শিক্ষকদের বিক্ষোভে উত্তাল পরিবেশ, স্বেচ্ছামৃত্যুর দাবি শুনে শাসক শিবিরেও চাঞ্চল্য

গতকাল বাঁকুড়ার কৃষক বাজারে এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখা গেল। হাজারো চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা (Recruitment Case) ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে তাঁদের দাবি সামনে রেখে সশব্দে…

Either Give Me My Job Back," Job-Loss Teachers Protest in Agitation

গতকাল বাঁকুড়ার কৃষক বাজারে এক বিস্ময়কর দৃশ্য দেখা গেল। হাজারো চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকা (Recruitment Case) ও তাঁদের পরিবারের সদস্যরা একত্রিত হয়ে তাঁদের দাবি সামনে রেখে সশব্দে বিক্ষোভে সামিল হন। তাঁদের একটাই দাবি: ‘‘হয় চাকরি ফিরিয়ে দিন, না হলে স্বেচ্ছামৃত্যুর অনুমতি দিন।’’

কলকাতা হাইকোর্টের রায়ের পরেই প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক ও শিক্ষা (Recruitment Case) কর্মীকে চাকরি থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। এর ফলে ক্ষুব্ধ হয়ে উঠেছেন বাঁকুড়া জেলার চাকরিহারা শিক্ষক-শিক্ষিকারা, যাদের মধ্যে অনেকেই দীর্ঘ সময় ধরে শিক্ষাক্ষেত্রে কাজ করে এসেছেন।

   

বাঁকুড়া জেলা ছাড়াও রাজ্যের নানা প্রান্তে চাকরি হারানো শিক্ষকদের মধ্যে হতাশা, ক্ষোভ এবং হতবাক হওয়ার এক আশ্চর্য মিশ্রণ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এরই মধ্যে সুপ্রিম কোর্ট কলকাতা হাইকোর্টের রায় বহাল রেখেছে, যা প্রায় ২৬ হাজার শিক্ষক-শিক্ষিকার চাকরি (Recruitment Case) বাতিলের সিদ্ধান্তে সমর্থন করেছে। এই রায়ের পর শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র অসন্তোষ সৃষ্টি হয়েছে, কারণ তাঁরা দাবি করছেন যে তাঁদের মধ্যে অনেকেই চাকরি পেয়েছিলেন সঠিক যোগ্যতার ভিত্তিতে।

বাঁকুড়া জেলায় এক হাজারেরও বেশি শিক্ষক-শিক্ষিকার (Recruitment Case) চাকরি বাতিল হয়েছে। তাঁদের মধ্যে বেশিরভাগই অভ্যন্তরীণ দুর্নীতির অভিযোগ তুলে নিজের চাকরি হারিয়েছেন, অথচ অনেকেই তাঁদের যোগ্যতা প্রমাণিত বলে দাবি করছেন। এই পরিস্থিতিতে চাকরি হারানো শিক্ষকদের একাংশের অভিযোগ, তাঁদের যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও রাজ্য সরকারের অব্যবস্থাপনার কারণে তাঁরা চাকরিহারা হয়েছেন এবং এখন সেই অপবাদ তাঁদের মাথায় নিয়ে চলতে হচ্ছে। তারা এমন অভিযোগও করেছেন, ‘‘চাকরি চুরির’’ অপবাদে অনেকেই নিজেদের এলাকার মানুষের কাছে মুখ দেখাতে পারছেন না।

চাকরি হারানো শিক্ষকদের মধ্যে এমন অনেকেই রয়েছেন, যারা দীর্ঘদিন ধরে আর্থিক সঙ্কটে দিন কাটাচ্ছেন। তাঁদের অভিযোগ, রাজ্য সরকারের গাফিলতির কারণে তাঁদের জীবনের সব আশা ভেঙে গেছে। তাঁদের মধ্যে অনেকেই বলেন, ‘‘যারা যোগ্য, তারা কেন চাকরি হারাবে?’’ এমন অবস্থায় তাঁরা চান, সুষ্ঠু যাচাইয়ের মাধ্যমে যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি পুনর্বহাল করা হোক।

Advertisements

এদিকে, চাকরিহারা শিক্ষকদের সংগঠন একজোট হয়ে ১ বৈশাখের মধ্যে আলোচনার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান দাবি করেছে। তারা স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছে, যদি তাঁদের দাবি না মেনে নেওয়া হয়, তাহলে তাঁরা একজোট হয়ে নবান্ন অভিযানের ডাক দেবেন। তাঁদের আহ্বান, ‘‘চাকরি ফিরিয়ে দিন, নতুবা আমাদের জীবন নিয়ে ছিনিমিনি খেলা বন্ধ করুন।’’

রাজ্য সরকারের প্রতি তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে তারা হুঁশিয়ারি দিয়েছে যে, তাদের দাবি না মানলে তাঁরা আরও কঠোর আন্দোলন করবেন। চাকরিহারা শিক্ষকদের জন্য এই পরিস্থিতি অত্যন্ত সংকটময় এবং তাঁরা সরকারের কাছে সুবিচার দাবি করছেন।

তবে এই পরিস্থিতি নিয়ে রাজনৈতিক মহলে এখনও স্পষ্ট কোনো সমাধান চোখে পড়ছে না। রাজ্যের বর্তমান অবস্থার মধ্যে সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্তরা এই সমস্যার দ্রুত সমাধান করবেন, এমন কোনো আশ্বাস দেওয়া হয়নি। কিন্তু চাকরিহারা শিক্ষকদের একটাই দাবি, তারা শুধু সুষ্ঠু বিচার চান, যাতে যোগ্য শিক্ষকদের চাকরি ফিরিয়ে দেওয়া হয় এবং তাঁদের সম্মান রক্ষা করা হয়।