কলকাতা, ২৬ সেপ্টেম্বর: বঙ্গোপসাগরের উপর তৈরি হওয়া ঘূর্ণাবর্ত ক্রমশ শক্তি সঞ্চয় করে সুস্পষ্ট নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। আবহাওয়া দফতরের তথ্য অনুযায়ী, শনিবার রাত থেকেই এই নিম্নচাপটি অন্ধ্রপ্রদেশ ও ওডিশা উপকূলে গভীর প্রভাব ফেলতে শুরু করেছে এবং রবিবারের মধ্যেই তা স্থলভাগে প্রবেশ করবে বলে পূর্বাভাস।
এই নিম্নচাপের জেরে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় ফের একবার ভারী থেকে অতি ভারী (Heavy Rain) বৃষ্টির সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। পঞ্চমী থেকেই দক্ষিণবঙ্গের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত শুরু হতে পারে। সপ্তমী, অষ্টমী এবং নবমী—এই তিন পূজোর মূল দিনেও আবহাওয়া ভালো থাকবে না বলেই জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
গত সোমবারের অতিবৃষ্টিতে কলকাতা সহ শহরতলি কার্যত ভেসে গিয়েছিল। দক্ষিণ ও মধ্য কলকাতার একাধিক এলাকা এখনও পর্যন্ত জলমগ্ন অবস্থায় রয়েছে। জল নামার প্রক্রিয়া এখনও চললেও নতুন করে বৃষ্টির পূর্বাভাসে উদ্বেগ বেড়েছে নগরবাসীর মধ্যে।
কলকাতা পুরসভার এক কর্তা জানিয়েছেন, “আমরা এখনও সোমবারের জল সরানোর কাজ চালাচ্ছি। যদি আবার এমন ভারী বৃষ্টি হয়, তা হলে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠবে।”
আবহাওয়াবিদরা জানাচ্ছেন, আগামী শনিবার গভীর নিম্নচাপ স্থলভাগে প্রবেশ করার সঙ্গে সঙ্গেই তার প্রভাব পড়বে রাজ্যের উপকূলবর্তী জেলাগুলিতে—বিশেষ করে দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর, ও কলকাতা ও সংলগ্ন জেলাগুলিতে।
একদিকে প্যান্ডেল, আলোকসজ্জা ও অর্ঘ্যের প্রস্তুতিতে তুঙ্গে পুজোর আমেজ, অন্যদিকে নিম্নচাপের এমন পূর্বাভাস প্যান্ডেল উদ্যোক্তাদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে। অধিকাংশ ক্লাবই ইতিমধ্যে অতিরিক্ত ছাউনি, জল বের করার পাম্প, ও মজবুত কাঠামো তৈরির কাজে হাত দিয়েছে।
এক পুজো উদ্যোক্তা জানিয়েছেন, “আমরা জল বের করতে পাম্পের ব্যবস্থা রাখছি। গতবার যেমন নবমীতে বৃষ্টি হয়েছিল, এবারও সেই আশঙ্কা থাকছে। তাই আগে থেকেই তৈরি থাকতে চাই।”
ষষ্ঠী (রবিবার): গভীর নিম্নচাপ স্থলভাগে প্রবেশ করবে। কলকাতা সহ দক্ষিণবঙ্গজুড়ে শুরু হবে প্রবল বৃষ্টি।
সপ্তমী-অষ্টমী (সোমবার-মঙ্গলবার): অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে কলকাতা, হাওড়া, হুগলি, দুই মেদিনীপুর, দুই ২৪ পরগনা এবং ঝাড়গ্রামে।
রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর ইতিমধ্যেই সব জেলার জেলা শাসকদের সতর্ক করেছে। নদী, খাল ও জলাশয়গুলির আশপাশের এলাকাগুলিতে নজরদারি বাড়ানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।