‘আর্থিক সঙ্কটে’ আর জি কর কাণ্ডে অভিযুক্ত জেলবন্দি সন্দীপ ঘোষ

সম্প্রতি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে (RG Kar Medical College Case) ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ (Sandeep Ghosh) বর্তমানে জেলবন্দি অবস্থায়…

Financial Crisis Hits Sandeep Ghosh, Accused in RG Kar Medical College Rape-Murder Case, as He Seeks Court Approval to Liquidate Fixed Deposit for Legal Fees

সম্প্রতি আর জি কর মেডিক্যাল কলেজে (RG Kar Medical College Case) ঘটে যাওয়া ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত সন্দীপ ঘোষ (Sandeep Ghosh) বর্তমানে জেলবন্দি অবস্থায় রয়েছেন।  তার বিরুদ্ধে একাধিক আদালতে মামলা চলমান রয়েছে, যার ফলে তার আইনজীবী ফি জোগাতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে তিনি ব্যাংকের কাছে তাদের ২০ লক্ষ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙার আবেদন করেছেন, কিন্তু জেল থেকে তার স্বাক্ষর পাচ্ছে না ব্যাংক কর্তৃপক্ষ।

আদালতের চিত্র
সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রে বিভিন্ন আদালতে গত কয়েক মাস ধরে একাধিক শুনানি অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই মামলায় সন্দীপের আইনজীবী বারবার আদালতের দারস্থ হয়েছেন। তবে, তার আইনজীবী ফি পরিশোধের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সংগ্রহ করতে গিয়ে তিনি বিপাকে পড়েছেন। কারণ, জেলবন্দি অবস্থায় সন্দীপের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা এবং তার সই নেওয়া সম্ভব হচ্ছে না।

   

জেল কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করে ব্যাংকের কর্মকর্তারা জানান, তারা সন্দীপের সই ছাড়া ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙতে পারবেন না। এই বিষয়টি সন্দীপের আইনজীবী এবং পরিবারকে আরও অসুবিধার মধ্যে ফেলেছে, কারণ সময়ের মধ্যে আইনজীবীর ফি পরিশোধ না করতে পারলে তার পক্ষে যথাযথ আইনি সহায়তা পাওয়া অসম্ভব হয়ে উঠবে।

ব্যাংকের বাধা
সন্দীপ ঘোষের ক্ষেত্রে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের অসহযোগিতা প্রসঙ্গেও অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, জেল কর্তৃপক্ষ সন্দীপের সই না পাওয়ার জন্য দায়ী। এর ফলে সন্দীপ ঘোষের পরিস্থিতি আরও সংকটজনক হয়ে উঠেছে। তিনি চাইছেন, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙার অনুমতি দিয়ে দ্রুত টাকা জোগাড় করতে। কিন্তু ব্যাংকের পক্ষ থেকে তাকে জানানো হচ্ছে যে, নিয়ম অনুযায়ী বন্দির স্বাক্ষর ছাড়া কোনো আর্থিক লেনদেন করা সম্ভব নয়।

উচ্চ আদালতের দারস্থ হওয়া
সন্দীপ ঘোষ এই পরিস্থিতিতে উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। তিনি আদালতে আবেদন করেছেন যাতে তার ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙার অনুমতি দেওয়া হয়। তার আইনজীবী জানিয়েছেন, শুক্রবারের শুনানির জন্য মামলাটি প্রস্তুত রয়েছে। আদালত যদি সন্দীপের পক্ষে রায় দেয়, তাহলে তা তার আর্থিক সঙ্কট সমাধানে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে।

সন্দীপের আইনজীবী বলছেন, “আমরা আদালতের কাছে আবেদন করেছি যাতে ব্যাংক কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুমতি দেওয়া হয়। আমাদের উচিত সন্দীপের সই নেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া।” সন্দীপ ঘোষের পরিবারও এই বিষয়টিতে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। তাদের মতে, ব্যাংকের অসহযোগিতা একটি অযৌক্তিক সমস্যা তৈরি করছে, যা মামলার জটিলতার সাথে যুক্ত হচ্ছে।

সামাজিক প্রতিক্রিয়া
এই ঘটনাটি সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। অনেকেই প্রশ্ন তুলছেন, একজন বন্দির বিরুদ্ধে এমন কঠিন অবস্থায় কেন আইন অনুযায়ী সহযোগিতা করা হচ্ছে না। সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এই সমস্যার সমাধানে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। তারা বলছেন, যে যেকোনো ব্যক্তি আর্থিক সঙ্কটে পড়লে তাকে সাহায্য করার জন্য সমাজের সকলকে এগিয়ে আসা উচিত।

সঙ্কটের অন্তরালে
সন্দীপ ঘোষের এই অর্থনৈতিক সঙ্কটের ফলে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রসঙ্গে নতুন প্রশ্ন উঠছে। আদালত, সরকার এবং ব্যাংকগুলির দায়িত্ববোধ এখানে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একজন বন্দির মৌলিক অধিকার এবং অর্থনৈতিক সহায়তার প্রয়োজনীয়তা অগ্রাহ্য করা উচিত নয়। এমন পরিস্থিতিতে, রাষ্ট্রের উচিত মানবিকতার ভিত্তিতে সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা।

এই পরিস্থিতি সন্দীপ ঘোষের জন্য একটি গুরুতর সংকট, যা আদালতের রায়ের ওপর নির্ভর করছে। উচ্চ আদালতের নির্দেশে যদি তার ফিক্সড ডিপোজিট ভাঙা সম্ভব হয়, তবে তিনি আইনজীবীর ফি পরিশোধ করতে সক্ষম হবেন এবং তার আইনি সহায়তা যথাযথভাবে প্রাপ্ত করতে পারবেন। কিন্তু, ব্যাংকের পক্ষ থেকে সদিচ্ছার অভাব এবং জেল কর্তৃপক্ষের সহযোগিতার অভাব তার পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলছে।