ডায়ালিসিস সেন্টার উদ্বোধন নিয়ে বাকযুদ্ধ কুণাল-দেবের

শনিবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ঘাটাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের ডায়ালিসিস উনিটকে পুনরায় উদ্বোধন করা নিয়ে দেবকে কটাক্ষ করেছিলেন, কুণাল ঘোষ। কুণালের অভিযোগ ছিল, ২ মার্চ ডায়ালিসিস…

শনিবার সকালেই মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ঘাটাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের ডায়ালিসিস উনিটকে পুনরায় উদ্বোধন করা নিয়ে দেবকে কটাক্ষ করেছিলেন, কুণাল ঘোষ। কুণালের অভিযোগ ছিল, ২ মার্চ ডায়ালিসিস ইউনিট স্বয়ং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভার্চুয়াললি উদ্বোধন করলেও, সেটিকে ৪ সেপ্টেম্বর দেব পুনরায় উদ্বোধন করেন এবং উদ্বোধকের নামের জায়গায় মুখ্যমন্ত্রী নাম বদলে নিজের নাম বসিয়ে দেন দেব। এবার সেই অভিযোগের উত্তর দিলেন সংসদ-অভিনেতা।

অভিনেতা তাঁর পোস্টে লিখেছেন যে ঘাটাল সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালে ডায়ালিসিস এবং সিটি স্ক্যান মেশিন না থাকায় দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছিল সাধারণ মানুষকে। তাঁদের অন্য হাসপাতালে যেতে হচ্ছিল চিকিৎসা পরিষেবা পেতে। এই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীকে মেশিনের বন্দোবস্ত করার জন্য অনুরোধ জানান সংসদ। মুখ্যমন্ত্রী সেটিরই ভার্চুয়ালি ঘোষণা করেছিলেন বলে জানান দেব।

   

এর পর সংসদ তাঁর পোস্টে যোগ করেছেন যে এক সপ্তাহ আগে মেশিনগুলি এলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অনুরোধেই সেগুলি উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। এই উদ্বোধনের উদ্দেশ্য ছিল, যাতে সাধারণ মানুষ জানতে পারেন যে তাঁদের এলাকার হাসপাতালেই এবার থেকে সিটিস ক্যান এবং ডায়ালিসিস পরিষেবা পাবেন তাঁরা।

মুখ্যমন্ত্রীর উদ্বোধন করা ডায়ালিসিস সেন্টারের ফিতে কাটলেন ‘সুপারস্টার’ দেব, তোপ কুণালের

কুণাল ঘোষকে ধন্যবাদ জানিয়ে দেব লিখেছেন, “ধন্যবাদ তোমাকে, তোমার মাধ্যমে এই পরিষেবার কথা আরও অনেকের কাছে পৌঁছে গেল।” তাঁর পোস্টে দেব জানিয়েছেন যে এই পরিষেবা কোনও ‘কোনও মুখ্যমন্ত্রী, সাংসদ, সুপারস্টার বা মুখপাত্র নয়’, সাধারণ মানুষের উপরারের জন্যই রাখা হয়েছে।

সর্বশেষে তাঁর পোস্টে তিনি সাধারণ মানুষকে উদ্দেশ্যে করে দুটি কথা বলেছেন। প্রথমে তিনি সাধারণ মানুষকে বলেছেন যে যে পরিস্থিতিটির মধ্যে দিয়ে এখন যেতে হচ্ছে সেই কঠিন সময় কেউ তথ্য যাচাই না করে যেন সোশাল মিডিয়াতে কোনও মন্তব্য না করেন বা কিছু না ছড়ান । এরপর তিনি ঘাঁটালবাসীকে জানিয়েছেন যে এই মাসের শেষ থেকেই তাঁরা ঘাটালের সুপারসেশালিটি হাসপাতালে পেয়ে যাবেন সিটি স্ক্যান ও ডায়ালিসিস পরিষেবা। এর ফলে তাঁদের অন্য কোনও সরকারি বা বেসরকারি হাসপাতলের দ্বারস্থ হতে হবে না। সকলের মঙ্গলকামনা করে পোস্টটি শেষ করেন দেব। 

প্রসঙ্গত, এই প্রথমবার দেবকে নিশানা করেননি। এর আগে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তীকে ‘গদ্দার’ বলার বিষয়টিকে সমর্থন করেননি দেব। এর প্রতিবাদ ও একটি নামি সংবাদমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে করেছিলেন দেব। দেবের এই অবস্থানের সমালোচনা করেন, কুণাল ঘোষ। তিনি লিখেছিলেন, “দলের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে দলবদল সমর্থনের। বিশ্বাসঘাতকদের আচরণ সমর্থনের। বিশ্বাসঘাতকরা আমাদের নেতা-নেত্রী-দলের বিরুদ্ধে কুৎসা করলেও তাদের সঙ্গে ব্যক্তিগত আদিখ্যেতা করে নিজের ইমেজকে সর্বপন্থী উদার রাখার চেষ্টার নাম সৌজন্য। আর বিশ্বাসঘাতক দলবদলুদের ‘গদ্দার’ বলা হলে সেটা আপত্তির!”

প্রসঙ্গত, এর আগে আরজি কর কাণ্ডে বিচার চেয়ে পথে নেমেছিলেন তৃণমূল সাংসদ দেব। এই বিষয়ে একাধিকবার বক্তব্য ও পেশ করেছিলেন তিনি। সম্প্রতি তিনি বলেছিলেন, “আরজি করে যা হয়েছে খুবই দুঃখজনক, নিন্দনীয়। তার প্রতিবাদ করাই উচিত। সাধারণ মানুষ সেই আবেগ থেকেই পথে নেমেছেন। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে, আর কারও সঙ্গে যেন এমন না হয়। ধর্ষকেরা এই অপরাধ করার আগে যেন ভয় পায়। এটা তো শুধু বাংলা বা অন্য কোনও রাজ্যের বিষয় নয়, এটা সারা দেশের বিষয়। ‘কন্যাশ্রী’, ‘রূপশ্রী’ বা ‘বেটি বচাও বেটি পড়াও’-এর কোনও মানেই নেই, যদি দেশের মেয়েদের আমরা রক্ষা করতে না পারি।’’

এছাড়াও দেশের আইনি ব্যবস্থায় বদল আনার ডাক দিয়ে তিনি লেখেন, “আমিও চাই প্রাণ হারানো ওই চিকিৎসক শীঘ্রই বিচার পান। আমিও চাই, দেশের আইনি ব্যবস্থায় বদল আসুক। তবে এই ন্যায় বা বদল যেন আরেকটি জীবনের মূল্যে পেতে না হয়। দয়া করে এই বিষয়ে চিন্তা ভাবনা করুন। হ্যাঁ, আবারও বলছি, অবিলম্বে ধর্ষকদের জন্য ক্যাপিটাল পানিশমেন্ট চাই এবং সমস্ত রোগীদের জন্য অবিলম্বে মেডিক্যাল পরিষেবা চালু করা হোক।” এই ধরনের প্রতিবাদ ও মন্তব্যের জেরেই কী ফের কুণালের রোষে পড়লেন দেব? তেমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।