনও নতুন এবং এর বিষয়ে বিশেষজ্ঞরা আরও তথ্য সংগ্রহ করছে, তাই সতর্কতার মাত্রা আরও বাড়ানো হতে পারে।