গত কয়েক দিনের ঘটনায় ক্ষেপে লাল ফিরহাদ! পোস্টম্যান, পুতুল বললেন কাকে?

   গত কয়েকদিন ধরে বিধানসভা চত্বরে দেখা যাচ্ছে বেনজির দৃশ্য। একদিকে বরাহনগর বিধানসভার সদ্য জয়ী বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরদিকে ভগবানগোলা থেকে জয়ী হওয়ার রেয়াত হোসেন…

  

গত কয়েকদিন ধরে বিধানসভা চত্বরে দেখা যাচ্ছে বেনজির দৃশ্য। একদিকে বরাহনগর বিধানসভার সদ্য জয়ী বিধায়ক সায়ন্তিকা বন্দ্যোপাধ্যায় অপরদিকে ভগবানগোলা থেকে জয়ী হওয়ার রেয়াত হোসেন সরকার। দুই জনই তাদের শপথ গ্রহণের দাবিতে ধর্ণায় বসেছেন বিধানসভা চত্বরে। এবার সেই ঘটনা নিয়েই তুলোধোনা করলেন কলকাতার মেয়র তথা পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ ববি হাকিম (Firhad Bobby Hakim)।

রাজ্যপাল কেন বিধানসভায় এসে শপথ গ্রহণ করাতে চাইছেন না, প্রশ্ন তুলে তীব্র আক্রমণ ববির(Firhad Bobby Hakim)। রাজ্যপাল কে উদ্দেশ্য করে তিনি (Firhad Bobby Hakim) বলেন ” বাবার ক্ষমতা আছে বলবে, যত এমপি আছে ইনক্লুডিং রাহুল গান্ধী থেকে শুরু করে নরেন্দ্র মোদী, রাষ্ট্রপতি ভবনে গিয়ে শপথ নিতে? মন্ত্রিসভার শপথ ওখানে রাষ্ট্রপতি ভবনে হয় আর মেম্বারদের শপথ পার্লামেন্টে হয়। এখানেও তেমন মন্ত্রীদের শপথ হবে রাজভবনে, আর বিধায়কদের বিধানসভায়”।

   

ফেরত দিতে হবে না মাইনে? হাইকোর্টে শিক্ষকদের জয়ে মুখ পুড়লো শিক্ষা দফতরের!

বিধানসভায় এসে রাজ্যপালের শপথবাক্য পাঠ না করানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে তার প্রশ্ন, তাহলে কেন সমস্ত এমপিদের শপথ বাক্য রাষ্ট্রপতি ভবনে পাঠ করানো হল না? তাঁর আরও বিস্ফোরক অভিযোগ, রাজ্যে এখন বিরোধিতার প্রতিযোগিতা চলছে। বিরোধী দলনেতা এবং রাজ্যপালের মধ্যে এখন প্রতিযোগিতা চলছে, কে কত বড় সরকারবিরোধী প্রমাণ করতে পারে নিজেকে, সেটা নিয়ে। কলকাতার মেয়র আরও অভিযোগ করেন হেরে যাওয়ার পরেও শুধুমাত্র অমিত শাহের অঙ্গুলিহেলনেই এই সমস্ত কান্ড করছেন রাজ্যপাল।

রাজ্যপালকে তার পদের মর্যাদা এবং গরিমা বুঝিয়ে দিয়ে তার করা হুশিয়ারি, “ইউ আর ওনলি এ ডল, ইউ আর নট ইলেক্টেড, ইউ আর সিলেক্টেড, উই আর ইলেক্টেড”। অর্থাৎ রাজ্যপাল সংবিধানের নিয়ম নীতি পালন করা ‘পুতুল’ মাত্র। তিনি কোনও নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি নন। নিজস্ব কোন সিদ্ধান্ত নয়, সংবিধানিক সিদ্ধান্ত চুপচাপ পালন করাই তাঁর কাজ।

প্রকাশিত মাধ্যমিক ২০২৫-এর রুটিন, জানুন কবে কোন বিষয়ের পরীক্ষা?

এই প্রসঙ্গে কথা বলতে গিয়ে স্মৃতিমেদুর হয়ে পড়েন ফিরহাদ হাকিম। ২০০৯ সালে উপ নির্বাচনে জিতে বিধানসভায় যাওয়ার স্মৃতিচারণ করে তিনি বলেন – “সে সময় আমি জানতামই না রাজ্যপালের রাজভবনটা কোথায়! হালিম সাহেব স্পিকার ছিলেন। জেতার ৭ দিনের মধ্যে হালিম সাহেব চিঠি দিলেন। আমি, সুজিত(বোস), দিব্যেন্দু গেলাম। শপথ বাক্য পাঠ করলাম। ব্যাস তারপরে বিধানসভায় ঢুকে বসে পড়লাম, মেম্বার হয়ে গেলাম”।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ও এই সংক্রান্ত বিষয়ে উপরাষ্ট্রপতি এবং রাষ্ট্রপতির কাছে চিঠি দিয়েছেন। বর্তমান উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় এক সময় পশ্চিমবঙ্গের রাজ্যপাল ছিলেন। ধনখড়-মমতার বিবাদ সে সময় সর্বদাই খবরের শিরোনামে থাকত। তা সত্ত্বেও উপনির্বাচনে জিতে আসা মমতাকে বিধানসভাতে এসেই শপথ বাক্য পাঠ করিয়েছিলেন ধনখড়। সেই কথা মনে করিয়ে দিয়ে স্পিকার আবেদন জানিয়েছেন, উপরাষ্ট্রপতি এবং রাষ্ট্রপতি দুজনই যেন এই সাংবিধানিক সমস্যার সমাধানের জন্য সচেষ্ট হন। এখন দেখার বিষয় রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস কবে তাঁর জেদ ভেঙে আনন্দ-চিত্তে বিধানসভায় এসে শপথ বাক্য পাঠ করান সায়ান্তিকা এবং রেয়াতকে।