পুরনো নেতৃত্বকে ফের দলের কেন্দ্রে আনতে দিলীপ ঘোষকে বড় ভূমিকা দিল বিজেপি

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নিচুতলায় সংগঠনের অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে। একাধিক নির্বাচনে (Dilip Ghosh) হতাশাজনক ফলাফল এবং দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় ২০২৬-এর…

Dilip Ghosh Leads Efforts to Resolve BJP’s Internal Conflicts and Strengthen Party Unity

পশ্চিমবঙ্গে বিজেপির নিচুতলায় সংগঠনের অবস্থা ক্রমেই শোচনীয় হয়ে উঠছে। একাধিক নির্বাচনে (Dilip Ghosh) হতাশাজনক ফলাফল এবং দলের সদস্য সংগ্রহ অভিযানে আশানুরূপ সাড়া না মেলায় ২০২৬-এর লোকসভা ভোটের আগে চিন্তায় পড়েছে বঙ্গ বিজেপি(Dilip Ghosh)। এই পরিস্থিতিতে দলের পুরনো এবং অভিজ্ঞ নেতা-কর্মীদের (Dilip Ghosh) সক্রিয় করতে কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব ফের আস্থা রেখেছে প্রাক্তন রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh)উপর।

দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নেতৃত্বে ২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি পশ্চিমবঙ্গে ১৮টি আসন দখল করেছিল, যা ছিল দলের এক ঐতিহাসিক সাফল্য। কিন্তু ২০২১ সালের বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকেই দলের অভ্যন্তরীণ কোন্দল বেড়ে যায়। দিলীপ ঘোষকে কোণঠাসা করা হয় এবং নতুন নেতৃত্বের হাত ধরে সংগঠন চালিত হতে থাকে। সেই সময় থেকে রাজ্য বিজেপিতে(Dilip Ghosh) আদি ও নব্য গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব প্রকট হয়ে ওঠে। ফলে বহু অভিজ্ঞ নেতা-কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েন এবং সাংগঠনিক শক্তি দুর্বল হতে থাকে।

   

কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব মনে করছে, ২০২৬ লোকসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যের সংগঠনকে চাঙ্গা করতে হলে দিলীপ ঘোষের অভিজ্ঞতা এবং নেতৃত্বের প্রয়োজন। তাই পুরনো নেতা-কর্মীদের সক্রিয় করতে এবং দলের ঐক্য ফেরাতে দিলীপ ঘোষকেই সামনে আনা হচ্ছে।

বর্তমানে দিলীপ ঘোষকে দলের বিভিন্ন কর্মসূচিতে নিয়মিত দেখা যাচ্ছে। তাঁর সঙ্গে আছেন সায়ন্তন বসু ও রাজু বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতো অভিজ্ঞ নেতারা, যাঁরা একসময় দিলীপ ঘোষের টিমের প্রধান সদস্য ছিলেন। সুকান্ত মজুমদার রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর থেকেই সায়ন্তন ও রাজুকে কার্যত দলের গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সরিয়ে রাখা হয়েছিল। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে তাদের ভূমিকা পুনরায় গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করছেন কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষকরা। দলের পুরনো কর্মীরা মনে করেন, আদি ও নব্য গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব দূর না হলে ২০২৬-এ ভালো ফল করা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় নেতৃত্বও এই বিষয়ে সচেতন। সেই কারণে সুকান্ত মজুমদারের সঙ্গে দিলীপ ঘোষ এবং অন্যান্য পুরনো নেতাদের একত্রিত করে ঐক্যের বার্তা দেওয়া হচ্ছে।

রাজ্যজুড়ে সদস্য সংগ্রহ অভিযানে দিলীপ ঘোষকে বিশেষভাবে সক্রিয় থাকতে বলা হয়েছে। তাঁর জনপ্রিয় কর্মসূচি “চায়ে পে চর্চা” আবার চালু করা হয়েছে, যেখানে তিনি সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপন করছেন এবং সদস্য সংগ্রহের কাজ করছেন।

দলের বিভিন্ন প্রাক্তন জেলা সভাপতি, প্রাক্তন রাজ্য সহসভাপতি রাজকমল পাঠকের মতো নেতাদের আবার সক্রিয় করা হচ্ছে। তাদের দায়িত্ব দেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন জেলা সফর এবং সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে পুরনো নেতাদের নিয়ে সভা-সমিতি করা হচ্ছে এবং দলের কর্মীদের মনোবল চাঙ্গা করার চেষ্টা চলছে।

বিজেপির সদস্য সংখ্যা বাড়াতে নতুন করে সদস্য সংগ্রহ অভিযান শুরু হয়েছে। দিলীপ ঘোষকে সরাসরি মাঠে নেমে এই অভিযানে নেতৃত্ব দিতে বলা হয়েছে। তিনি বিভিন্ন জেলায় গিয়ে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ করছেন এবং বিজেপির সদস্যপদ গ্রহণের জন্য আহ্বান জানাচ্ছেন।

রাজ্য বিজেপি এখন ঐক্যের পথে হাঁটছে। কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব বুঝতে পারছে, আদি ও নব্য গোষ্ঠীর লড়াই বন্ধ না করলে সংগঠন দুর্বল থাকবে। তাই দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে পুরনো কর্মীদের সক্রিয় করে এবং নতুন কর্মীদের সংযুক্ত করে সংগঠন শক্তিশালী করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।

এই উদ্যোগ বঙ্গ বিজেপির ভবিষ্যৎ রাজনীতিতে কতটা প্রভাব ফেলবে তা সময়ই বলবে। তবে দিলীপ ঘোষের নেতৃত্বে পুরনো কর্মীদের পুনরায় সক্রিয় করা এবং সংগঠনের ভিত্তি মজবুত করার প্রয়াস নিঃসন্দেহে দলকে নতুন করে শক্তি জোগাবে।