অবশেষে পুলিশের জালে ডিজিটাল অ্যারেস্ট চক্রের মূল পান্ডা

ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে চলা প্রতারণার এক বড় চক্রের মধ্যে আরও এক সন্দেহভাজন সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। রাজধানী দিল্লি থেকে এই চক্রের পান্ডা যোগেশ দুয়া (৩৬) কে…

ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে চলা প্রতারণার এক বড় চক্রের মধ্যে আরও এক সন্দেহভাজন সদস্য গ্রেপ্তার হয়েছে। রাজধানী দিল্লি থেকে এই চক্রের পান্ডা যোগেশ দুয়া (৩৬) কে গ্রেপ্তার করেছে কলকাতা পুলিশ। যোগেশ দুয়াকে দিল্লির বিবেক বিহার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয় এবং ট্রানজিট রিমান্ডে তাকে কলকাতায় আনা হচ্ছে। এই প্রতারণা চক্রের প্রথম ঘটনায়, তিন মাস আগে কলকাতার গলফগ্রিন এলাকার এক বাসিন্দাকে সিবিআই অফিসারের নাম করে ফোনে ভয় দেখানো হয়েছিল। অভিযোগ করা হয় যে ওই ব্যক্তি মানব পাচার এবং বেআইনি আর্থিক লেনদেনের সঙ্গে জড়িত। ভয় দেখিয়ে ওই মহিলার থেকে ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে ৪৭ লক্ষ টাকা আদায় করা হয়। এই ঘটনার পর, কলকাতা পুলিশের লালবাজার শাখা তদন্ত শুরু করলে, ১১ জন অভিযুক্তকে আগে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল।

তদন্তকারীরা যখন আরও গভীরে ঢোকেন, তারা বুঝতে পারেন যে এই প্রতারণা চক্রটি কলকাতার বাইরে দেশের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে আছে। এর মধ্যে কলকাতার আনন্দপুর, পাটুলি, এবং নরেন্দ্রপুর এলাকায়ও অভিযান চালিয়ে একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যায়, যার ভিত্তিতে দিল্লিতে অভিযান চালানো হয় এবং চক্রের অন্যতম মূল সদস্য যোগেশ দুয়া গ্রেপ্তার হন। গ্রেপ্তারের পর, পুলিশ তার ফ্ল্যাট থেকে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র উদ্ধার করে। তার কাছ থেকে দুটি মোবাইল, দুটি হার্ড ডিস্ক, একটি ল্যাপটপ, চারটি এটিএম কার্ড, দুটি প্যান কার্ড এবং ১ লক্ষ ৮৯ হাজার টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। এছাড়া, প্রচুর পরিমাণে বিদেশি মুদ্রা, বিশেষ করে ডলারও পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে, আরও কিছু ব্যক্তিগত তথ্য যেমন আধার কার্ড উদ্ধার করা হয়েছে, যা আসল না ভুয়ো, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

kolkata24x7-sports-News

   

এছাড়া, যোগেশ দুয়ার ভাই আদিত্য দুয়া এই প্রতারণা চক্রের আরও এক সদস্য হিসেবে পরিচিত। তার খোঁজেও তল্লাশি চলছে। পুলিশের মতে, আদিত্য দুয়া তার চক্রের অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সদস্য, এবং তার কাছ থেকেও প্রমাণ মেলানোর চেষ্টা চলছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের জানা যায়, এই চক্রের প্রধান অপারেটর হিসেবে চিরাগ কাপুরের নাম সামনে আসে। জানুয়ারিতে তাকে ব্যাঙ্গালোর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সহযোগী, ওঙ্কার সিংকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এই দুই ব্যক্তির কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতেই যোগেশ দুয়া এবং আদিত্য দুয়ার নাম উঠে আসে।

এদিকে, কলকাতা পুলিশের লালবাজার শাখা জানিয়েছে যে, ডিজিটাল অ্যারেস্টের নামে এই ধরনের প্রতারণা চক্র আরও অনেক জায়গায় ছড়িয়ে রয়েছে। তাদের উদ্দেশ্য হলো, সিবিআই বা অন্যান্য সরকারি এজেন্সির নামে মানুষকে ভয় দেখিয়ে অর্থ আদায় করা। পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে এবং আরও অনেক অভিযুক্তের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। এই ধরনের প্রতারণা চক্রের মোকাবিলায় পুলিশের এই অভিযান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে, এবং অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।