সামনেই দিলীপ-রিঙ্কুর রিসেপশন পার্টি, আমন্ত্রিত মমতা-অভিষেক

দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও রিঙ্কু ঘোষের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা ঘিরে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি।  মে মাসেই শহরের এক পাঁচতারা হোটেল, J W Marriott-এ আয়োজিত হতে চলেছে…

Dilip Ghosh,Rinku Ghosh, wedding

দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh) ও রিঙ্কু ঘোষের বিবাহোত্তর সংবর্ধনা ঘিরে উত্তাল বঙ্গ রাজনীতি।  মে মাসেই শহরের এক পাঁচতারা হোটেল, J W Marriott-এ আয়োজিত হতে চলেছে এই রিসেপশন পার্টি। আর এই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় সহ রাজ্যের শাসকদলের একাধিক মন্ত্রী ও হেভিওয়েট নেতানেত্রীকে।

Advertisements

এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিজেপির অন্দরে শুরু হয়েছে তীব্র চাপানউতোর। একদিকে যেমন দিলীপ ঘোষকে ঘিরে বাড়ছে বিতর্ক, অন্যদিকে তাঁর সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বজায় রাখছেন বিজেপির বেশ কয়েকজন বর্তমান ও প্রাক্তন সাংসদ এবং বিধায়ক। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, ইতিমধ্যেই দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বিজেপির ৩ জন বর্তমান সাংসদ, ২ জন প্রাক্তন সাংসদ এবং ১১ জন বিক্ষুব্ধ বিধায়ক।

   

এই রিসেপশনের আগে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা ঘটে গেছে গত বুধবার। সেই দিন দিলীপ ঘোষের জগন্নাথ মন্দির পরিদর্শনের বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ফোন করে সব তথ্য জানিয়ে দেন বলে সূত্রের খবর। একইসঙ্গে দিলীপবিরোধী অবস্থান স্পষ্ট করে বিজেপির দুই রাজ্য নেতা জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় ও অমিতাভ চক্রবর্তী দিলীপ ঘোষের বিরুদ্ধে কেন্দ্রীয় সংগঠক সুনীল বানসাল-এর কাছে অভিযোগ জানান। অভিযোগে তাঁরা দিলীপ ঘোষকে “দলের গাদ্দার” বলেও উল্লেখ করেছেন। যদিও সেই অভিযোগকে এখনো গুরুত্ব দেয়নি কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব।

এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় স্তর থেকেও দিলীপ ঘোষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। বিজেপির একাধিক শীর্ষ নেতৃত্ব এবং আরএসএস-এর তরফ থেকেও তাঁর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে দিলীপ ঘোষ স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন, জগন্নাথ মন্দির যাত্রা বা সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অবস্থান সংক্রান্ত কোনও আলোচনা তিনি কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের সঙ্গে করতে রাজি নন।

এদিকে রাজ্য নেতৃত্বকে দিলীপ ঘোষের মন্তব্যের পাল্টা হিসেবে কোনও আক্রমণাত্মক প্রতিক্রিয়া দিতে কড়াভাবে নিষেধ করা হয়েছে বিজেপির কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে। আপাতত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রেখেই পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশ এসেছে। দলের ভেতরে দিলীপ ঘোষের প্রতি যে একটি সমর্থনশীল গোষ্ঠী গড়ে উঠেছে, তা স্পষ্ট। এই গোষ্ঠীর দাবি, দিলীপ ঘোষ দলের প্রতি অনুগত, তবে রাজ্যের বর্তমান নেতৃত্বের ভুল কৌশলের কারণে বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে।

রাজনৈতিক মহলের মতে, দিলীপ ঘোষের রিসেপশন পার্টিতে তৃণমূল নেতৃত্বের উপস্থিতি বিজেপির অন্দরমহলে একটি বড় বার্তা দেবে। এই রিসেপশন ঘিরে তৃণমূল এবং বিজেপির মধ্যকার সম্পর্ক নতুন মাত্রা পেতে পারে বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

রাজ্য রাজনীতির এই টানাপোড়েনের আবহেই এখন নজর রয়েছে দিলীপ ঘোষের সেই বহুল প্রতীক্ষিত অনুষ্ঠানের দিকে। মমতা-অভিষেকরা আদৌ উপস্থিত থাকবেন কিনা, সেটাও দেখার বিষয়। তবে দিলীপ ঘোষের রাজনৈতিক পদক্ষেপ যে বিজেপির রাজ্য সংগঠনে এক নতুন সমীকরণ তৈরি করতে চলেছে, তা বলাই যায়।

এই রিসেপশন পার্টি শুধু এক ব্যক্তিগত অনুষ্ঠান নয়, বরং সেটি হতে চলেছে এক রাজনৈতিক ‘স্টেটমেন্ট’। বঙ্গ রাজনীতিতে যার প্রতিফলন সুদূরপ্রসারী হতে পারে।