রাগ হলে ক্ষোভ প্রকাশ করতে বললেন মৃণাল সেন

সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়: মৃণাল সেনের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে কিংবদন্তী চিত্র পরিচালককে শ্রদ্ধা জানাতে রুপোলি পর্দায় তাঁকে নিয়ে বায়োপিক করার পাশাপাশি মঞ্চেও তাঁকে নিয়ে ডকু থিয়েটার করার চেষ্টা…

Documentary feature about director Mrinal Sen

সিদ্ধার্থ মুখোপাধ্যায়: মৃণাল সেনের শতবর্ষ উপলক্ষ্যে কিংবদন্তী চিত্র পরিচালককে শ্রদ্ধা জানাতে রুপোলি পর্দায় তাঁকে নিয়ে বায়োপিক করার পাশাপাশি মঞ্চেও তাঁকে নিয়ে ডকু থিয়েটার করার চেষ্টা চালাচ্ছেন তাঁর অনুরাগীরা৷ তবে এই ধরনের কোনও ব্যক্তিত্বকে নিয়ে তৈরী করা ছবি বা নাটক মঞ্চস্ত হলে সেক্ষেত্রে প্রথমেই যেটা বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায় অভিনীত ব্যক্তিটির মধ্যে ওনার চেহারাটা কতটা আনা গিয়েছে ৷

অর্থাৎ সেদিক দিয়ে ভাবলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ হল ওই রকম চেহারার কাউকে খুজে পাওয়া এবং তারপর সেই রকম ড্রেস এবং মেকক্যাপের মাধ্যমে বাকীটা ম্যানেজ করা ৷ এক্ষেত্রে সিনেমার থেকে নাটকে কিছুটা সুবিধে কারণ অত ক্লোজ আপ থাকে না এবং তুলনায় দূর থেকে তাকে দেখতে হয়৷ সেদিক দিয়ে বলতে হয় স্পন্দন প্রযোজিত সমুদ্র গুহ পরিচালিত ‘পদাতিক মৃণাল’ নাটকটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করা প্রবীর ঘোষের মধ্যে বেশ কিছু অ্যাঙ্গেলে সেই লুক ভালভাবে ফুটে উঠেছে ৷

   

mrinal sen padatik

এই ডকু থিয়েটারে মৃণাল সেনকে উপস্থাপন করতে তাঁর ৮ টি সিনেমাকে ব্যবহার করা হয়েছে৷ সেগুলি হল –
কলকাতা ৭১, ইন্টারভিউ,পদাতিক, অকা উড়ি কথা, একদিন প্রতিদিন, মৃগয়া, অন্তরীণ এবং কোরাস। নাটকটি তৈরী হয়েছে এপিক স্টাইলে আর ফিল্ম এর ক্লিপ গুলো ব্যবহৃত হয়েজে মন্তাজ স্টাইলে। এই নাটকের ফোকাস অবশ্যই মৃণাল সেনের চলচ্চিত্র এবং তাঁর বামপন্থী ভাবনাটা৷ বামপন্থীদের ভাঙন বিবর্তন তো তাঁর চলচ্চিত্রে নানা ভাবে প্রতিফলিত হয়েছে ৷ পাশাপাশি আবার তাঁর চিন্তাধারা আজকের ভারতে কতটা প্রাসঙ্গিক সেটাই যেন তুলে ধরতে চেয়েছেন এই নাটকের নির্দেশক৷

এই নাটকের বিষয়বস্তু হিসেবে মৃণাল সেনে পারিবারিক অবস্থা তার পরিচিতজনের সঙ্গে কেমন করে কি বিষয়ে আলোচনা করতেন তা উঠে এসেছে ৷ ফলে এই নাটকের চরিত্র রূপে গীতা সেন, সত্য বন্দ্যোপাধ্যায়, অনুপকুমার ডিম্পল কাপাডিয়াকে দেখতে পাওয়া গিয়েছে৷ তেমনই আবার দেখা গিয়েছে ফিল্ম স্টাডিজের ক্লাসে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে নানা আলোচনায় মৃণাল সেনকে৷ ছাত্রছাত্রীদের নানা প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছে তাঁকে ৷ উত্তর দিয়েছেন আবার পাল্টা প্রশ্নও করেছেন তাদের ৷ জানতে চেয়েছেন বর্তমান পরিস্থিতিতে এযুগের ছাত্রছাত্রীদের কেন রাগ হলেও তারা চুপচাপ বসে আছে? কেন তারা ক্ষোভ প্রকাশ করছে না?

এই নাটকের মাধ্যমে মৃণাল সেন ফিরে এসে এই অস্থিরতা আর বুলডোজার রাজনীতির আবহাওয়ায় এযুগের যুবক-যুবতীদের এক প্রকার সত্তরের দশকের সেই দামাল ছেলেমেয়েদের মতো গর্জে উঠতে বলেছেন৷