খাল থেকে ‘মাগুর’ আনতেই খাটের তলায় সুড়ঙ্গ! আজব দাবি কুলতলির ‘টানেল-ম্যানের’

কুলতলির (Kultali Incident) টানেল রহস্যে এবার নতুন মোড়। এতদিন ধরে খাল কেটে কুমির আনার কথা শুনেছি আমরা (Kultali Incident)। বাংলার এই প্রবাদ বিভিন্ন সময়েই ব্যবহার…

Photo of Saddam Sar, a person involved in the Kultali Incident, with a serious expression in police custody

কুলতলির (Kultali Incident) টানেল রহস্যে এবার নতুন মোড়। এতদিন ধরে খাল কেটে কুমির আনার কথা শুনেছি আমরা (Kultali Incident)। বাংলার এই প্রবাদ বিভিন্ন সময়েই ব্যবহার করা হয় নিত্যদিনের কথাবার্তায়। কিন্তু এবার খালের থেকে টানেল কেটে মাগুরের চাষ? এমনই আজব দাবি অভিযুক্ত (Kultali Incident) সাদ্দাম সর্দারের গলায়।

কত সোমবারে কুলতলির জালাবেড়িয়া ২ পঞ্চায়েতের কয়টার হাত গ্রামের এলাকায় উত্তেজনা ছিল তুঙ্গে। পুলিশের অভিযান সংবাদমাধ্যমের শিরোনামে সাদ্দামের সৌজন্যে শিরোনামে কুলতলি। নকল সোনার মূর্তি বিক্রি নিয়ে লোক ঠকানো ব্যবসার অভিযোগে তদন্তকারীরা হাজির হন সাদ্দামের বাড়িতে। আর সেখানেই সুড়ঙ্গ রহস্যের উৎপত্তি। পুলিশের উপরে হামলা, এমনকী গুলি চালানোরও অভিযোগ ওঠে সাদ্দামের ভাই সইরুলের বিরুদ্ধে। অনেকটা সেই সন্দেশখালীর শেখ শাহজাহানের বাড়িতে ইডির উপর আক্রমণের প্রতিচ্ছবিই যেন দেখা গিয়েছিল কুলতলিতে। নিজের ঘরের খাটের নিচে লুকোনো সুড়ঙ্গ দিয়ে পুলিশের চোখে ধুলো দিয়ে পালায় সাদ্দাম। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি । পুলিশের কাছে ধরা পড়ার পর জেরায় এবার তার আজব স্বীকারোক্তি।

   

কপিবাগানে ঝামেলা! তড়িঘড়ি আদালতে বিজেপির দিলীপ, জামিন পেলেন?

সাদ্দামের দাবি যে, সে যেহেতু ভেড়িতে কাজ করতো তাই মাছ চাষ নিয়ে তার বিস্তর অভিজ্ঞতা আছে। আর এই অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে হাইব্রিড মাগুরের চাষ করতে চাইছিল সে। বাজারে মাগুরের বেশ ভালো চাহিদা আছে। হাইব্রিড মাগুরে চাষের খরচা কম কিন্তু মুনাফা তুলনায় অনেকটাই বেশি । সেই কথাকে মাথায় রেখেই নাকি পাশের খাল থেকে জল এনে মাগুর চাষের জন্য সুড়ঙ্গ বানিয়েছিল বলে দাবী সাদ্দামের।

কিন্তু তাহলে কেন সেই গোপন সুড়ঙ্গের জলে মাগুরের কোনো দেখা নেই? তার উত্তরও দিয়েছে সাদ্দাম। তার বক্তব্য গ্রামবাসীদের আপত্তিতেই নাকি তার সাধের মাগুর চাষ আর হয়নি। সেই কারণেই অব্যবহৃত অবস্থায় পড়েছিল ওই জলমগ্ন টানেল।

যদিও পুলিশ সূত্রে দাবি যে সাদ্দামের বাবা মোকসেদেরও চোরাচালান এবং সোনার নকল মূর্তির লোক ঠকানো ব্যবসা আছে। বাবার ব্যবসাতেই হাত পাকিয়েছে ছেলে সাদ্দাম। আর সাদ্দামের যে ভাই পুলিশের বিরুদ্ধে গুলি চালিয়েছে বলে অভিযোগ, সেই সইরুল নাকি সাদ্দামের বাবা মোকসেদের তৃতীয় পক্ষের সন্তান। গ্রামবাসীদের বক্তব্য যে পেশায় দর্জি সইরুল। কিন্তু দর্জির ব্যবসার আড়ালে, ভাইয়ের সাথে এই সমস্ত চোরাচালানের ব্যবসাতেও সেও যুক্ত আছে, এমন সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না তদন্তকারী অফিসারেরা।

তবে পুলিশের দাবি শুধু চোরাচালান নয়, এলাকায় সাট্টার ব্যবসাতেও নাম জড়িয়েছে সাদ্দামের। সোমবার দিন নিজের ঘরে খাটের নিচের সেই সুড়ঙ্গ দিয়েই ডিঙ্গি নৌকা নিয়ে পালায় সাদ্দাম। আশ্রয় নেয় কুলতলীরই একটি নির্জন এলাকায় ভেড়ীর আলাঘরে। যেখান থেকেই পরবর্তীকালে পুলিশের হাতে গ্রেফতার হয় সে। এবং তাকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগে ভেড়ির মালিককেও গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীকালে ভেড়ির মালিকের রাজনৈতিক পরিচয় নিয়েও শোরগোল পড়ে যায়। ভেড়ির আলা ঘরের মালিক সিপিএম নেতা মান্নান খানকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

ভোটে জিতেই বেপাত্তা! ৪৩ দিন পর বহরমপুরে পা রাখলেন তৃণমূল সাংসদ ইউসুফ

খাল কেটে কুমির শুনতে অভ্যস্ত আমজনতার এই নতুন মাগুর তত্ত্বে রীতিমতন চক্ষু চরকগাছ। ইরাকের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট সাদ্দাম হোসেন দীর্ঘদিন বিক্ষোভকারীদের থেকে বাঁচতে দীর্ঘদিন গোপন সুড়ঙ্গে লুকিয়ে ছিলেন। কিন্তু তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি। পরবর্তীকালে তাঁর পরিণতি আমরা সবাই জানি। কিন্তু বঙ্গের কুলতলির সাদ্দামের সুরঙ্গ রহস্যের কি পরিণতি হয়, সেদিকেই তাকিয়ে কুলতলির মানুষজন।