জালিয়াতি চক্রে ইডির বড় সাফল্য, কলকাতায় কল সেন্টারে কোটি টাকার সোনা উদ্ধার!

কলকাতায় চলছিল এক আন্তর্জাতিক প্রতারণার জাল, যা পরিচালনা করছিল একটি কল সেন্টার (Fake Call Centre)। অভিযোগ উঠেছে, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে ভুয়ো সফটওয়্যার পরিষেবা, অভিবাসন এবং…

From Tollywood to Politics — Actress Summoned by ED

কলকাতায় চলছিল এক আন্তর্জাতিক প্রতারণার জাল, যা পরিচালনা করছিল একটি কল সেন্টার (Fake Call Centre)। অভিযোগ উঠেছে, বিদেশি নাগরিকদের সঙ্গে ভুয়ো সফটওয়্যার পরিষেবা, অভিবাসন এবং অন্যান্য সেবা নিয়ে প্রতারণা করা হচ্ছিল। আর এই প্রতারণার টাকায় কেনা হয়েছিল বিপুল পরিমাণ সোনা। সম্প্রতি, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা, ইডি (এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট) শহরজুড়ে এক বিশাল তল্লাশি অভিযানে এক কোটি ৮০ লক্ষ টাকার সোনা উদ্ধার করেছে।

এছাড়া, একাধিক জায়গায় তল্লাশি চালিয়ে নগদ টাকা এবং অন্যান্য প্রমাণও উদ্ধার করা হয়েছে। ইডি আধিকারিকরা ধারণা করছেন, কল সেন্টারের ডিরেক্টররা এই সোনা তাদের বাড়িতে লুকিয়ে রেখেছিলেন। তাই, তাদের বাড়িতেও তল্লাশি চালানো হচ্ছে। কলকাতার বালিগঞ্জ, বাগুইআটি, নিউটাউন, সেক্টর ফাইভ সহ হাওড়ার একাধিক স্থানে এই অভিযান চালানো হয়েছে।

   

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, এই কল সেন্টার চক্রটি বিদেশি নাগরিকদের সফটওয়্যার পরিষেবার নাম করে ফোন করত। তারা তাদের কাছে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের তথ্য সংগ্রহ করত এবং পরে ভুয়ো আশ্বাস দিয়ে তাদের সঙ্গে প্রতারণা করত। শুধু সফটওয়্যার পরিষেবাই নয়, আমেরিকা, কানাডা, অস্ট্রেলিয়াসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের অভিবাসন সম্পর্কিত ভুয়ো আশ্বাস দেওয়া হতো। এই প্রতারণা চক্রে ব্যাপকভাবে টাকা আদান-প্রদান করা হতো।

তদন্তে উঠে এসেছে যে, এই প্রতারণার টাকার কিছু অংশ বিদেশে ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে পাচার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, প্রায় ২৫ থেকে ৩০ কোটি টাকার ক্রিপ্টো কারেন্সি বিদেশে পাচার করা হয়েছে। আরও চাঞ্চল্যকর তথ্য এসেছে যে, এই টাকা দিয়ে সোনা কেনা হয়েছিল। ওই সোনাটিও উদ্ধার করা হয়েছে।

ইডি আধিকারিকদের মতে, এই প্রতারণা চক্রটি কলকাতা থেকেই পরিচালিত হলেও এর কার্যক্রম আন্তর্জাতিক স্তরে ছড়িয়ে পড়েছিল। তদন্তকারীরা আরও জানিয়েছেন, এই চক্রের সঙ্গে জড়িত বিদেশি নাগরিকরা মূলত সফটওয়্যার পরিষেবার জন্য ভুয়ো প্রলোভন দিয়ে ঠকানো হত। তাদের শিকার করা হতো মূলত উন্নত দেশগুলির নাগরিকদের।

Advertisements

কল সেন্টারের ডিরেক্টররা এই চক্রের মাধ্যমে অসংখ্য মানুষকে ঠকানোর পর বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ সংগৃহীত করেছেন, যার মধ্যে সোনা, নগদ টাকা এবং ক্রিপ্টোকারেন্সি অন্তর্ভুক্ত। এই সমস্ত সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে এবং তদন্তকারীরা আশা করছেন যে, আরও বড় চক্রের সন্ধান মিলবে।

এই ধরনের প্রতারণার ঘটনা শুধু কলকাতা নয়, দেশের অন্যান্য শহরেও চলছে। এর ফলে বিদেশি নাগরিকরা বিপুল পরিমাণে আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়ছেন। ইডি এই ধরনের অপরাধমূলক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তবে, তদন্ত এখনও চলছে এবং আরও প্রমাণ উঠে আসার আশা রয়েছে।

এমনই একটি বিশাল জালিয়াতি চক্রের সন্ধান পাওয়ার পর শহরের বাসিন্দারা এখন আরও সতর্ক হয়ে উঠেছেন।