রাজ্যের প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে রাজ্যের কারামন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিনহার (Chandranath Sinha) বিরুদ্ধে। অভিযোগের ভিত্তিতে ইডি (ইনভেস্টিগেশন ডিরেক্টরেট) বিশেষ আদালতে তার আত্মসমর্পণ ঘটায় এবং তিনি জামিন পান। তবে ইডি তাঁকে ফের হেফাজতে রাখতে আবেদন জানায়। আগামী শনিবার (২০ সেপ্টেম্বর) এই মামলার ফের শুনানি হবে।
এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত আরও একটি বিস্ময়কর তথ্য ইডি সূত্রে সামনে এসেছে। জানা গিয়েছে, চন্দ্রনাথ সিনহার বিরুদ্ধে অভিযোগ শুধু শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতির সীমাবদ্ধ নয়। ইডির নথিতে উল্লেখ আছে, তিনি তাঁর কালো টাকা সাদা করতে কেন্দ্রীয় প্রকল্পকেই হাতিয়ার করেছিলেন। অর্থাৎ, সরকারিভাবে পরিচালিত প্রকল্পের মাধ্যমে অর্থ লেনদেনকে প্ররোচিত বা ব্যবহার করে নিজের ব্যক্তিগত সম্পদের অবৈধ রূপান্তর ঘটানোর চেষ্টা করেছিলেন।
ইডি সূত্রের খবর, চন্দ্রনাথ সিনহার এই কর্মকাণ্ড শুধু এক বা দুটি লেনদেনেই সীমাবদ্ধ ছিল না। দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন প্রকল্প এবং সরকারি কার্যক্রমের সুযোগ নিয়ে তিনি টাকা সাদা করার চেষ্টা চালিয়েছেন। এই ঘটনা ইডি তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ সরবরাহ করেছে। ইডির নথিতে বিস্তারিতভাবে লেনদেনের তথ্য, প্রকল্পের নাম এবং সংশ্লিষ্ট আর্থিক হিসাব অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।
রাজ্যের রাজনৈতিক মহল এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। অনেকেই বলছেন, এমন একটি ঘটনা রাজ্যের প্রশাসনিক এবং রাজনৈতিক সংস্কৃতির উপর প্রশ্ন তোলে। বিশেষ করে, কেন্দ্রীয় প্রকল্প ব্যবহার করে ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে অর্থের লেনদেন সম্পাদনের ঘটনা রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক দুর্নীতির দিককে আরও জোরদার করছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এটি শুধুমাত্র একটি মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অভিযোগ নয়, বরং এমন পরিস্থিতির উদ্ভব যেখানে সরকারি প্রকল্পের সুযোগ নেওয়া ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির জন্য ব্যবহার করা হচ্ছে।
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকরা বলছেন, এই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ভবিষ্যতে শিক্ষাক্ষেত্রে নিয়োগ প্রক্রিয়া আরও স্বচ্ছ এবং নিয়ন্ত্রিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এছাড়াও কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে নজরদারি বাড়াতে হতে পারে যাতে কোনো প্রকল্প ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত না হয়।