কলকাতার (Kolkata) বিটি রোডে রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ভয়াবহ বিস্ফোরণের (Explosion) ঘটনা ঘটেছে। স্ক্রাব গাড়ি কাটাইয়ের একটি কারখানায় পুরনো তেলের ট্যাঙ্কার (Oil tanker) কাটার সময় এই বিস্ফোরণটি ঘটে। বিস্ফোরণে এক শ্রমিকের মৃত্যু হয়েছে, এবং আরও একজন গুরুতর আহত হয়েছেন। মৃত শ্রমিকের নাম সাগর, এবং আহত ব্যক্তির নাম শংকর। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের তীব্রতা এতটাই ছিল যে, সাগরের দেহ (body) গাছের (tree) ওপর ছিটকে পড়ে।
বিস্ফোরণের আওয়াজ পেয়ে স্থানীয়রা ছুটে আসে ঘটনাস্থলে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, বিস্ফোরণের আওয়াজ প্রায় ৭০০ মিটার দূর থেকে শোনা গিয়েছিল। ঘটনাস্থলে উপস্থিত বাসিন্দারা জানান, পুরনো পেট্রোল ট্রাকের ট্যাঙ্কার কাটাইয়ের কাজ অত্যন্ত বিপজ্জনক। তাঁদের অভিযোগ, এর আগেও এই কারখানায় আগুন লেগেছিল, যা খুবই ঝুঁকিপূর্ণ ছিল। বাসিন্দাদের দাবি, “এটা পুরোপুরি অবৈধ কাজ। এত বিপজ্জনক কাজ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় করা হচ্ছে।” তাঁরা জানান, পুরনো তেলের ট্যাঙ্কার কাটার সময় নিরাপত্তার ব্যবস্থা ছিল না এবং কাছের পুকুর থেকে জল তুলে কাজ চলছিল। পাশাপাশি, রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার অবৈধভাবে ওই কারখানায় ব্যবহৃত হচ্ছিল, যা আরও বিপজ্জনক ছিল।
এ বিষয়ে সিঁথি থানার নিকটবর্তী ২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর কাকুলী সেন ক্ষুব্ধ হয়ে বলেন, কলকাতা কর্পোরেশনের অনুমতি নিয়ে এই অবৈধ কাটাই কারখানা চলছিল। তিনি পুলিশকে অনুরোধ করেছেন, যেন তারা তদন্ত করে দেখুক কীভাবে এই অবৈধ কার্যক্রম চলছিল।
রাজ্যসভার প্রাক্তন সাংসদ শান্তনু সেনও এই ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, “এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। যে কোনো মৃত্যুই দুঃখজনক।” তিনি আরও জানান, অতীতে পুলিশ ও পৌরসভা এ ধরনের ঘটনায় যথাযথ পদক্ষেপ নিয়েছে এবং আশা করেন, এবারও তারা নিশ্চিত করবে যাতে ভবিষ্যতে অবৈধ ব্যবসা বন্ধ করা যায়।
কলকাতা কর্পোরেশনের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও ১ নম্বর বরো চেয়ারম্যান তরুণ সাহা বলেন, “এই এলাকায় ৩০ বছর ধরে গাড়ি কাটাইয়ের ব্যবসা চলে আসছে। তবে, গ্যাস কাটাইয়ের কাজটি সম্ভবত গোপনে চলছিল।” তিনি জানান, পুরসভা উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবে এবং বিপজ্জনক এই ব্যবসা বন্ধ করতে হবে।
এই ঘটনার পর স্থানীয়দের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন যে, সরকারী অনুমতি ছাড়াই অবৈধভাবে এসব কার্যক্রম চলছিল, যা পুরো এলাকার জন্য বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। তাঁদের দাবি, প্রশাসন এবং কলকাতা কর্পোরেশনকে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে যাতে ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর না ঘটে।
এই বিস্ফোরণ থেকে প্রমাণিত হচ্ছে যে, অবৈধ কার্যক্রম এবং অপর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা কতটা বিপজ্জনক হতে পারে। প্রশাসনের উচিত কঠোর পদক্ষেপ নেওয়া, যাতে ভবিষ্যতে আর কোনো জীবন এভাবে ঝুঁকির মুখে না পড়ে।